০৬:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মিরাজের আলোয় উজ্জ্বল বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক তো দূরে থাক, ঘরোয়া ক্রিকেটেও কখনো তিন অঙ্কের ঘরে যাওয়া হয়নি মেহেদী হাসান মিরাজের। সেই তিনিই লম্বা বিরতির পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই পেয়ে গেলেন সেঞ্চুরি। তার ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে চট্টগ্রাম টেস্টে বড় সংগ্রহ গড়েছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে অলআউট হওয়ার আগে স্বাগতিকরা করেছে ৪৩০ রান। জোমেল ওয়ারিকানের বলে ২ রান নিয়ে সেঞ্চুরি পূরণ করেন মিরাজ। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করতে লেগেছে তার ১৬০ বল। রাকিম কর্নওয়ালের বলে আউট হওয়ার আগে ডানহাতি ব্যাটসম্যান খেলে যান ১০৩ রানের ঝলমলে ইনিংস। ১৬৮ বলের স্মরণীয় ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১৩ বাউন্ডারিতে। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তার আউটে শেষ হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। মোস্তাফিজুর রহমান অপরাজিত থাকেন ৩ রানে। দ্বিতীয় দিনের লাঞ্চ বিরতির পরই টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি পান মিরাজ। ৯৯ বলে মাইলফলকটিতে পৌঁছান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ব্যাটিং অলরাউন্ডার হলেও জাতীয় দলে এসে হয়ে গেছেন তিনি স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার। সুযোগ পেলে কিংবা প্রয়োজনের সময় প্রায়ই জ্বলে ওঠে মিরাজের ব্যাট। চট্টগ্রাম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে যেমন হলো। সাকিব আল হাসানের বিদায়ের পর দারুণ ব্যাটিংয়ে দলের হাল ধরেন মিরাজ। ঠান্ডা মাথায়, তবে প্রয়োজনে আবার আগ্রাসী হয়েছে তার ব্যাট। তাই দ্বিতীয় দিনের সব আলো নিজের ওপর নিয়ে ফেলেছেন তরুণ এই ক্রিকেটার। দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে বাংলাদেশ হারায় ২ উইকেট। আউট হন দিন শুরু করা দুই ব্যাটসম্যান সাকিব ও লিটন দাস। দিনের শুরুতেই সাজঘরে ফেরেন লিটন। ওয়ারিকানের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। যাওয়ার আগে প্রথম দিনের সঙ্গে আর মাত্র ৪ রান যোগ করতে পেরেছেন তিনি। আউট হয়েছেন ৩৮ রানে। ৬৭ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৬ বাউন্ডারিতে। সাকিব অবশ্য দারুণ ব্যাটিংয়ে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই নিজেকে চেনালেন এই অলরাউন্ডার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার শুরুতে একটু সময় নিয়েছেন যদিও, তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সেরা সাকিবকে পাওয়া যাচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শেষ করেছিলেন যেখানে, সেখান থেকেই শুরু করলেন টেস্ট। লম্বা সময় পর ক্রিকেটের লম্বা সংস্করণে ফেরাটা এই অলরাউন্ডার রাঙালেন হাফসেঞ্চুরিতে। টেস্ট প্রত্যাবর্তনে পুরনো সাকিবকেই পাওয়া গেল। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনের ৩৯ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করে তিনি পেয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৫তম হাফসেঞ্চুরি। এই ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষেই লাল বলে সবশেষ ফিফটি পেয়েছিলেন সাকিব। ২০১৮ সালে মিরপুর টেস্টে খেলেছিলেন ৮০ রানের ইনিংস। একবছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়ে ক্রিকেটের লম্বা সংস্করণে ফিরেছেন সাকিব। ১১০ বলে হাফসেঞ্চুরি পাওয়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যান খেলেছেন ৬৮ রানের ইনিংস। রাকিম কর্নওয়ালের বলে ক্রেগ ব্র্যাথওয়েটকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। ১৫০ বলের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৫ বাউন্ডারিতে। সাকিবের বিদায়ের পর তাইজুল ইসলামকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন মিরাজ। গড়েন ৪৪ রানের জুটি। তাইজুল ৭২ বলে করে যান ২৪ রান। এরপর মিরাজ সঙ্গী হিসেবে পান নাঈম হাসানকে। নবম উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ৫৭ রান। তবে নাঈম ২৪ রানে ফিরে যান। এতে মিরাজের সেঞ্চুরি হুমকির মুখে পড়ে যায়! কেননা শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে বাকি ছিলেন কেবল মোস্তাফিজুর রহমান। তবে এই পেসারের সঙ্গ পেয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন মিরাজ। ক্যারিবিয়ানদের সবচেয়ে সফল বোলার ওয়ারিকান। ৪৮ ওভারে ১৩৩ রান দিয়ে এই স্পিনারের শিকার ৪ উইকেট। ২ উইকেট নিয়েছেন কর্নওয়াল। আর একটি করে শিকার কেমার রোচ, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ও এনক্রুমা বনারের।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

