১১:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অপার সম্ভাবনায় সূর্যমুখী চাষ

মেহেরপুরে সবধরনের সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এবার জেলায় রবিশষ্যের চাষাবাদে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। এ অঞ্চলের মাটির গুনাগুন, আবহাওয়া ও জলবায়ু সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য উপযোগী হওয়ায় কৃষকের কাছে জনপ্রিয় ও আগ্রহী করে তুলতে জেলার একমাত্র তৈলবীজ খামার আমঝুপিতে এর পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে। অনেক কৃষক আসছেন পরামর্শ নিতে। সূর্যমূখী চাষ হলে দেশের ভোজ্যতেলের ঘাটতি পূরুণ হবে বলে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। সূর্যমুখী একটি তেল ফসল। এটি স্থানীয়ভাবে উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবেও পরিচিত। ভোজ্য তেলের মধ্যে সূর্যমুখী শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো। এটি শরীরের কোলেস্টেরল ঠিক রাখে। তাই সূর্যমুখীর চাষাবাদ কৃষকের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে তৈলবীজ খামারে বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে এবার এ খামারে ১৯ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলায় আরও ২৯ বিঘা জমিতে এর চাষ করা হয়। মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারহ। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে আসছে দর্শনার্থীরাও। মেহেরপুর গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার বিডি দাস জানান, সূর্যমুখীর তেল অন্যান্য সাধারণ তেলের চাইতে একটু আলাদা। কোলেস্টেরলমুক্ত প্রচুর পরিমাণে প্রাণশক্তি থাকায় সূর্যমুখী তেল আমাদের শরীরের দুর্বলতা, কার্যক্ষমতা বাড়ায়। রান্নার জন্য সয়াবিন তেলের চাইতে এর তেল দশগুণ বেশি পুষ্টি সমৃদ্ধ। তিনি জানান, শরীরের হাড় সুস্থ ও মজবুত করে। সূর্যমুখী তেলে থাকা ম্যাগনেসিয়াম আমাদের মানসিক চাপ দূর করে। এক কথায় সূর্যমুখী তেলে মানবদেহের মহাওষুধ হিসেবে ভূমিকা রাখছে। আমঝুপি বিএডিসি’র সূর্যমুখী ফুলের খামার দেখতে আসা আগ্রহী কৃষক রাজনগর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক জানান, দৃষ্টিনন্দন এই ফুল প্রকৃতিকে করেছে মনোমুগ্ধকর। অনেকেই ক্যামেরাবন্দি হচ্ছেন সুর্যমূখীর সঙ্গে। তিনি তার জমিতে এই ফুল চাষের আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং এখান থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। একই কথা জানালেন সাগর ও হারুন অর রশিদ। মেহেরপুর বিএডিসির উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যসুখী ফুল চাষে খরচ কম। এতে সার ওষুধ কম লাগে। তেমন পরিচর্যাও করতে হয় না। তাছাড়া অন্যান্য তৈল বীজ যেমন সরিষার, তিলের চেয়ে তেলও বেশি পাওয়া যায়। পুষ্টি চাহিদা পুরুণে সুর্যমূখী তেলের জন্য বিদেশ থেকে এর বীজ আমদানি করতে হয়। তিনি জানান, দেশে সূর্যমুখীর আবাদ করা গেলে বিদেশ থেকে আমদানি কমে যাবে। এটি নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে সারিবদ্ধভাবে বীজ বপন করা হয়। বপনের ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দু’বার সেচ দিতে হয়

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

সীতাকুণ্ডে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৭

অপার সম্ভাবনায় সূর্যমুখী চাষ

প্রকাশিত : ১২:০০:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১

মেহেরপুরে সবধরনের সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এবার জেলায় রবিশষ্যের চাষাবাদে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। এ অঞ্চলের মাটির গুনাগুন, আবহাওয়া ও জলবায়ু সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য উপযোগী হওয়ায় কৃষকের কাছে জনপ্রিয় ও আগ্রহী করে তুলতে জেলার একমাত্র তৈলবীজ খামার আমঝুপিতে এর পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে। অনেক কৃষক আসছেন পরামর্শ নিতে। সূর্যমূখী চাষ হলে দেশের ভোজ্যতেলের ঘাটতি পূরুণ হবে বলে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। সূর্যমুখী একটি তেল ফসল। এটি স্থানীয়ভাবে উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবেও পরিচিত। ভোজ্য তেলের মধ্যে সূর্যমুখী শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো। এটি শরীরের কোলেস্টেরল ঠিক রাখে। তাই সূর্যমুখীর চাষাবাদ কৃষকের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে তৈলবীজ খামারে বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে এবার এ খামারে ১৯ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলায় আরও ২৯ বিঘা জমিতে এর চাষ করা হয়। মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারহ। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে আসছে দর্শনার্থীরাও। মেহেরপুর গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার বিডি দাস জানান, সূর্যমুখীর তেল অন্যান্য সাধারণ তেলের চাইতে একটু আলাদা। কোলেস্টেরলমুক্ত প্রচুর পরিমাণে প্রাণশক্তি থাকায় সূর্যমুখী তেল আমাদের শরীরের দুর্বলতা, কার্যক্ষমতা বাড়ায়। রান্নার জন্য সয়াবিন তেলের চাইতে এর তেল দশগুণ বেশি পুষ্টি সমৃদ্ধ। তিনি জানান, শরীরের হাড় সুস্থ ও মজবুত করে। সূর্যমুখী তেলে থাকা ম্যাগনেসিয়াম আমাদের মানসিক চাপ দূর করে। এক কথায় সূর্যমুখী তেলে মানবদেহের মহাওষুধ হিসেবে ভূমিকা রাখছে। আমঝুপি বিএডিসি’র সূর্যমুখী ফুলের খামার দেখতে আসা আগ্রহী কৃষক রাজনগর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক জানান, দৃষ্টিনন্দন এই ফুল প্রকৃতিকে করেছে মনোমুগ্ধকর। অনেকেই ক্যামেরাবন্দি হচ্ছেন সুর্যমূখীর সঙ্গে। তিনি তার জমিতে এই ফুল চাষের আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং এখান থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। একই কথা জানালেন সাগর ও হারুন অর রশিদ। মেহেরপুর বিএডিসির উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যসুখী ফুল চাষে খরচ কম। এতে সার ওষুধ কম লাগে। তেমন পরিচর্যাও করতে হয় না। তাছাড়া অন্যান্য তৈল বীজ যেমন সরিষার, তিলের চেয়ে তেলও বেশি পাওয়া যায়। পুষ্টি চাহিদা পুরুণে সুর্যমূখী তেলের জন্য বিদেশ থেকে এর বীজ আমদানি করতে হয়। তিনি জানান, দেশে সূর্যমুখীর আবাদ করা গেলে বিদেশ থেকে আমদানি কমে যাবে। এটি নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে সারিবদ্ধভাবে বীজ বপন করা হয়। বপনের ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দু’বার সেচ দিতে হয়