০৬:১৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪

লিবিয়ায় নির্মম মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত একজনকেও ছাড় নয়: আইজিপি

যারা আমাদের দেশের নাগরিকদের প্রতারণার মাধ্যমে বিদেশে নিয়েছে, যাদের কারণে এই নির্মম মৃত্যু ঘটেছে তাদের একজনকেও ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ।

রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মি‌ডিয়া এন্ড পিআর) মো.‌ সো‌হেল রানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে লিবিয়ায় গত ২৮ মে ২৬ বাংলাদেশি নাগরিকের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি অত্যন্ত মর্মান্তিক বলে উল্লেখ করেছেন ড. বেনজীর আহমেদ।

অপরাধীদের ধরা প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করে এই চক্রের প্রত্যেক সদস্যকে আইনী প্রক্রিয়ায় কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে, যেন ভবিষ্যতে কোনো বাংলাদেশিকে এভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে তার জীবন নিয়ে খেলার দুঃসাহস কোনো মানুষ দেখাতে না পারে। দেশে ও বিদেশে যেখানেই লুকিয়ে থাকুক না কেনো এদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করা হবে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১ জুন বিকেলে এ বিষয়ে আয়োজিত এক জরুরি ভিডিও কনফারেন্সে আইজিপি বলেন, লিবিয়ায় আমাদের দেশের মানুষকে যেভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। জরুরি এই ভিডিও কনফারেন্সে বাংলাদেশ পুলিশ সব ইউনিট প্রধানসহ পুলিশের সব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেছেন।

এ সময় পুলিশের মাঠ পর্যায়ের সব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, আমাদের দেশের মানুষকে এভাবে অসহায়ভাবে মৃত্যুবরণ করতে হবে, সেই অবস্থানে বাংলাদেশ এখন নেই।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্যাগী ও মোহনীয় নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আত্মমর্যাদায় বলীয়ান এক অন্য বাংলাদেশ। অর্থ উপার্জন ও জীবিকার জন্য দুর্গম ও অবৈধ পথে বিদেশের মাটিতে পাড়ি জমানোর কোনো কারণই নেই। এই বাংলাদেশ এখন মধ্য আয়ের একটি উন্নয়নশীল দেশ। অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছি আমরা।

আইজিপি বলেন, স্বজনদের যারা ভাই-বোন পিতা-মাতা হারা করেছে, তাদের কোনো ক্ষমা নেই। নেয়া হবে কঠোর আইনি ব্যবস্থা। স্বজনদের কান্নার দাগ শুকানোর আগেই এই অপরাধী চক্রকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কঠোর নির্দেশ দেন আইজিপি।

তিনি বলেন, ‘এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পর আমি দ্বিতীয়বার তোমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব, এর আগে নয়’।

এদিকে আইজিপির কঠোর নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে র‌্যাব, ডিএম‌পি, সিআইডি, পিবিআইসহ বাংলাদেশ পুলিশের মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সব ইউনিট একযোগে অভিযানে নামে। এরইমধ্যে এ বিষয়ে আজ পর্যন্ত মোট ২২ টি মামলা করা হয়েছে।আসামিদের চিহ্নিত করে আইজিপির নির্দেশে গ্রেফতারে নেয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ।

বাংলা‌দেশ পু‌লি‌শের বি‌ভিন্ন ইউ‌নিট এরইমধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করে‌ছে। সংশ্লিষ্ট অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অবৈধ প্রত্যেক মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে পুলিশের এই অভিযান চলমান থাকবে।

উল্লেখ্য, অবৈধভাবে বি‌দেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা সাধারণত বৈধ উপায়ে, বৈধ পাসপোর্টে, বৈধ ট্যুরিস্ট বা অন্য ভিসায় প্রথ‌মে ভারত বা অন্য কো‌নো দে‌শে যান। এসব ক্ষে‌ত্রে উপযুক্ত ও বৈধ ট্রাভেল ডকুমেন্ট প্রদর্শন করেই তারা বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। পরে দালাল ও পাচারকারীদের সহযোগিতায় ভারত বা সং‌শ্লিষ্ট দেশ থেকে নানা উপায়ে তারা লিবিয়া বা মধ্যপ্রা‌চ্যের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান।

