সাম্প্রতিক সময়ে র্যাব-২ এর অভিযানে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা হতে জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী ভূইয়া সোহেল বুনিয়া সোহেল, মাদক ব্যবসায়ী চুয়া সেলিম গ্রুপের প্রধান মোঃ সেলিম আশরাফী ওরফে চুয়া সেলিম চোরা সেলিম এবং রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী ‘কব্জিকাটা গ্রুপের’প্রধান মোঃ আনোয়ার শুটার আনোয়ার কব্জিকাটা আনোয়ারকে তাদের সহযোগীসহ গ্রেফতার করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায়, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রিক সকল সন্ত্রাসী গ্রুপের মূল উৎপাটন করার লক্ষে র্যাব-২ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
গতকাল ১৩ জুলাই ২০২৫ইং তারিখ রাজধানীর মোহম্মদপুরের আলোচিত ‘কব্জিকাটা গ্রুপের সহযোগী সন্ত্রাসী ‘আয়েশা গ্রুপের প্রধান চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী ও মাদক ব্যবসায়ী মোঃ আসাদ ওরফে আরশাদ প্রকাশ ওরফে আয়েশা (৩৫) ও তার সহযোগী ইউসুফ (৪০) কে ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন ভাকুর্ত্যা এলাকা থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-২। এ সময় তাদের কাছ থেকে ০৬ টি সামুরাই উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ‘কব্জিকাটা গ্রুপের’ সহযোগী সন্ত্রাসী ‘আয়েশা গ্রুপের প্রধান চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী ও মাদক ব্যবসায়ী মোঃ আসাদ ওরফে আরশাদ প্রকাশ ওরফে আয়েশা’কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় সে ও তার সহযোগীরা মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ভূমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। ইতোমধ্যে রাজধানীর আদাবর এলাকায় মোঃ আসাদ ওরফে আরশাদ প্রকাশ ওরফে আয়েশা ও তার সহযোগীদেরকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করতে দেখা যায়।
এ সংক্রান্ত একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরবর্তীতে, গত ২৯ জুন ২০২৫ ইং তারিখে আদাবর থানা এলাকায় মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মাদক ব্যবসায়ী রাজু (২৫)’কে আয়েশা ও তার সহযোগীরাসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে।
এরই প্রেক্ষিতে, গত ৩০ জুন ২০২৫ তারিখ আদাবর থানায় আয়েশা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে র্যাব-২ তাকে গ্রেপ্তারের উদ্দ্যোগ গ্রহণ করে এবং গতকাল ১৩ জুলাই ২০২৫ ইং তারিখ র্যাব-২ কর্তৃক আয়েশা ও তার সহযোগী ইউসুফকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়াও আয়েশার বিরুদ্ধে রাজধানীর আদাবর থানায় হত্যাচেষ্টা, ডাকাতি, ছিনতাই, চুরি, ও ডাকাতির প্রস্তুতিসহ ০৭টি মামলা রয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোঃ আসাদ ওরফে আরশাদ প্রকাশ ওরফে আয়েশা আরো জানায়, জন্ম থেকে আদাবর এলাকায় বসবাস করে, ছোট বেলা থেকে রাজমিস্ত্রি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত। পরবর্তীতে মোহাম্মদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ার ওরফে কব্জিকাটা আনোয়ারের হাত ধরে ৫-৬ বছর থেকে এ কাজে আসে এবং আনোয়ারের অন্যতম সহযোগী হিসেবে পরিচিত হয়। সে ও তার সহযোগীরা কব্জিকাটা আনোয়ারের নির্দেশে মোহাম্মদপুর, আদাবর ও পাশর্বর্তী এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ভূমি দখল, চুরি-ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যাসহ বিভিন্ন সস্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত।
সাধারণত দিনের বেলায় তারা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় কম জনসমাগমপূর্ণ স্থানে পথচারীদের জিম্মি করে নগদ অর্থ, মোবাইল, ল্যাপটপ, ভ্যানিটি ব্যাগ ইত্যাদি মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে এবং রাত গভীর হলেই বাসা বাড়ি, ফ্লাটে ও গাড়ি থামিয়ে অস্ত্রের মুখে সর্বস্ব লুটে নেয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে যা যাচাই বাছাই করে ভবিষ্যতে র্যাব-২ এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
ডিএস./