নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালিকাপুর বাজারে আত্রাই নদের উপর দিয়ে নির্মিত একটি বাঁশের সেতু মান্দা, মহাদেবপুর ও নিয়ামতপুর উপজেলার মানুষ পারাপার হচ্ছে।
জনপ্রতিনিধির কাছে এলাকাবাসীর একটি সেতুর দাবি দীর্ঘ ৫০ বছরের হলেও তারা পেয়েছে বাঁশের সাঁকো। বছরের পর বছর এ সাঁকো দিয়ে দুর্ভোগ নিয়েই পারাপারের কাজ চালাচ্ছে তারা।
নওগাঁর মান্দা উপজেলার সদর ইউনিয়নের কালিকাপুর বাজার পয়েন্টে ওই বাঁশের সাঁকোটি দাঁড়িয়ে আছে। আক্তারুজ্জামান বুলবুল নামের এক ব্যক্তি খেয়াঘাট ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় ইজারা নিয়ে ৮০ হাজার টাকা খরচ করে বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করে চাঁদা আদায় করছেন।
ইজারাদার আক্তারুজ্জামান বুলবুল বলেন, এ ঘাট দিয়ে বর্ষায় পারাপারের জন্য কিছু দিন খেয়া নৌকা থাকে। শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত হয়। তখন আর নদে নৌকা চালানো সম্ভব না হওয়ায় চলাচলের স্বার্থে বাঁশের সাঁকোটি ব্যবহার করে এলাকাবাসী।
সাঁকোটি নির্মাণে প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হয়। খরচের টাকা তুলতে জনপ্রতি ৫ এবং প্রতিটি মোটরসাইকেলের জন্য ১০ টাকা করে নিতে হচ্ছে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নদ টির পূর্ব পাশে ১৫টি আর পশ্চিম পাশে ১৮টি গ্রাম রয়েছে। এসব এলাকার প্রায় ২৫-৩০ হাজার মানুষ তাদের উৎপাদিত ফসল নিয়ে বাঁশের ওই সাঁকোর ওপর দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে থাকে। এখানে স্থায়ীভাবে একটি সেতু নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
সফাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাসেম সংবাদকে বলেন, বর্ষায় খেয়া নৌকা আর শুকনায় বাঁশের সেতুর ওপর ভর করে চলছে এসব গ্রামবাসীর জীবনযাত্রা।
তিনি বলেন, নদ টিতে সেতু না হওয়ায় বর্ষাকালে খেয়া নৌকায় আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে শত শত ছাত্রছাত্রী চলাচল করে।
মান্দার বিশিষ্ট সমাজ সেবক অধ্যাপক ডাঃ এসএম ফজলুর রহমান বলেন, নদের পূর্ব পাশে রয়েছে গনেশপুর, সফাপুর ও মৈনম এবং পশ্চিম দিকে রয়েছে মান্দা সদর, পরানপুর ও ভালাইন ইউনিয়ন।
ওই এলাকার মানুষ আত্রাই নদী পার হয়ে জেলা শহর নওগাঁসহ জেলার অভ্যন্তরে মান্দা, মহাদেবপুর ও নিয়ামতপুর উপজেলাসহ নানা স্থানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। তা ছাড়া কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য পরিবহনেও বাড়ে ভোগান্তি।
বিশেষ করে ইরি-বোরো মৌসুমে কাটা ধান বহনকারী ভ্যান ও লছিমন পারাপার করতে না পেরে কাঁধে অথবা মাথায় করে পারাপার করতে হয়। ফলে চরম দুর্ভোগ দেখা দেয়।
তিনি বলেন, এলাকার মানুষের ভোগান্তি লাঘবের জন্য আত্রাই নদ টিতে একটি সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয়রা দীর্ঘ দিন যাবত মান্দার জনপ্রতিধি বরাবর দাবি জানিয়েছেন। বিভিন্ন সময় মাপজোক হলেও এ পর্যন্ত তা বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেই।
মান্দা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) শাহ মোঃ শহিদুল ইসলাম দৈনিক সংবাদকে জানান, কালিকাপুর ঘাটে পাকা সেতু নির্মানের কোনো প্রকার কর্ম পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত আসেনি।
বিজনেস বাংলাদেশ/ইমরান