০৪:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

করোনায় ক্যাম্পাস নেতাদের নেতৃত্ব

মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে থমকে আছে বিশ্ব। অসহায়ত্ব দানা বেঁধেছে দরিদ্র্যদের পরিবারে। সকলের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন পরিবারের কর্তা। বিশ্বের সু-পরিচিত তারকা, রাষ্ট্রপ্রধানসহ অনেকের চোখে মুখে অসহায়ত্বের ছাপ। এমনই ক্রান্তিলগ্নে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ কেমন দিন কাটাচ্ছেন? করোনাকালে সংগঠনের শীর্ষ পদে থেকে সংগঠন নিয়ে কি ভাবছেন ও কিভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এসব নিয়ে লিখেছেন মাহমুদুল হাসান কবীর।     

 

সরকারি অনুদান বিতরণে মনিটরিং টিম গঠন করেছি

রবিউল ইসলাম পলাশ

সভাপতি, ছাত্রলীগ, ইবি শাখা

করোনা মোকাবেলায় জরুরী খাদ্য ও নিরাপত্তা সেলের মাধ্যমে কুড়িগ্রামে প্রায় ২ হাজারটি পরিবারকে তিনদিনের খাবার, ওষুধ ও সাবান দিয়েছি। সাত দিনব্যাপী স্প্রে অভিযান চালিয়েছি। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের ভিতরে, বাজারে, মসজিদসহ বিভিন্ন জায়গায়। মসজিদগুলোতে পরিষ্কারক দ্রব্য প্রদান করেছি। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনকে নিয়ে মাস্ক বিতরণ, সচেতনতা তৈরি, মাইকিং প্রভৃতি করেছি। সরকারী অনুদান যেন ঠিকভাবে জনগনের কাছে পৌঁছায় এজন্য স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নিয়ে মনিটরিং টিম করেছি যাতে বিতরণে কেউ দুর্নীতি করতে না পারে। এসব প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

সবাইকে বই পড়তে
উৎসাহিত করছি

আব্দুর রউফ
সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, ইবি

বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সর্বদা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে সংগ্রাম করে আসছে। ক্যাম্পাস চলাকালীন সময়ে নানা কর্মসূচিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। করোনাকালীন সময়ে আমরা ইবি শাখার নেতৃবৃন্দ চেষ্টা করেছি সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে কথা বলার। যেমন আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ছাত্র কল্যাণ তহবিল থেকে প্রকৃত অসহায় ছাত্র-ছাত্রীদের সহযোগীতা করা, শিক্ষার্থীদের মেস বা বাসা ভাড়া কমানোর দাবিতে সংবাদ বিবৃতি দিয়েছি। সর্বদা চেষ্টা করছি মানুষকে সচেতন করার। আর যতটুকু সামর্থ আছে সেই অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর।

 

মায়েদের দোরগোড়ায় গিয়ে সচেতন করতে পারছি না

রিয়াদুস সালেহীন
সভাপতি, ক্যাপ, কুষ্টিয়া

ক্যানসার এ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম ফর উইমেন (ক্যাপ) কুষ্টিয়া জোনের সকল সেচ্ছাসেবীগণ কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী। তাই  লকডাউনে আপাতত নিজ নিজ এলাকায় স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কুষ্টিয়া লকডাউন করার পূর্বে আমরা কুষ্টিয়া শহরে প্রায় দুই হাজার করোনা সচেতনতামূলক লিফলেট এবং চার’শ মাস্ক বিতরণ করি। এছাড়া বর্তমানে ঢাকা এবং কুষ্টিয়ায় ২০০ পরিবারকে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণের প্রস্তুতি চলছে। আগামী কয়েকদিন বস্তির ১০০ পরিবারকে ইফতার করানো হবে। এছাড়াও ক্যাপের স্বেচ্ছাসেবীরা নিজ নিজ এলাকায় কাজ করে চলেছে। নওগাঁ ও রংপুরে দুই হাজার লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।
দেশের এই মহা দুর্যোগের সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এবং চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা মায়েদের দোরগোড়ায় গিয়ে তাদের সচেতনতার জন্য কাজ করতে পারছি না। কিন্তু আমরা আমাদের আশেপাশের অসহায় মানুষদের সহায়তায় কাজ করে যাচ্ছি এবং দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে যেকোন সংকটকালীন মুহূর্তে আমাদের এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।

