কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়ন বাগগারি পাড়ায় গোলজার হোসেনের বাড়ি। তিনি বিভিন্ন উপজেলায় ১১০০ বিঘা জমিতে কলা চাষ করে বছরে প্রায় ২ থেকে ৩ কোটি টাকা আয় করে থাকেন।
সঠিক পরিকল্পনা, জাত নির্বাচন, এবং যত্নের সাথে কলা চাষ করা খুবই লাভজনক হতে পারে এবং বাংলাদেশের কৃষকদের জন্য একটি ভালো আয়ের উৎস। বাংলাদেশের উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু কলা চাষের জন্য উপযোগী, এবং সবরি, সাগর, চাপা এর মতো জনপ্রিয় জাতগুলো বেশি লাভ দেয়। মেহেরসাগরের মতো উন্নত জাতের কলা চাষ করে অনেক কৃষক ভালো আয় করছেন এবং এই চাষ কম খরচ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ কম থাকায় লাভজনক।
ভেড়ামারা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা আশফাকুর রহমান বলেন, ভেড়ামারাতে তামাক চাষের প্রবণতা রয়েছে কৃষকদের মাঝে। আমরা নিয়মিত উদ্বুদ্ধকরন ও পরামর্শ করে যাচ্ছে এবং তারই ফলস্রুতিতে বর্তমানে ভেড়ামারা উপজেলায় স্থায়ী ফল বাগান ফল চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ফল চাষ করে আমি বলতে পারি তামাক চাষের যে পরিমাণ লাভ হয় সে পরিমাণ লাভ অর্জন করতে পারবে এবং পরিবেশের জন্য ভালো। গোলজার হোসেন ভেড়ামারা ও পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলা সহ আশেপাশে উপজেলায় সব মিলিয়ে প্রায় ১১ বিঘা কলা চাষ করে থাকেন। উনি এই উপজেলায় একজন কৃষক হওয়া সত্ত্বেও উনি একজন প্রগতিশীল কৃষক। তামার চাষের থাবা থেকে বেরিয়ে এসেছেন বা উনি যান নাই। কলা চাষ লাভজনক ফল অনেকে এটা লাভবান হচ্ছেন। গোলজার হোসেন একজন উপজেলার মডেল কৃষক। কলা চাষ সম্প্রসারনের জন্য কৃষি অফিস প্রকল্পের মাধ্যমে পরিদর্শন বাস্তবায়ন করে থাকে। পোষ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আছেন এবং উপজেলার আমরা কর্মকর্তারা যারা আছেন তারা সবাই বাগান স্থাপন থেকে শুরু করে রোগ বালাই, পোকামাকড় দমনসহ সকল বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে যেন কলা চাষ আরও জনপ্রিয় হয় সে বিষয়ে আমরা প্রকল্প হোক, রাজস্ব হোক সেখান থেকে আমরা সর্বদা সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
কলা চাষী গোলজার হোসেন বলেন, ১৯৮৯ সালে বিদেশ যাই। ১৯ বছর বিদেশ থাকার পর আর বিদেশ না যে কলা চাষ শুরু করি। প্রথমে আমি ১০ বিঘা জমিতে কলা চাষ শুরু করি। এখন বর্তমানে কলা চাষের পাশাপাশি ভুট্টা চাষ শুরু করেছি। আমি মূলত নদীর চরগুলোতে কলা চাষ করার জন্য বেছে নিয়েছি। যেখানে মানুষ সাধারণত চাষ করে না। গরু মহিষ চরে আমি সেইসব জমি লিজ নিয়ে কলা আবাদ শুরু করি। আমার মোট ১১ বিগা কলাবাগানে আমরা বছর শেষে হিসাব করি প্রতিদিন তাতে ৪০-৫০ জন থেকে শুরু করে ১২০ পর্যন্ত লোক কাজ করে। সেই মোতাবেক গড়ে প্রতিদিন ৯৫ জন লোক আমার বিভিন্ন কলাবাগানে কাজ করেন। ১৬ বছর ধরে কলা চাষ করে তাতে বছরে দুই থেকে তিন কোটি টাকা বিক্রি হয়। কলাবাগানে বাইরে থেকে বেপারীরা এসে কলা কিনে নিয়ে যায়।
ডিএস./