সীতাকুণ্ডে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৭

মিরাজের আলোয় উজ্জ্বল বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ১২:০০:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১

আন্তর্জাতিক তো দূরে থাক, ঘরোয়া ক্রিকেটেও কখনো তিন অঙ্কের ঘরে যাওয়া হয়নি মেহেদী হাসান মিরাজের। সেই তিনিই লম্বা বিরতির পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই পেয়ে গেলেন সেঞ্চুরি। তার ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে চট্টগ্রাম টেস্টে বড় সংগ্রহ গড়েছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে অলআউট হওয়ার আগে স্বাগতিকরা করেছে ৪৩০ রান। জোমেল ওয়ারিকানের বলে ২ রান নিয়ে সেঞ্চুরি পূরণ করেন মিরাজ। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করতে লেগেছে তার ১৬০ বল। রাকিম কর্নওয়ালের বলে আউট হওয়ার আগে ডানহাতি ব্যাটসম্যান খেলে যান ১০৩ রানের ঝলমলে ইনিংস। ১৬৮ বলের স্মরণীয় ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১৩ বাউন্ডারিতে। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তার আউটে শেষ হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। মোস্তাফিজুর রহমান অপরাজিত থাকেন ৩ রানে। দ্বিতীয় দিনের লাঞ্চ বিরতির পরই টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি পান মিরাজ। ৯৯ বলে মাইলফলকটিতে পৌঁছান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ব্যাটিং অলরাউন্ডার হলেও জাতীয় দলে এসে হয়ে গেছেন তিনি স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার। সুযোগ পেলে কিংবা প্রয়োজনের সময় প্রায়ই জ্বলে ওঠে মিরাজের ব্যাট। চট্টগ্রাম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে যেমন হলো। সাকিব আল হাসানের বিদায়ের পর দারুণ ব্যাটিংয়ে দলের হাল ধরেন মিরাজ। ঠান্ডা মাথায়, তবে প্রয়োজনে আবার আগ্রাসী হয়েছে তার ব্যাট। তাই দ্বিতীয় দিনের সব আলো নিজের ওপর নিয়ে ফেলেছেন তরুণ এই ক্রিকেটার। দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে বাংলাদেশ হারায় ২ উইকেট। আউট হন দিন শুরু করা দুই ব্যাটসম্যান সাকিব ও লিটন দাস। দিনের শুরুতেই সাজঘরে ফেরেন লিটন। ওয়ারিকানের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। যাওয়ার আগে প্রথম দিনের সঙ্গে আর মাত্র ৪ রান যোগ করতে পেরেছেন তিনি। আউট হয়েছেন ৩৮ রানে। ৬৭ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৬ বাউন্ডারিতে। সাকিব অবশ্য দারুণ ব্যাটিংয়ে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই নিজেকে চেনালেন এই অলরাউন্ডার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার শুরুতে একটু সময় নিয়েছেন যদিও, তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সেরা সাকিবকে পাওয়া যাচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শেষ করেছিলেন যেখানে, সেখান থেকেই শুরু করলেন টেস্ট। লম্বা সময় পর ক্রিকেটের লম্বা সংস্করণে ফেরাটা এই অলরাউন্ডার রাঙালেন হাফসেঞ্চুরিতে। টেস্ট প্রত্যাবর্তনে পুরনো সাকিবকেই পাওয়া গেল। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনের ৩৯ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করে তিনি পেয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৫তম হাফসেঞ্চুরি। এই ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষেই লাল বলে সবশেষ ফিফটি পেয়েছিলেন সাকিব। ২০১৮ সালে মিরপুর টেস্টে খেলেছিলেন ৮০ রানের ইনিংস। একবছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়ে ক্রিকেটের লম্বা সংস্করণে ফিরেছেন সাকিব। ১১০ বলে হাফসেঞ্চুরি পাওয়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যান খেলেছেন ৬৮ রানের ইনিংস। রাকিম কর্নওয়ালের বলে ক্রেগ ব্র্যাথওয়েটকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। ১৫০ বলের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৫ বাউন্ডারিতে। সাকিবের বিদায়ের পর তাইজুল ইসলামকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন মিরাজ। গড়েন ৪৪ রানের জুটি। তাইজুল ৭২ বলে করে যান ২৪ রান। এরপর মিরাজ সঙ্গী হিসেবে পান নাঈম হাসানকে। নবম উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ৫৭ রান। তবে নাঈম ২৪ রানে ফিরে যান। এতে মিরাজের সেঞ্চুরি হুমকির মুখে পড়ে যায়! কেননা শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে বাকি ছিলেন কেবল মোস্তাফিজুর রহমান। তবে এই পেসারের সঙ্গ পেয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন মিরাজ। ক্যারিবিয়ানদের সবচেয়ে সফল বোলার ওয়ারিকান। ৪৮ ওভারে ১৩৩ রান দিয়ে এই স্পিনারের শিকার ৪ উইকেট। ২ উইকেট নিয়েছেন কর্নওয়াল। আর একটি করে শিকার কেমার রোচ, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ও এনক্রুমা বনারের।