বিশাল জলরাশির ওপর ভাসতে ভাসতে ভরপুর কোনো পূর্ণিমা রাতের গাঢ় নীল আকাশ দেখতে চাইলে যেতে পারেন নিকলী হাওর। সহজেই হালকা হয়ে উঠবে দেহ-মন। পানিতে ভাসতে ভাসতে কখন যে হাওরের মূল কেন্দ্রতে প্রবেশ করবেন তা টেরই পাবেন না।
একপর্যায়ে যখন কোনো গ্রাম দেখা যাবে না, তখন হাওরকে আপনার শান্ত একটা সমুদ্রের মতো মনে হতে পারে। আবার ঘুরতে ঘুরতে চোখে পড়বে পানির ওপর ভাসমান অসম্ভব সুন্দর ছোট ছোট সবুজ গ্রাম। নৌকা থামিয়ে কোনো এক গ্রাম খানিকটা ঘোরা যেতেই পারে।
হাওরের মাঝে বিন্দু বিন্দু গ্রামগুলোতে অসম্ভব রকমের সৌন্দর্য রয়েছে। গ্রামের মানুষগুলোর মধ্যে কতটা সরলতা, তা বলে বোঝানো যাবেনা। মাঝে মাঝে মনে হবে, পানির সঙ্গে বসবাস করতে করতে মানুষের স্বভাব-চরিত্রও পানির মতো হয়ে গেছে।
বিভিন্ন গ্রামের বাজার থেকে হালকা নাস্তা কিনে নিতে পারেন। খোলা আকাশের নিচে এলোমেলো বাতাসে নৌকার ছাদে খেতে বসলে আপনি পেতে পারেন খাওয়ার এক অদ্ভুত আনন্দ।
নিকলী হাওর যাওয়া মানেই ছাতিরচরে ঢুঁ মেরে আসা। এটা যেন পানির ভেতর এক সবুজ বন। নৌকা নিয়েই যেতে পারবেন জলে ডুবে যাওয়া বনের সারি সারি উঁচু গাছের বুক চিরে। অনেকেই জায়গাটিকে ‘দ্বিতীয় রাতারগুল’ বলে থাকেন।
বলতে গেলে রাতারগুলের চেয়ে কম সুন্দর না। দেখে অবাক হয়ে হয়তো বলে ফেলবেন, ‘এতটাই সুন্দর!’ নিকলী বেড়িবাঁধ থেকে নৌকায় সরাসরি ছাতিরচর যেতে ঘণ্টাখানেক সময় লাগে।
জ্যোৎস্না রাত নিকলী হাওরে বেড়ানোর জন্য আদর্শ জায়গা। নিশুতি রাত, স্বচ্ছ জলে চাঁদের আছড়ে পড়া আলো এবং নৌকার গায়ে হাওরের অবিরাম জলকেলি ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না।
দিনের বেলা চোখে পড়বে ছোট ছোট নৌকা নিয়ে জেলেরা মাছ ধরতে বেরিয়ে পড়েছেন হাওরের বুকে।
আর জলের ওপর সূর্যোদয়ের লাল আভার ছন্দবদ্ধ আবেগ। তাহলে আর দেরি কেন, এক বা দু’দিনের ট্যুরে বেরিয়ে পড়ুন নিকলি হাওরের উদ্দেশে।
জেনে নিন
ঢাকা থেকে ট্রেন বা বাসে চলে যান কিশোরগঞ্জ শহর। রেল স্টেশনের সামনে থেকে সিএনজিতে যেতে হবে নিকলী। ঘাট থেকে নৌকা ভাড়া করে হাওর ঘরে দেখুন।
নিকলীতে কোনো আবাসিক হোটেল নেই। রাতে থাকতে চাইলে যেতে পারেন কিশোরগঞ্জে। গাঙচিল, শ্রাবণী আর আল-মুসলিমের মতো উন্নত হোটেলগুলোতে থাকতে পারেন।
বিজনেস বাংলাদেশ/এম মিজান