অবসর সময়কে ভবিষ্যতের কাজের জন্য ব্যবহার করছি

জি কে সাদিক
সাধারণ সম্পাদ, ছাত্র ইউনিয়ন, ইবি

গোটা মানব সভ্যতা চরম ক্রান্তিকাল পার করছে। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রভাবে গোটা বিশ্ব থমকে গেছে। বিশ্ব তার স্বাভাবিক গতি হারিয়ে ফেলেছে। মানুষ ঘরবন্দী জীবন পার করছে। গত ১৮ মার্চ থেকে ক্যাম্পাস বন্ধের পরে বাড়িতেই আছি। লকডাউন মেনে চলতে চেষ্টা করছি। এখন ক্যাম্পাসের মতো আর পড়াশোনার চাপ বা রাজনৈতিক কাজ নেই। এই অবসর সময়টাকে ভবিষ্যতের কিছু কাজের জন্য ব্যবহার করছি। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাজনৈতিক সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করার ইচ্ছে আছে। বিশেষ করে দেশভাগ ও ‘৭১ নিয়ে আমার আগ্রহ বেশি। সেহেতু ১৯০৫ সালের পর থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস ও এই সময়ে রচিত সাহিত্য নিয়ে বেশি পড়াশোনা করছি। কারণ ১৯০৫ সালের পরই উপমহাদেশের রাজনৈতিক সমীকরণ পাল্টে যায়। অখণ্ড ভারত ভেঙে যায়, বাংলার মাঝে সীমানা প্রাচীর তৈরি হয়। যেহেতু আমি বাংলা বিভাগের ছাত্র এবং রাজনীতিও করছি তাই রাজনীতি এবং সাহিত্যকে মিলিয়ে পড়ছি। লেখকরা কখনও স্থানিক ও কালীক প্রবাহ এড়িয়ে চলতে পারে না। এই প্রবাহের অন্যতম একটা অংশ রাজনীতি। হাতের কাছে বেশি বই না থাকায় পিডিএফ ও অনলাইনে বিভিন্ন জার্নালের লেখার উপর নির্ভর করছি। ক্যাম্পাসে পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীবান্ধব নানা উদ্যোগ নিয়ে দলীয় কাজ করতাম। কিন্তু এখন সেটা বন্ধ। তবে এখনও অনেক সমস্যা আছে। যেমন মেস বা বাসা ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের একটা সংকট চলছে। সেটা নিয়ে কাজ করছি। গণ-তহবিল তুলে কিছু শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছি। অনলাইন ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। যা অনেকটাই শিক্ষার্থীবান্ধব উদ্যোগ নয়। এমন অনেক কাজ রয়েছে যেগুলো এখনও চলমান রয়েছে। এছাড়া গ্রামের বন্ধুদের নিয়ে কিছু কাজ করেছি। সামনে ঈদ উপলক্ষে গ্রামের দরিদ্র পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করছি। সবকিছুর পরেও একটা বাজে সময় পার করছি। মানুষের জীবন ক্রমে দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। সকলের মতো আমারও সুস্থ একটা সকালের অপেক্ষায়।

ক্যাম্পাস খুললে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে ক্যারিয়ার অলিম্পিয়াড

