০২:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪

বাজেটের বড় চ্যালেঞ্জ রাজস্ব আয়

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হচ্ছে, সেটিকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। আসছে বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার; যা চলতি বাজেটের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা বেশি।

চলতি অর্থবছরে রাজস্ব খাতে বাজেটের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাই অর্জিত হচ্ছে না, এর মধ্যেই আরও বড় রাজস্ব বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। প্রতিবছর এনবিআরকে বড় লক্ষ্যমাত্রা দিলেও অর্থবছর শেষে এর একটি অংশ অপূর্ণই থেকে যায়।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল এনবিআরকে। এত বড় লক্ষ্যমাত্রায় এনবিআরের অসম্মতি থাকলে ২০ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি নির্ধারণ করে দেয়। তবে লক্ষ্যমাত্রা থেকে এখনও অনেক দূরে অবস্থান করছে প্রতিষ্ঠানটি।

সিপিডির তথ্যমতে, চলতি (২০২৩-২৪) অর্থবছর শেষে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব ঘাটতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। অর্থবছর শেষে ঘাটতি পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৮২ হাজার কোটি টাকা।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৬১ শতাংশ হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। গত ১০ মাসে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ধরেই রাজস্ব ঘাটতি ২৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। মূল লক্ষ্যমাত্রা হিসাব করলে তা ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকা। এ সময়ের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ১৩ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে রাজস্ব আদায়ের মধ্যে শুল্ক খাতে আদায় হয়েছে ৮২ হাজার ৫২২ কোটি ২৮ লাখ টাকা; প্রবৃদ্ধি ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ। মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট খাতে আদায় ১ লাখ ১৩ হাজার ৭০৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা; প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। আয়কর আদায় ৯৩ হাজার ১৪৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা; প্রবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। দেখা যাচ্ছে, প্রবৃদ্ধি ভালো কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম।

এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘প্রতিবার যখন বাজেট টার্গেট দেওয়া হয়, তখন এনবিআরের আসল অসহায়ত্বটা প্রকাশ পায়। সক্ষমতা হিসাব না করে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে টার্গেট দেওয়া হয়, বলা হয় এই টার্গেটটা পূরণ করতে হবে। এই টার্গেটের সঙ্গে মিল রেখে অন্যান্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। ইনোভেটিভ কোনো চিন্তা, রিফর্মের কোনো চিন্তা; কোনো কিছু করার সুযোগ থাকে না। আমাদের শুধু ওই টার্গেটের পেছনে ছুটতে হয়। আবার ওই টার্গেট ঠিক করা হয় আগের বছরের টার্গেটের সঙ্গে পার্সেন্টেজ (শতাংশ) ধরে, রিভাইজড টার্গেট বিবেচনায় নেওয়া হয় না।

পর্যালোচনা বলছে, অর্থনীতির নানান সংকটের মধ্যেও নতুন অর্থবছরের জন্য আরও বড় লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অর্থবছর শেষে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা থেকেও বড় অঙ্কের রাজস্ব ঘাটতি থাকবে। চলতি বাজেটেও ২০ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে। তারপরও কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আয় হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ প্রস্তাবিত বাজেটের অকার হবে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকবে বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এরই মধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)।

বিজনেস বাংলাদেশ/একে

লে.কর্নেল মুনীম ফেরদৌস হলেন র‍্যাবের নতুন মুখপাত্র

বাজেটের বড় চ্যালেঞ্জ রাজস্ব আয়

প্রকাশিত : ০২:২৫:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুন ২০২৪

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হচ্ছে, সেটিকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। আসছে বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার; যা চলতি বাজেটের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা বেশি।

চলতি অর্থবছরে রাজস্ব খাতে বাজেটের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাই অর্জিত হচ্ছে না, এর মধ্যেই আরও বড় রাজস্ব বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। প্রতিবছর এনবিআরকে বড় লক্ষ্যমাত্রা দিলেও অর্থবছর শেষে এর একটি অংশ অপূর্ণই থেকে যায়।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল এনবিআরকে। এত বড় লক্ষ্যমাত্রায় এনবিআরের অসম্মতি থাকলে ২০ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি নির্ধারণ করে দেয়। তবে লক্ষ্যমাত্রা থেকে এখনও অনেক দূরে অবস্থান করছে প্রতিষ্ঠানটি।

সিপিডির তথ্যমতে, চলতি (২০২৩-২৪) অর্থবছর শেষে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব ঘাটতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। অর্থবছর শেষে ঘাটতি পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৮২ হাজার কোটি টাকা।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৬১ শতাংশ হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। গত ১০ মাসে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ধরেই রাজস্ব ঘাটতি ২৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। মূল লক্ষ্যমাত্রা হিসাব করলে তা ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকা। এ সময়ের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ১৩ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে রাজস্ব আদায়ের মধ্যে শুল্ক খাতে আদায় হয়েছে ৮২ হাজার ৫২২ কোটি ২৮ লাখ টাকা; প্রবৃদ্ধি ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ। মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট খাতে আদায় ১ লাখ ১৩ হাজার ৭০৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা; প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। আয়কর আদায় ৯৩ হাজার ১৪৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা; প্রবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। দেখা যাচ্ছে, প্রবৃদ্ধি ভালো কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম।

এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘প্রতিবার যখন বাজেট টার্গেট দেওয়া হয়, তখন এনবিআরের আসল অসহায়ত্বটা প্রকাশ পায়। সক্ষমতা হিসাব না করে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে টার্গেট দেওয়া হয়, বলা হয় এই টার্গেটটা পূরণ করতে হবে। এই টার্গেটের সঙ্গে মিল রেখে অন্যান্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। ইনোভেটিভ কোনো চিন্তা, রিফর্মের কোনো চিন্তা; কোনো কিছু করার সুযোগ থাকে না। আমাদের শুধু ওই টার্গেটের পেছনে ছুটতে হয়। আবার ওই টার্গেট ঠিক করা হয় আগের বছরের টার্গেটের সঙ্গে পার্সেন্টেজ (শতাংশ) ধরে, রিভাইজড টার্গেট বিবেচনায় নেওয়া হয় না।

পর্যালোচনা বলছে, অর্থনীতির নানান সংকটের মধ্যেও নতুন অর্থবছরের জন্য আরও বড় লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অর্থবছর শেষে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা থেকেও বড় অঙ্কের রাজস্ব ঘাটতি থাকবে। চলতি বাজেটেও ২০ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে। তারপরও কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আয় হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ প্রস্তাবিত বাজেটের অকার হবে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকবে বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এরই মধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)।

বিজনেস বাংলাদেশ/একে