নওগাঁর আত্রাইয়ের শাহাগোলা ইউপির আদর্শগ্রামের পূর্ব পাশে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শত বছরের একটি বটগাছ। সড়কের দুই পাশে ছড়িয়ে পড়েছে গাছটির বিশাল শাখা-প্রশাখা।
শিকড়ে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। তবে শতবর্শী হলেও বটগাছটি আজো তাজা তরুণ আর চিরসবুজ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
এ বটগাছকে ঘিরে নানা রহস্যে ঘেরা গল্প-কাহিনী আর কল্পগাথা। জানা গেছে, বাদশা শেরশাহর শাসনামলে গ্র্যান্ডটাংক রোড নির্মাণকালে আত্রাইয়ের শাহাগোলার আদর্শগ্রামের কাছে এ বটগাছটি রোপণ করা হয়েছিল।
সে সময় এ এলাকায় বিল ছিল। রোদ বৃষ্টির মাঝে কৃষকরা তাদের কষ্টের ফসল ফলাতো। রাখালেরা মাঠে ঘাস খাওয়ানোর জন্য গবাদিপশুকে ছেড়ে দিয়ে ক্লান্ত শরীরে শীতল ছায়ার প্রতিক্ষায় থাকতো।
আর সে কারণেই নাকি এ বটগাছ রোপণ করা হয়েছিলো। তাই গ্রীষ্মের দাবদাহে কৃষক যখন অতিষ্ট ঠিক তখনই একটু শীতল ছায়ার আশায় এ বট বৃক্ষের নীচে জমা হতো।
এ বটবৃক্ষ সম্পর্কে আলাপচারিতায় ভবানীপুর গ্রামের আব্দুল আজিজ জানান, আমার জন্মের পর থেকেই এ বটগাছটি দেখে আসছি। এই বটগাছের কত বয়স হবে তা আমরা সঠিকভাবে বলতে পারবো না।
এখন বটগাছের নিচে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সমাগম ঘটে। এ বটগাছটি যেন সেই আদিম সনাতন সভ্যতার ইতিহাস ও ঐতিহ্যর সারকথা আজো সবার সামনে তুলে ধরে আছে।
তিনি আরো জানান, অযত্ন-অবহেলা, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও নানামুখী অত্যাচারের কারণে এই ঐতিহ্যবাহী বটগাছের অস্তিত্ব নষ্ট হতে চলেছে।
দেশের বিভিন্নস্থান থেকে বটগাছটি লোকজন বছরের প্রায় প্রতিদিনই দেখতে আসে। তাদের জন্য বিশ্রাম বা বসার জায়গাটুকু ও এখানে নেই।
এলাকার সচেতনমহল মনে করেন এই বটগাছটি সংরক্ষণ এবং এই স্থানটিতে দর্শনার্থীদের বসার ব্যবস্থা নিলে এখানে আরো লোকের সমাগম ঘটবে এবং ভবিষ্যতে বর্ষীয়ান এ বটগাছের জন্যই এলাকাটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে।
এলাকাবাসীর দাবী এই ঐতিহ্যবাহী বটগাছটি রক্ষায় যেন প্রশাসনের সু-দৃষ্টি পড়ে এবং তারা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
বিজনেস বাংলাদেশ/এম মিজান