শেখ রাইয়ান উদ্দীন
সভাপতি, তারুণ্য, ইবি

বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে শনাক্ত হয় এ বছরের ৮ মার্চ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয় ১৮ই মার্চ থেকে। তখন থেকেই দেশের সকল শিক্ষার্থী প্রায় গৃহবন্দী। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “তারুণ্য” এর পক্ষ থেকে বর্তমান সময়ের অগ্রসৈনিক সকল চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, আর্মি, র‌্যাব এবং স্বেচ্ছাসেবীদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি এবং একই সাথে তাদের দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
আর যেসকল সাহসী বীর তাদের জীবন দিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। “তারুণ্য” ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি  অরাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী, জনকল্যাণমূলক সংগঠন। চারিদিকে স্বাভাবিক অবস্থা না থাকায় এখন আমাদের কর্মকান্ডও তার নিজস্ব গতিতে অগ্রসর হচ্ছে না। তাই বলে আমরা একেবারে থেমে নেই। এই লকডাউনের মধ্যে তারুণ্য’র সদস্যরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় সাধ্যমতো কাজ করছেন। নিজেদের পরিবার, প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজনদের সচেতন করছেন।
অনেকেই নিজ এলাকার অসহায়দের বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করছেন। “তারুণ্য” গত এপ্রিল মাসের ৫ তারিখ রংপুর জেলার  বদরগঞ্জে প্রায় ৪৫ টা নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী বিতরণ করে।
তারুণ্য’র সদস্যরা এই লকডাউনে বিভিন্ন শিল্প সাহিত্য সমৃদ্ধ বই পড়ছেন এবং নিয়মিত বই পর্যালোচনাও করে থাকছেন। আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সকল রক্তদাতাদের প্রতি যারা এই দুর্যোগ মুহূর্তেও রক্তদানের মতো মহৎ কাজ করছেন। এই দুর্যোগ কমে পরিবেশ পরিস্থিতি যখন আবার স্বাভাবিকের পর্যায়ে আসবে তখন ইনশাআল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর জন্য একটি “ক্যারিয়ার অলিম্পিয়াড” এ অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। সকলের কাছে অনুরোধ, আপনার সচেতন থাকুন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

 

বিজনেস বাংলাদেশ / আতিক

করোনায় ক্যাম্পাস নেতাদের নেতৃত্ব

প্রকাশিত : ০৬:২৩:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মে ২০২০

মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে থমকে আছে বিশ্ব। অসহায়ত্ব দানা বেঁধেছে দরিদ্র্যদের পরিবারে। সকলের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন পরিবারের কর্তা। বিশ্বের সু-পরিচিত তারকা, রাষ্ট্রপ্রধানসহ অনেকের চোখে মুখে অসহায়ত্বের ছাপ। এমনই ক্রান্তিলগ্নে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ কেমন দিন কাটাচ্ছেন? করোনাকালে সংগঠনের শীর্ষ পদে থেকে সংগঠন নিয়ে কি ভাবছেন ও কিভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এসব নিয়ে লিখেছেন মাহমুদুল হাসান কবীর।     

 

সরকারি অনুদান বিতরণে মনিটরিং টিম গঠন করেছি

রবিউল ইসলাম পলাশ

সভাপতি, ছাত্রলীগ, ইবি শাখা

করোনা মোকাবেলায় জরুরী খাদ্য ও নিরাপত্তা সেলের মাধ্যমে কুড়িগ্রামে প্রায় ২ হাজারটি পরিবারকে তিনদিনের খাবার, ওষুধ ও সাবান দিয়েছি। সাত দিনব্যাপী স্প্রে অভিযান চালিয়েছি। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের ভিতরে, বাজারে, মসজিদসহ বিভিন্ন জায়গায়। মসজিদগুলোতে পরিষ্কারক দ্রব্য প্রদান করেছি। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনকে নিয়ে মাস্ক বিতরণ, সচেতনতা তৈরি, মাইকিং প্রভৃতি করেছি। সরকারী অনুদান যেন ঠিকভাবে জনগনের কাছে পৌঁছায় এজন্য স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নিয়ে মনিটরিং টিম করেছি যাতে বিতরণে কেউ দুর্নীতি করতে না পারে। এসব প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

