০৪:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

বাঁশপণ্য বিক্রির টাকায় ছেলে ইঞ্জিনিয়ার

জেলার মিরপুর রেলওয়ে স্টেশনের এলাকার বাসিন্দা নাগিনা রানী বেদ। স্বামী, ছেলে আর এক মেয়ে নিয়ে ছোট একটি সংসার। নিজে কোন দিন স্কুলে না গেলেও ছেলে-মেয়েকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে চেষ্টা করছেন। কঠোর পরিশ্রম করে চলেছেন দিনরাত।

কথা হয় নাগিনা রানী বেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা তো গরীব মানুষ। তার উপরে বেদ। সমাজে আমাদের অবস্থান নিচু। সকলের সঙ্গে মিশতেও পারি না। প্রায় সব ক্ষেত্রেই একটা অবহেলা। বাঁশের ঝুড়ি, কুলা তৈরি করে সংসার চালাই।

তিনি বলেন, আমি বাঁশের তৈরি ডালা, শরপশ (ঢাকনা), ফুলদানী, কুলা, কলমদানী, ঝুঁড়ি, ঝাঁকাসহ বিভিন্ন সাংসারিক ব্যবহারের জিনিসপত্র তৈরি করি। আমি তৈরি করি আর স্বামী তা বাজারে বিক্রি করে। নিজে লেখাপড়া করার মতো সুযোগ পাইনি। সংসারটা কষ্ট করে চালায় এর মধ্যে ছেলেকে মেকানিক ইঞ্জিনিয়ার করেছি। এখন বিএসসি পড়াচ্ছি। সেই সঙ্গে মেয়েকেও হাই স্কুলে ভর্তি করেছি।

নাগিনা রানির স্বামী সুকুমার বেদ বলেন, একা কাজ করে সংসার চালানো খুবই কষ্ট। আমরা অন্য কাজ ভালো পারি না। আমি বাঁশ কিনে এনে দেই আর নাগিনা সেটা দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে। প্রতি মঙ্গলবার মিরপুর হাটে সেটা বিক্রি করি।

তিনি আরো বলেন, বাঁশের তৈরি বিভিন্ন ঝুঁড়ি, কুলা, ফুলদানী, ডালা গড়ে ২৫ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকা পর্যন্ত হয়। হাটের চেয়ে গ্রামে বাড়ি বাড়ি বিক্রি করতে গেলে একটু বেশি লাভ হয়। এগুলো তৈরিতে তবলা বাঁশ ব্যবহার করা হয়। তবে বাঁশ আর আগের মতো পাওয়া যায় না। আমাদের মতো প্রায় ৩০ জন এ কাজ করে। আমাদের মধ্যে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছে।

একই এলাকার আরেক নারী বলেন, আগের মতো আর ইনকাম হয় না। এক চালান বাঁশের কাজ করলে ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা হয়। সেটা করতে সময় লাগে ৮/১০ দিন। তবে পেটে ক্ষুদা থাকলে সেটা দ্রুতই হয়। আমাদের নারীরা এ কাজে আরো প্রশিক্ষণ পেলে ভালো করতে পারবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

বাঁশপণ্য বিক্রির টাকায় ছেলে ইঞ্জিনিয়ার

প্রকাশিত : ১২:৩৫:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২০

জেলার মিরপুর রেলওয়ে স্টেশনের এলাকার বাসিন্দা নাগিনা রানী বেদ। স্বামী, ছেলে আর এক মেয়ে নিয়ে ছোট একটি সংসার। নিজে কোন দিন স্কুলে না গেলেও ছেলে-মেয়েকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে চেষ্টা করছেন। কঠোর পরিশ্রম করে চলেছেন দিনরাত।

কথা হয় নাগিনা রানী বেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা তো গরীব মানুষ। তার উপরে বেদ। সমাজে আমাদের অবস্থান নিচু। সকলের সঙ্গে মিশতেও পারি না। প্রায় সব ক্ষেত্রেই একটা অবহেলা। বাঁশের ঝুড়ি, কুলা তৈরি করে সংসার চালাই।

তিনি বলেন, আমি বাঁশের তৈরি ডালা, শরপশ (ঢাকনা), ফুলদানী, কুলা, কলমদানী, ঝুঁড়ি, ঝাঁকাসহ বিভিন্ন সাংসারিক ব্যবহারের জিনিসপত্র তৈরি করি। আমি তৈরি করি আর স্বামী তা বাজারে বিক্রি করে। নিজে লেখাপড়া করার মতো সুযোগ পাইনি। সংসারটা কষ্ট করে চালায় এর মধ্যে ছেলেকে মেকানিক ইঞ্জিনিয়ার করেছি। এখন বিএসসি পড়াচ্ছি। সেই সঙ্গে মেয়েকেও হাই স্কুলে ভর্তি করেছি।

নাগিনা রানির স্বামী সুকুমার বেদ বলেন, একা কাজ করে সংসার চালানো খুবই কষ্ট। আমরা অন্য কাজ ভালো পারি না। আমি বাঁশ কিনে এনে দেই আর নাগিনা সেটা দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে। প্রতি মঙ্গলবার মিরপুর হাটে সেটা বিক্রি করি।

তিনি আরো বলেন, বাঁশের তৈরি বিভিন্ন ঝুঁড়ি, কুলা, ফুলদানী, ডালা গড়ে ২৫ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকা পর্যন্ত হয়। হাটের চেয়ে গ্রামে বাড়ি বাড়ি বিক্রি করতে গেলে একটু বেশি লাভ হয়। এগুলো তৈরিতে তবলা বাঁশ ব্যবহার করা হয়। তবে বাঁশ আর আগের মতো পাওয়া যায় না। আমাদের মতো প্রায় ৩০ জন এ কাজ করে। আমাদের মধ্যে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছে।

একই এলাকার আরেক নারী বলেন, আগের মতো আর ইনকাম হয় না। এক চালান বাঁশের কাজ করলে ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা হয়। সেটা করতে সময় লাগে ৮/১০ দিন। তবে পেটে ক্ষুদা থাকলে সেটা দ্রুতই হয়। আমাদের নারীরা এ কাজে আরো প্রশিক্ষণ পেলে ভালো করতে পারবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