০৯:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিটিআরসির বিরদ্ধে ব্যবস্থা নেবে গ্রামীণফোন

বাংলাদেশ রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) ‘অন্যায্য’ পদক্ষেপের বিরদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছে গ্রামীণফোন।

বকেয়া টাকা আদায়ে টু জি ও থ্রি জি লাইসেন্স বাতিলের বিষয়ে বিটিআরসির পাঠানো কারণ দর্শানো নোটিশকে ‘অন্যায্য’ আখ্যায়িত করে গ্রামীণফোন এ কথা জানায়। রোববার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে এ তথ্য প্রকাশ করেছে গ্রামীণফোন। ডিএসইকে গ্রামীণফোন জানিয়েছে, বিটিআরসির আট হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চার হাজার ৮৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকাসহ মোট ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা চলতি বছরের ৪ এপ্রিল গ্রামীণফোনের কাছে দাবি করে বিটিআরসি। এ বিষয়ে বিটিআরসি থেকে গত ৫ সেপ্টেম্বর একটি কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এতে গ্রামীণফোনের টু জি এবং থ্রি জি লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, সে বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

বিটিআরসির এ নোটিশের প্রেক্ষিতে গ্রামীণফোন বলছে, কোম্পানি, শেয়ারহোল্ডার এবং গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) অন্যায্য পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ম্যানেজমেন্ট কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তবে বিটিআরসির পদক্ষেপর বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি গ্রামীণফোন। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে থেকে বলা হয়েছে, সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যায় তা ঠিক করা হবে। এদিকে পাওনা দাবি নিয়ে বিটিআরসি ও গ্রামীণফোনের মধ্যকার দ্বন্দ্বের ফলে শেয়ারবাজারে মোবাইল অপেরেটর কোম্পানির শেয়ার দামে ব্যাপক দরপতন হয়েছে। এতে কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডারা গত পাঁচ মাসে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা হরিয়েছেন। বিটিআরসি যে দিন গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা পাওনা দাবি করে চিঠি দেয় তার আগের কার্যদিবসে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৪১৭ টাকা। পাওনা দাবি করার দিন থেকেই গ্রামীণফোনের শেয়ার দাম কমতে থাকে। অব্যাহত দরপতনের কারণে রোববার লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দাম দাঁড়িয়েছে ২৯৯ টাকায়। এ হিসাবে প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ১১৮ টাকা।

গ্রামীণফোনের মোট শেয়ার সংখ্যা ১৩৫ কোটি ৩ লাখ ২২। অর্থাৎ অব্যাহত দরপতনে গ্রামীণফোনের শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ১৫ হাজার ৯৩৩ কোটি ৫৪ লাখ ২ হাজার ৫৯৬ টাকা। পাওনা দাবি করে গত এপ্রিলে বিটিআরসি থেকে গ্রামীণফোনকে চিঠি দেয়া হলেও এখনো তা আদায় হয়নি। গ্রামীণফোনের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে না পেরে এখন কোম্পানিাটির টু জি এবং থ্রি জি লাইসেন্স বাতিলে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে বিটিআরসি। অবশ্য বিটিআরসি থেকে পাওনা দাবি করার পর ১৬ এপ্রিল চিঠি দিয়ে পাওনার দাবিকে অস্বীকার করে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ। এতে বিটিআরসির দাবিকে প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয়। একই সঙ্গে সুন্দর সমাধানের জন্য আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো হয়। এরপর বিটিআরসি ১২ মে গ্রামীণফোনকে চিঠি দিয়ে অবিলম্বে পুরো টাকা পরিশোধের জন্য নির্দেশ দেয়। তবে গ্রামীণফোন দাবি পরিশোধ না করায় ২০ জুন পুনরায় চিঠি দিয়ে পুরো টাকা ১০ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ করতে বলে বিটিআরসি। এ প্রেক্ষিতে ২৩ জুন বিষয়টি সমাধানের জন্য বিটিআরসিকে আইনগত উপায়ে সালিশি নোটিশ দেয় গ্রামীণফোন। তার সাত দিন পর ৩০ জুন বিষয়টি সালিশির মাধ্যমে সমাধানে টেলিকম সচিবকে চিঠি দেয়। এ পরিস্থিতিতে ৪ জুলাই গ্রামীণফোনের ব্যান্ডউইথ ৩০ শতাংশ কমাতে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারকানেকশন গেটওয়ে (আইআইজি) অপারেটরদের নির্দেশ দেয়।

ব্যান্ডউইথ কমানোর প্রেক্ষিতে ৬ জুলাই বিটিআরসিকে বিষয়টি প্রত্যাহার করে নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয় গ্রামীণফোন। একই সঙ্গে সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনায় বসার আহ্বান করে। এরপর গ্রাহকের সমস্যার কথা চিন্তা করে ১৩ দিনের মাথায় ব্যান্ডউইথ কমানোর নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নেয় বিটিআরসি।