সবাইকে বই পড়তে
উৎসাহিত করছি

আব্দুর রউফ
সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, ইবি

বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সর্বদা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে সংগ্রাম করে আসছে। ক্যাম্পাস চলাকালীন সময়ে নানা কর্মসূচিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। করোনাকালীন সময়ে আমরা ইবি শাখার নেতৃবৃন্দ চেষ্টা করেছি সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে কথা বলার। যেমন আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ছাত্র কল্যাণ তহবিল থেকে প্রকৃত অসহায় ছাত্র-ছাত্রীদের সহযোগীতা করা, শিক্ষার্থীদের মেস বা বাসা ভাড়া কমানোর দাবিতে সংবাদ বিবৃতি দিয়েছি। সর্বদা চেষ্টা করছি মানুষকে সচেতন করার। আর যতটুকু সামর্থ আছে সেই অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর।

 

মায়েদের দোরগোড়ায় গিয়ে সচেতন করতে পারছি না

রিয়াদুস সালেহীন
সভাপতি, ক্যাপ, কুষ্টিয়া

ক্যানসার এ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম ফর উইমেন (ক্যাপ) কুষ্টিয়া জোনের সকল সেচ্ছাসেবীগণ কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী। তাই  লকডাউনে আপাতত নিজ নিজ এলাকায় স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কুষ্টিয়া লকডাউন করার পূর্বে আমরা কুষ্টিয়া শহরে প্রায় দুই হাজার করোনা সচেতনতামূলক লিফলেট এবং চার’শ মাস্ক বিতরণ করি। এছাড়া বর্তমানে ঢাকা এবং কুষ্টিয়ায় ২০০ পরিবারকে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণের প্রস্তুতি চলছে। আগামী কয়েকদিন বস্তির ১০০ পরিবারকে ইফতার করানো হবে। এছাড়াও ক্যাপের স্বেচ্ছাসেবীরা নিজ নিজ এলাকায় কাজ করে চলেছে। নওগাঁ ও রংপুরে দুই হাজার লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।
দেশের এই মহা দুর্যোগের সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এবং চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা মায়েদের দোরগোড়ায় গিয়ে তাদের সচেতনতার জন্য কাজ করতে পারছি না। কিন্তু আমরা আমাদের আশেপাশের অসহায় মানুষদের সহায়তায় কাজ করে যাচ্ছি এবং দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে যেকোন সংকটকালীন মুহূর্তে আমাদের এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।

