০৫:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

সাতকানিয়ায় বোরো ধানের আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় বোরো ধানের আবাদকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। শীতের কুয়াশা ভেদ করে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাঠে কাজ করছেন তারা। চারা রোপণ, জমি প্রস্তুত, সেচ ও সার ব্যবস্থাপনায় দিন কাটছে কৃষকদের।

৩০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় ,উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ। কেউ জমিতে চারা তুলছেন, কেউ বা চারা রোপণে ব্যস্ত। অনেক কৃষকই বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর বোরো ধানের আবাদ ভালো হবে বলে আশা করছেন তারা।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছরে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। বিশেষ করে সার, কীটনাশক ও সেচের খরচ তুলনামূলক বেশি হওয়ায় কিছুটা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। তবে ধানের ভালো ফলন হলে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছেন কৃষকেরা।

ঢেমশা এলাকার কৃষক শাহ আলম জানান, এ বছর ৪ কাণি জমিতে চাষাবাদ করছেন ,প্রতি কাণিতে সব মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হবে বলে জানান তিনি। উপজেলা পর্যায়ে যে বীজগুলো দেওয়া হয় সেটি তেমন সুবিধা না, যার কারণে অধিক ফলনের আশায় জমিতে শক্তি ২ শক্তি ৩ হাইব্রিড ধানের জাত রোপণ করছি।

শক্তি-২ এবং শক্তি-৩ হলো বোরো মৌসুমের জন্য জনপ্রিয় হাইব্রিড ধানের জাত যা উচ্চ ফলনশীল, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন এবং ভালো গুণগত মানের জন্য পরিচিত, যেখানে শক্তি-২ মূলত চিকন চালের জন্য এবং শক্তি-৩ মোটা চালের হলেও ফলন ও দানার গুণগত মানের জন্য চাষ করা হয়।

এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সাতকানিয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বোরো ধানের আবাদ এগিয়ে চলছে। কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ, উন্নত জাতের বীজ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ ঠেকাতে মাঠ পর্যায়ে তদারকি বাড়ানো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে সাতকানিয়ায় এ পর্যন্ত প্রায় ২৫০ হেক্টর জমিতে বোরো রোপন সম্পন্ন হয়েছে।বোরো আবাদের
আমাদের এবারের লক্ষ্যমাত্রা ৭৩৪৩ হেক্টর নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ৩৫০ জন কৃষককে ৫ কেজি উপসী ধান বীজ ও ২০ কেজি সার দেওয়া হয়েছে। এবং ৪৫৮০ জন কৃষককে ২ কেজি করে হাইব্রিড ধানের বীজ দেওয়া হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ে সেচ ও সঠিক পরিচর্যা নিশ্চিত করা গেলে এবছর বোরো ধানে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। এতে কৃষকের পাশাপাশি দেশের খাদ্য উৎপাদনেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বোরো ধানের সফল আবাদে এখন কৃষকদের একটাই প্রত্যাশা অনুকূল আবহাওয়া, পর্যাপ্ত সেচ সুবিধা ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা।

ডিএস./

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

কুড়িগ্রামে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি ডায়ালগ

সাতকানিয়ায় বোরো ধানের আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা

প্রকাশিত : ০৪:৪৯:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় বোরো ধানের আবাদকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। শীতের কুয়াশা ভেদ করে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাঠে কাজ করছেন তারা। চারা রোপণ, জমি প্রস্তুত, সেচ ও সার ব্যবস্থাপনায় দিন কাটছে কৃষকদের।

৩০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় ,উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ। কেউ জমিতে চারা তুলছেন, কেউ বা চারা রোপণে ব্যস্ত। অনেক কৃষকই বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর বোরো ধানের আবাদ ভালো হবে বলে আশা করছেন তারা।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছরে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। বিশেষ করে সার, কীটনাশক ও সেচের খরচ তুলনামূলক বেশি হওয়ায় কিছুটা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। তবে ধানের ভালো ফলন হলে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছেন কৃষকেরা।

ঢেমশা এলাকার কৃষক শাহ আলম জানান, এ বছর ৪ কাণি জমিতে চাষাবাদ করছেন ,প্রতি কাণিতে সব মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হবে বলে জানান তিনি। উপজেলা পর্যায়ে যে বীজগুলো দেওয়া হয় সেটি তেমন সুবিধা না, যার কারণে অধিক ফলনের আশায় জমিতে শক্তি ২ শক্তি ৩ হাইব্রিড ধানের জাত রোপণ করছি।

শক্তি-২ এবং শক্তি-৩ হলো বোরো মৌসুমের জন্য জনপ্রিয় হাইব্রিড ধানের জাত যা উচ্চ ফলনশীল, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন এবং ভালো গুণগত মানের জন্য পরিচিত, যেখানে শক্তি-২ মূলত চিকন চালের জন্য এবং শক্তি-৩ মোটা চালের হলেও ফলন ও দানার গুণগত মানের জন্য চাষ করা হয়।

এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সাতকানিয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বোরো ধানের আবাদ এগিয়ে চলছে। কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ, উন্নত জাতের বীজ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ ঠেকাতে মাঠ পর্যায়ে তদারকি বাড়ানো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে সাতকানিয়ায় এ পর্যন্ত প্রায় ২৫০ হেক্টর জমিতে বোরো রোপন সম্পন্ন হয়েছে।বোরো আবাদের
আমাদের এবারের লক্ষ্যমাত্রা ৭৩৪৩ হেক্টর নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ৩৫০ জন কৃষককে ৫ কেজি উপসী ধান বীজ ও ২০ কেজি সার দেওয়া হয়েছে। এবং ৪৫৮০ জন কৃষককে ২ কেজি করে হাইব্রিড ধানের বীজ দেওয়া হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ে সেচ ও সঠিক পরিচর্যা নিশ্চিত করা গেলে এবছর বোরো ধানে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। এতে কৃষকের পাশাপাশি দেশের খাদ্য উৎপাদনেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বোরো ধানের সফল আবাদে এখন কৃষকদের একটাই প্রত্যাশা অনুকূল আবহাওয়া, পর্যাপ্ত সেচ সুবিধা ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা।

ডিএস./