বিজনেস বাংলাদেশ/শ

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

সীতাকুণ্ডে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৭

বিটিআরসির বিরদ্ধে ব্যবস্থা নেবে গ্রামীণফোন

প্রকাশিত : ০৯:১৬:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বাংলাদেশ রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) ‘অন্যায্য’ পদক্ষেপের বিরদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছে গ্রামীণফোন।

বকেয়া টাকা আদায়ে টু জি ও থ্রি জি লাইসেন্স বাতিলের বিষয়ে বিটিআরসির পাঠানো কারণ দর্শানো নোটিশকে ‘অন্যায্য’ আখ্যায়িত করে গ্রামীণফোন এ কথা জানায়। রোববার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে এ তথ্য প্রকাশ করেছে গ্রামীণফোন। ডিএসইকে গ্রামীণফোন জানিয়েছে, বিটিআরসির আট হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চার হাজার ৮৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকাসহ মোট ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা চলতি বছরের ৪ এপ্রিল গ্রামীণফোনের কাছে দাবি করে বিটিআরসি। এ বিষয়ে বিটিআরসি থেকে গত ৫ সেপ্টেম্বর একটি কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এতে গ্রামীণফোনের টু জি এবং থ্রি জি লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, সে বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

বিটিআরসির এ নোটিশের প্রেক্ষিতে গ্রামীণফোন বলছে, কোম্পানি, শেয়ারহোল্ডার এবং গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) অন্যায্য পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ম্যানেজমেন্ট কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তবে বিটিআরসির পদক্ষেপর বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি গ্রামীণফোন। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে থেকে বলা হয়েছে, সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যায় তা ঠিক করা হবে। এদিকে পাওনা দাবি নিয়ে বিটিআরসি ও গ্রামীণফোনের মধ্যকার দ্বন্দ্বের ফলে শেয়ারবাজারে মোবাইল অপেরেটর কোম্পানির শেয়ার দামে ব্যাপক দরপতন হয়েছে। এতে কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডারা গত পাঁচ মাসে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা হরিয়েছেন। বিটিআরসি যে দিন গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা পাওনা দাবি করে চিঠি দেয় তার আগের কার্যদিবসে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৪১৭ টাকা। পাওনা দাবি করার দিন থেকেই গ্রামীণফোনের শেয়ার দাম কমতে থাকে। অব্যাহত দরপতনের কারণে রোববার লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দাম দাঁড়িয়েছে ২৯৯ টাকায়। এ হিসাবে প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ১১৮ টাকা।

গ্রামীণফোনের মোট শেয়ার সংখ্যা ১৩৫ কোটি ৩ লাখ ২২। অর্থাৎ অব্যাহত দরপতনে গ্রামীণফোনের শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ১৫ হাজার ৯৩৩ কোটি ৫৪ লাখ ২ হাজার ৫৯৬ টাকা। পাওনা দাবি করে গত এপ্রিলে বিটিআরসি থেকে গ্রামীণফোনকে চিঠি দেয়া হলেও এখনো তা আদায় হয়নি। গ্রামীণফোনের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে না পেরে এখন কোম্পানিাটির টু জি এবং থ্রি জি লাইসেন্স বাতিলে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে বিটিআরসি। অবশ্য বিটিআরসি থেকে পাওনা দাবি করার পর ১৬ এপ্রিল চিঠি দিয়ে পাওনার দাবিকে অস্বীকার করে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ। এতে বিটিআরসির দাবিকে প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয়। একই সঙ্গে সুন্দর সমাধানের জন্য আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো হয়। এরপর বিটিআরসি ১২ মে গ্রামীণফোনকে চিঠি দিয়ে অবিলম্বে পুরো টাকা পরিশোধের জন্য নির্দেশ দেয়। তবে গ্রামীণফোন দাবি পরিশোধ না করায় ২০ জুন পুনরায় চিঠি দিয়ে পুরো টাকা ১০ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ করতে বলে বিটিআরসি। এ প্রেক্ষিতে ২৩ জুন বিষয়টি সমাধানের জন্য বিটিআরসিকে আইনগত উপায়ে সালিশি নোটিশ দেয় গ্রামীণফোন। তার সাত দিন পর ৩০ জুন বিষয়টি সালিশির মাধ্যমে সমাধানে টেলিকম সচিবকে চিঠি দেয়। এ পরিস্থিতিতে ৪ জুলাই গ্রামীণফোনের ব্যান্ডউইথ ৩০ শতাংশ কমাতে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারকানেকশন গেটওয়ে (আইআইজি) অপারেটরদের নির্দেশ দেয়।

ব্যান্ডউইথ কমানোর প্রেক্ষিতে ৬ জুলাই বিটিআরসিকে বিষয়টি প্রত্যাহার করে নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয় গ্রামীণফোন। একই সঙ্গে সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনায় বসার আহ্বান করে। এরপর গ্রাহকের সমস্যার কথা চিন্তা করে ১৩ দিনের মাথায় ব্যান্ডউইথ কমানোর নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নেয় বিটিআরসি।

বিজনেস বাংলাদেশ/শ