০৫:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

সেনাবাহিনী জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছে: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের আস্থা ও গর্বের প্রতীক। আর সেনাবাহিনীর স্পেশাল ফোর্সের সদস্যরা দেশের চৌকস, সুশৃঙ্খল ও দুঃসাহসী সেনানী। মাতৃভূমির সার্বভৌমত্বকে সমুন্নত রাখতে তারা জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ ও আত্মোৎসর্গ করার সংকল্পে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী সেনানিবাসে এক প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের জাতীয় পতাকা প্রদান কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি এ সময় সেনাবাহিনীকে একটি প্রশিক্ষিত, সুশৃঙ্খল এবং আধুনিক সাজসজ্জায় সজ্জিত বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার। বর্তমান সরকারের রুপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের আলোকে সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি প্রতিষ্ঠিত ও গ্রহণযোগ্য বাহিনী হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছে। সেবা ও কর্তব্য পরায়ণের মাধ্যমে এই বাহিনী জনগণের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং সমগ্র জাতির আস্থা অর্জন করেছে।

সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সেনাবাহিনী গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ পরিচালনা করে নিজেদের কোনো ক্ষতি ছাড়াই এক প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন ১৩ জন দেশি-বিদেশী নাগরিককে উদ্ধার দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। সিলেটের আতিয়া মহলেও সাহসিকতার সাথে ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ পরিচালনা করেছে। জঙ্গিবাদ এখন বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি। এ অবস্থায় প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের গুরুত্ব অপরিসীম।

তিনি বলেন, দেশের প্রাকৃতি দুর্যোগ ও দুর্ঘটনায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্বব্যাপি সুনাম অর্জন করেছে। এ বছর চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে অমূল্য প্রাণের বিনিময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাবার, পানি ও চিকিৎসা পৌঁছে দিয়ে সেনাবাহিনী আর্তমানবতার সেবায় অনন্য নজির স্থাপন করেছে। উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দুর্গত এলাকায় এই বাহিনী কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে। সেনাবাহিনীকে দেশের যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় এভাবেই প্রস্তুত থাকতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সামরিক জীবনে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জিত হয় এবং নৈপুন্য নিশ্চিত করা যায়। সর্বোত্তম প্রশিক্ষণ ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যেই এক প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন বাঙালি জাতির সুনাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছে। প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নের এই ধারা আগামিতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি।

এর আগে রাষ্ট্রপতি রাজশাহী সেনানিবাসের শহীদ কর্নেল আনিস প্যারেড গ্রাউন্ডে সেনা সদস্যদের কুচকাওয়াজ অভিবাদন গ্রহণ করেন এবং এক প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নকে জাতীয় পতাকা প্রদান করেন।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরারসহ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকালে রাষ্ট্রপতি প্যারেড গ্রাউন্ডে গেলে সেনাবাহিনীর প্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, বগুড়া এরিয়ার কমান্ডার মেজর জেনারেল মোশফেকুর রহমান, বিআইআরসি কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আশরাফউল কাদের, এডহক প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঈন উদ্দিন মাহমুদ চৌধুরী তাকে অভ্যর্থনা জানান।

ট্যাগ :

সেনাবাহিনী জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছে: রাষ্ট্রপতি

প্রকাশিত : ০৭:১৪:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০১৭

রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের আস্থা ও গর্বের প্রতীক। আর সেনাবাহিনীর স্পেশাল ফোর্সের সদস্যরা দেশের চৌকস, সুশৃঙ্খল ও দুঃসাহসী সেনানী। মাতৃভূমির সার্বভৌমত্বকে সমুন্নত রাখতে তারা জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ ও আত্মোৎসর্গ করার সংকল্পে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী সেনানিবাসে এক প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের জাতীয় পতাকা প্রদান কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি এ সময় সেনাবাহিনীকে একটি প্রশিক্ষিত, সুশৃঙ্খল এবং আধুনিক সাজসজ্জায় সজ্জিত বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার। বর্তমান সরকারের রুপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের আলোকে সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি প্রতিষ্ঠিত ও গ্রহণযোগ্য বাহিনী হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছে। সেবা ও কর্তব্য পরায়ণের মাধ্যমে এই বাহিনী জনগণের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং সমগ্র জাতির আস্থা অর্জন করেছে।

সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সেনাবাহিনী গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ পরিচালনা করে নিজেদের কোনো ক্ষতি ছাড়াই এক প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন ১৩ জন দেশি-বিদেশী নাগরিককে উদ্ধার দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। সিলেটের আতিয়া মহলেও সাহসিকতার সাথে ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ পরিচালনা করেছে। জঙ্গিবাদ এখন বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি। এ অবস্থায় প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের গুরুত্ব অপরিসীম।

তিনি বলেন, দেশের প্রাকৃতি দুর্যোগ ও দুর্ঘটনায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্বব্যাপি সুনাম অর্জন করেছে। এ বছর চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে অমূল্য প্রাণের বিনিময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাবার, পানি ও চিকিৎসা পৌঁছে দিয়ে সেনাবাহিনী আর্তমানবতার সেবায় অনন্য নজির স্থাপন করেছে। উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দুর্গত এলাকায় এই বাহিনী কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে। সেনাবাহিনীকে দেশের যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় এভাবেই প্রস্তুত থাকতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সামরিক জীবনে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জিত হয় এবং নৈপুন্য নিশ্চিত করা যায়। সর্বোত্তম প্রশিক্ষণ ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যেই এক প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন বাঙালি জাতির সুনাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছে। প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নের এই ধারা আগামিতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি।

এর আগে রাষ্ট্রপতি রাজশাহী সেনানিবাসের শহীদ কর্নেল আনিস প্যারেড গ্রাউন্ডে সেনা সদস্যদের কুচকাওয়াজ অভিবাদন গ্রহণ করেন এবং এক প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নকে জাতীয় পতাকা প্রদান করেন।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরারসহ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকালে রাষ্ট্রপতি প্যারেড গ্রাউন্ডে গেলে সেনাবাহিনীর প্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, বগুড়া এরিয়ার কমান্ডার মেজর জেনারেল মোশফেকুর রহমান, বিআইআরসি কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আশরাফউল কাদের, এডহক প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঈন উদ্দিন মাহমুদ চৌধুরী তাকে অভ্যর্থনা জানান।