ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু অবৈধ পন্থায় কয়লা আমদানির অনুমতি দিয়ে হাজার হাজার টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে এই মন্তব্য করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জননেতা হাবিবুর রহমান হাবিব।
সোমবার ৩০ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের উদ্যোগে অনুমতি হীন তাপবিদ্যুৎ এর কয়লা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেছে ইন্ট্রাকো গ্রুপের এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান পার্কার বাংলাদেশ লিমিটেড এর প্রতিবাদে মানববন্ধন তিনি এই কথা বলেন
হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন,ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু অবৈধ পন্থায় কয়লা আমদানির অনুমতি দিয়ে হাজার হাজার টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে, ফলে পার্কার বাংলাদেশ লিমিটেড মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমদানি পারমিট দেখিয়ে এক মাসে ইন্দোনেশিয়া থেকে ৫৩,৯১৬ মেট্রিক টন কয়লা আমদানি করা হয়েছে। ৪৯ লক্ষ ৬০ হাজার ২৭২ ডলার (প্রায় ৫৩ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা) মূল্যের এই কয়লা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছে নয়, বরং স্থানীয় কোম্পানিগুলোর কাছে বিক্রি করা হয়েছে, আমদানি নীতির প্রতি আঙুল দেখানো হয়। শুধু তাই নয়, সরবরাহকারীদের ঋণের মাধ্যমে আমদানি করা এই কয়লার দাম হুন্ডি বা অন্য কোনওভাবে পরিশোধ করা হয়। বর্তমান সরকারের আমলেও একই কায়দায় বিক্রয় করছে, এটা কিভাবে সম্ভব, আমি সরকারকে অনুরোধ করছি তদন্তপূর্বক দোষীদের শাস্তি আনা জন্য।
তিনি বলেন,অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা বারবার আহ্বান করেছি, আপনারা দ্রুত সময়ের ভেতরে একটি নির্বাচন দেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় গত ১৭ বছর স্বৈরাচার সরকার নির্বাচনের কথা শুনলে যেমনটি করেছে, বর্তমান সরকারও তেমনটি করছে, আমাদের নেতা তারেক জিয়ার ডঃ ইউনুসের সাথে লন্ডনে কথা বলেছেন নির্বাচন প্রসঙ্গে, সেখানে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে, আমরা চাই সংস্কার শেষ করে অতি দ্রুত ফেব্রুয়ারির আগে নির্বাচন দেওয়া হোক।
মানববন্ধনে সভাপতিত্বে বক্তব্যে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর সহযোগিতায় ইন্ট্রাকো গ্রুপের এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান পার্কার বাংলাদেশ লিমিটেড এর মাধ্যমে, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আনা কয়লা কিভাবে খোলা বাজারে বিক্রি করছে, তাহা বর্তমান অন্তর্ভুক্তি সরকার তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন,শুধু রাষ্ট্র সংস্কার নয়, যেসব রাজনৈতিক দলের পদপদবি ব্যবহার করে নেতাকর্মীরা আঙুল ফুলে বটগাছ হয়েছেন তাদের রাজনীতির সংস্কার করতে হবে, এদেশের রাজনীতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও কল্যাণের জন্য। দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট করা কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের কাজ হতে পারে না।
বাংলাদেশ ছাত্র জনতা পার্টির সভাপতি মোঃ বেলাল হোসেন বলেন,হাতেনাতে ধরা পড়া ও চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের, কানের মধ্যে আধুনিক ডিভাইসহ রিং পরিয়ে সফটওয়্যার এর মধ্যে মনিটরিং করতে হব, পরিবার, সামাজিকভাবে দুর্নীতিবাজরা বয়কট হবে, যেকোনো মূল্যে টাকা পাচার বন্ধ করতে হবে, দুর্নীতি দমন কমিশন কে মনিটরিং করার জন্য, সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদকে সংশোধনী করে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের দ্বারা কমিটি করে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে হবে।
ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ন্যাপ এর মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূইয়া বলেন, আমরা জীবন ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করেছি, কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকার পলায়ন-পরবর্তী সময়ে এখনো দেশের মানুষের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতি বন্ধ হয়নি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি এখনো অব্যাহত আছে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আইনজীবী এডভোকেট নুরুন্নবী উজ্জ্বল বলেন,পার্কার বাংলাদেশকে কয়লা আমদানি এবং আমদানি নীতি লঙ্ঘন করে অর্থ পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল পত্রিকায় রিপোর্ট এসেছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিষয়টি তদন্তের জন্য ভ্যাট ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু রিপোর্টের কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি, প্রশ্ন সেই রিপোর্ট কি গায়ের হয়েগেছে।
বাংলাদেশ সিভিল রাইটস সোসাইটির চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন বলেন,বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হবে বলে কয়লা আমদানি করে, তাও মিথ্যা তথ্য দিয়ে,বর্তমান সরকারের আমলেও সেই কয়লা কিভাবে খোলা বাজারে বিক্রি করছে, এই সরকারের আমলে এটা কিভাবে সম্ভব ,আমরা আশা করছি এই সরকার এর যথাযথ ব্যবস্থা নিবে।
উক্ত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার, সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা,প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জননেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আইনজীবী এডভোকেট নুরুন্নবী উজ্জ্বল, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ন্যাপ এর মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের’ সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের,বাংলাদেশ সিভিল রাইটস সোসাইটির চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্র জনতা পার্টির পেনেল সভাপতি মোঃ বেলাল হোসেন,সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
ডিএস./