চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেড (সিডিডিএল) একের পর এক নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে। দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রমে দক্ষতা ও গতিশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বন্দরের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য রেকর্ড গড়ে তুলেছে।
গত ৭ জুলাই থেকে এনসিটির ২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর বার্থের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই টার্মিনালের সার্বিক কার্যক্রমে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসে। সিডিডিএল-এর আধুনিক ব্যবস্থাপনা কৌশল, অভিজ্ঞ জনবল ও সুশৃঙ্খল সমন্বয়ের ফলে জাহাজ আগমন থেকে শুরু করে কাস্টমস অ্যাপ্রাইজাল, কন্টেইনার ডেলিভারি ও গেট অপারেশন—প্রতিটি ধাপে গতি ও দক্ষতা যোগ হয়েছে। এর ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমও আগের চেয়ে অনেক দ্রুত সম্পন্ন হচ্ছে।
এই ধারাবাহিক উন্নতির প্রমাণ মিলেছে আগস্ট মাসে। ২৮ আগস্ট ২০২৫ তারিখে এনসিটিতে একদিনে ৫,০১৯ টিইইউএস (কন্টেইনারের মাপের একক) হ্যান্ডলিং করে সিডিডিএল একটি নতুন রেকর্ড স্থাপন করে। কিন্তু এখানেই থেমে থাকেনি প্রতিষ্ঠানটি। মাত্র তিন দিন পর, ৩১ আগস্ট, আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে একদিনে ৫,০৬১ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের মাধ্যমে আবারও বন্দরের ইতিহাসে মাইলফলক গড়ে।
পুরো আগস্ট মাসে এনসিটিতে মোট ৭৫,৫৮৭টি কন্টেইনার বক্স হ্যান্ডলিং হয়, যা টিইইউএস হিসেবে ১,২২,৫১৭। এটি চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের রেকর্ড।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র। সিডিডিএল দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের কার্যক্রমে যে গতিশীলতা এসেছে, তা প্রশংসনীয়। নতুন এই রেকর্ড আমাদের সক্ষমতার প্রমাণ এবং ভবিষ্যতে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশকে আরও শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবে।”
বন্দরসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিডিডিএল-এর এই ধারাবাহিক সাফল্য শুধু চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতাই বাড়াচ্ছে না; বরং বাংলাদেশের সার্বিক আমদানি-রপ্তানি খাতকে গতি দিচ্ছে। একইসঙ্গে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের কাছেও এটি দেশের ব্যবসাবান্ধব অবকাঠামো ও পরিচালন দক্ষতার একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের সম্প্রসারণে চট্টগ্রাম বন্দর মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। সিডিডিএল-এর নতুন অর্জনগুলো বাংলাদেশের বাণিজ্য পরিবহন ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখবে।
সারসংক্ষেপে বলা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরের এই নতুন মাইলফলক শুধু রেকর্ড ভাঙার গল্প নয়; বরং এটি দেশের অর্থনীতি ও বৈশ্বিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের সক্ষমতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
ডিএস./



