অবসর সময়কে ভবিষ্যতের কাজের জন্য ব্যবহার করছি

জি কে সাদিক
সাধারণ সম্পাদ, ছাত্র ইউনিয়ন, ইবি

গোটা মানব সভ্যতা চরম ক্রান্তিকাল পার করছে। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রভাবে গোটা বিশ্ব থমকে গেছে। বিশ্ব তার স্বাভাবিক গতি হারিয়ে ফেলেছে। মানুষ ঘরবন্দী জীবন পার করছে। গত ১৮ মার্চ থেকে ক্যাম্পাস বন্ধের পরে বাড়িতেই আছি। লকডাউন মেনে চলতে চেষ্টা করছি। এখন ক্যাম্পাসের মতো আর পড়াশোনার চাপ বা রাজনৈতিক কাজ নেই। এই অবসর সময়টাকে ভবিষ্যতের কিছু কাজের জন্য ব্যবহার করছি। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাজনৈতিক সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করার ইচ্ছে আছে। বিশেষ করে দেশভাগ ও ‘৭১ নিয়ে আমার আগ্রহ বেশি। সেহেতু ১৯০৫ সালের পর থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস ও এই সময়ে রচিত সাহিত্য নিয়ে বেশি পড়াশোনা করছি। কারণ ১৯০৫ সালের পরই উপমহাদেশের রাজনৈতিক সমীকরণ পাল্টে যায়। অখণ্ড ভারত ভেঙে যায়, বাংলার মাঝে সীমানা প্রাচীর তৈরি হয়। যেহেতু আমি বাংলা বিভাগের ছাত্র এবং রাজনীতিও করছি তাই রাজনীতি এবং সাহিত্যকে মিলিয়ে পড়ছি। লেখকরা কখনও স্থানিক ও কালীক প্রবাহ এড়িয়ে চলতে পারে না। এই প্রবাহের অন্যতম একটা অংশ রাজনীতি। হাতের কাছে বেশি বই না থাকায় পিডিএফ ও অনলাইনে বিভিন্ন জার্নালের লেখার উপর নির্ভর করছি। ক্যাম্পাসে পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীবান্ধব নানা উদ্যোগ নিয়ে দলীয় কাজ করতাম। কিন্তু এখন সেটা বন্ধ। তবে এখনও অনেক সমস্যা আছে। যেমন মেস বা বাসা ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের একটা সংকট চলছে। সেটা নিয়ে কাজ করছি। গণ-তহবিল তুলে কিছু শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছি। অনলাইন ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। যা অনেকটাই শিক্ষার্থীবান্ধব উদ্যোগ নয়। এমন অনেক কাজ রয়েছে যেগুলো এখনও চলমান রয়েছে। এছাড়া গ্রামের বন্ধুদের নিয়ে কিছু কাজ করেছি। সামনে ঈদ উপলক্ষে গ্রামের দরিদ্র পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করছি। সবকিছুর পরেও একটা বাজে সময় পার করছি। মানুষের জীবন ক্রমে দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। সকলের মতো আমারও সুস্থ একটা সকালের অপেক্ষায়।

ক্যাম্পাস খুললে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে ক্যারিয়ার অলিম্পিয়াড

শেখ রাইয়ান উদ্দীন
সভাপতি, তারুণ্য, ইবি

বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে শনাক্ত হয় এ বছরের ৮ মার্চ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয় ১৮ই মার্চ থেকে। তখন থেকেই দেশের সকল শিক্ষার্থী প্রায় গৃহবন্দী। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “তারুণ্য” এর পক্ষ থেকে বর্তমান সময়ের অগ্রসৈনিক সকল চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, আর্মি, র‌্যাব এবং স্বেচ্ছাসেবীদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি এবং একই সাথে তাদের দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
আর যেসকল সাহসী বীর তাদের জীবন দিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। “তারুণ্য” ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি  অরাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী, জনকল্যাণমূলক সংগঠন। চারিদিকে স্বাভাবিক অবস্থা না থাকায় এখন আমাদের কর্মকান্ডও তার নিজস্ব গতিতে অগ্রসর হচ্ছে না। তাই বলে আমরা একেবারে থেমে নেই। এই লকডাউনের মধ্যে তারুণ্য’র সদস্যরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় সাধ্যমতো কাজ করছেন। নিজেদের পরিবার, প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজনদের সচেতন করছেন।
অনেকেই নিজ এলাকার অসহায়দের বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করছেন। “তারুণ্য” গত এপ্রিল মাসের ৫ তারিখ রংপুর জেলার  বদরগঞ্জে প্রায় ৪৫ টা নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী বিতরণ করে।
তারুণ্য’র সদস্যরা এই লকডাউনে বিভিন্ন শিল্প সাহিত্য সমৃদ্ধ বই পড়ছেন এবং নিয়মিত বই পর্যালোচনাও করে থাকছেন। আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সকল রক্তদাতাদের প্রতি যারা এই দুর্যোগ মুহূর্তেও রক্তদানের মতো মহৎ কাজ করছেন। এই দুর্যোগ কমে পরিবেশ পরিস্থিতি যখন আবার স্বাভাবিকের পর্যায়ে আসবে তখন ইনশাআল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর জন্য একটি “ক্যারিয়ার অলিম্পিয়াড” এ অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। সকলের কাছে অনুরোধ, আপনার সচেতন থাকুন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

 

বিজনেস বাংলাদেশ / আতিক