বিজনেস বাংলাদেশ/ শেখ

জনপ্রিয়

লিবিয়ায় নির্মম মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত একজনকেও ছাড় নয়: আইজিপি

প্রকাশিত : ০৯:০৬:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জুন ২০২০

যারা আমাদের দেশের নাগরিকদের প্রতারণার মাধ্যমে বিদেশে নিয়েছে, যাদের কারণে এই নির্মম মৃত্যু ঘটেছে তাদের একজনকেও ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ।

রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মি‌ডিয়া এন্ড পিআর) মো.‌ সো‌হেল রানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে লিবিয়ায় গত ২৮ মে ২৬ বাংলাদেশি নাগরিকের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি অত্যন্ত মর্মান্তিক বলে উল্লেখ করেছেন ড. বেনজীর আহমেদ।

অপরাধীদের ধরা প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করে এই চক্রের প্রত্যেক সদস্যকে আইনী প্রক্রিয়ায় কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে, যেন ভবিষ্যতে কোনো বাংলাদেশিকে এভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে তার জীবন নিয়ে খেলার দুঃসাহস কোনো মানুষ দেখাতে না পারে। দেশে ও বিদেশে যেখানেই লুকিয়ে থাকুক না কেনো এদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করা হবে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১ জুন বিকেলে এ বিষয়ে আয়োজিত এক জরুরি ভিডিও কনফারেন্সে আইজিপি বলেন, লিবিয়ায় আমাদের দেশের মানুষকে যেভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। জরুরি এই ভিডিও কনফারেন্সে বাংলাদেশ পুলিশ সব ইউনিট প্রধানসহ পুলিশের সব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেছেন।

এ সময় পুলিশের মাঠ পর্যায়ের সব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, আমাদের দেশের মানুষকে এভাবে অসহায়ভাবে মৃত্যুবরণ করতে হবে, সেই অবস্থানে বাংলাদেশ এখন নেই।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্যাগী ও মোহনীয় নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আত্মমর্যাদায় বলীয়ান এক অন্য বাংলাদেশ। অর্থ উপার্জন ও জীবিকার জন্য দুর্গম ও অবৈধ পথে বিদেশের মাটিতে পাড়ি জমানোর কোনো কারণই নেই। এই বাংলাদেশ এখন মধ্য আয়ের একটি উন্নয়নশীল দেশ। অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছি আমরা।

আইজিপি বলেন, স্বজনদের যারা ভাই-বোন পিতা-মাতা হারা করেছে, তাদের কোনো ক্ষমা নেই। নেয়া হবে কঠোর আইনি ব্যবস্থা। স্বজনদের কান্নার দাগ শুকানোর আগেই এই অপরাধী চক্রকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কঠোর নির্দেশ দেন আইজিপি।

তিনি বলেন, ‘এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পর আমি দ্বিতীয়বার তোমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব, এর আগে নয়’।

এদিকে আইজিপির কঠোর নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে র‌্যাব, ডিএম‌পি, সিআইডি, পিবিআইসহ বাংলাদেশ পুলিশের মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সব ইউনিট একযোগে অভিযানে নামে। এরইমধ্যে এ বিষয়ে আজ পর্যন্ত মোট ২২ টি মামলা করা হয়েছে।আসামিদের চিহ্নিত করে আইজিপির নির্দেশে গ্রেফতারে নেয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ।

বাংলা‌দেশ পু‌লি‌শের বি‌ভিন্ন ইউ‌নিট এরইমধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করে‌ছে। সংশ্লিষ্ট অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অবৈধ প্রত্যেক মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে পুলিশের এই অভিযান চলমান থাকবে।

উল্লেখ্য, অবৈধভাবে বি‌দেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা সাধারণত বৈধ উপায়ে, বৈধ পাসপোর্টে, বৈধ ট্যুরিস্ট বা অন্য ভিসায় প্রথ‌মে ভারত বা অন্য কো‌নো দে‌শে যান। এসব ক্ষে‌ত্রে উপযুক্ত ও বৈধ ট্রাভেল ডকুমেন্ট প্রদর্শন করেই তারা বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। পরে দালাল ও পাচারকারীদের সহযোগিতায় ভারত বা সং‌শ্লিষ্ট দেশ থেকে নানা উপায়ে তারা লিবিয়া বা মধ্যপ্রা‌চ্যের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান।

বিজনেস বাংলাদেশ/ শেখ