আফ্রিকা মহাদেশের অন্তত ৩৬ টি দেশের ১ হাজার ৪০০ জন নাগরিক রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। বিদেশি নাগরিকদের এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখতে দেশগুলোর সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে সিবিহা বলেন, আফ্রিকার মানুষদের বিভিন্ন উপায়ে প্রলুব্ধ করে যুদ্ধে নিয়ে আসছে রাশিয়া। কারও কাছে অর্থের প্রলোভন দেওয়া হচ্ছে, আবার কেউ বুঝতে না পেরেই মৃত্যুর পথে পা বাড়াচ্ছেন। তার ভাষায়, এই ধরনের চুক্তি সই করা মানেই মৃত্যুদণ্ডে সই করা।
জানা গেছে, অনেক বিদেশি যোদ্ধাকে উচ্চ বেতন, রুশ নাগরিকত্ব এবং নিরাপদ চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হচ্ছে। বাস্তবে তাদের সরাসরি ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ করার জন্য পাঠানো হচ্ছে।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, ‘রাশিয়া আন্তর্জাতিকভাবে এক ধরনের মানব পাচার চালাচ্ছে যেখানে মানুষকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।’
সিবিহা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, রুশ সেনাবাহিনীতে বিদেশিদের পরিণতি অত্যন্ত দুঃখজনক। বেশিরভাগকেই তথাকথিত ‘মিট অ্যাসল্ট’-এ পাঠানো হয় যেখানে তারা দ্রুত মারা যায়। অধিকাংশ ভাড়াটে সৈন্য এক মাসও টিকে থাকতে পারে না।
দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার জানিয়েছে, তারা খতিয়ে দেখছে কীভাবে তাদের ১৭ জন নাগরিক ভাড়াটে বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা জানিয়েছেন, ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী এই যুবকদের ‘লাভজনক চাকরির প্রলোভন’ দেখিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হয়। বর্তমানে তারা ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলে আটকে আছে এবং দেশে ফেরার জন্য সাহায্য চেয়েছেন।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো জানিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। অবৈধভাবে রুশ সেনায় নিয়োগ পাওয়া তরুণ কেনিয়ানদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রুটো বলেন, ‘আমরা নাগরিকদের সতর্ক করতে চাই, এমন যুদ্ধে যোগ দেওয়া মানেই জীবনের ঝুঁকি নেওয়া।’
আফ্রিকা ছাড়াও চীন, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, পাকিস্তান, ভারত ও কিউবা থেকেও রাশিয়া এমন নিয়োগ দিয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।কিউবা থেকে প্রায় ২০,০০০ জন নাগরিককে রুশ বাহিনীতে নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চীনা ও ভারতীয় কিছু নাগরিককেও ইউক্রেনীয় বাহিনী বন্দি করেছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
সূত্র : আল-জাজিরা

























