০২:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪

৩৫ শতাংশ মানুষ করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার সংখ্যা বাড়ছে

করোনায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার সংখ্যা বাড়ছে বরিশাল বিভাগ জুরে। এখন পর্যন্ত এ বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার ৫৩৭ জন। তার মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক হাজার ২২৩। এই পরিসংখ্যান বলছে, বিভাগের ছয় জেলায় সুস্থতার হার (ডিসচার্জ রেট) ৩৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ। যা গত জুন মাসের মাঝামাঝি ছিল ২৫ দশমিক ১১ শতাংশ।

একই সময় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ৭৭ জন। আক্রান্ত, সুস্থ আর মারা যাবার পরিসংখ্যানগত দিক বিবেচনায় বিভাগীয় শহর বরিশাল শীর্ষে অবস্থান করছে।

শহরের ২৭ ওয়ার্ড রেড জোন ঘোষণা করা হলেও লকডাউনের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি প্রশাসন।বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ৩ হাজার ৫৩৭ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া বিভাগটিতে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ২২৩ জন এবং মারা গেছেন ৭৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ১১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। গেলো ২৪ ঘণ্টায় ছয় জেলায় ৬৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস বলেন,বিভাগের মধ্যে এ পর্যন্ত এক হাজার ২২৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন।এদের মধ্যে বরিশালে ৪৯২ জন, পটুয়াখালী ১৩৪, পিরোজপুর ১৬২, ভোলায় ১৪১, বরগুনায় ১৬৯ এবং ঝালকাঠীতে ১২৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন।এ ছাড়া বিভাগের বিভিন্ন জেলায় হাসপাতালে (প্রতিষ্ঠানিক) কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৩ হাজার ২৬০ জন। আর এ পর্যন্ত এক হাজার ৫৯১ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া ৩ হাজার ৫৩৭ জনের মধ্যে বরিশাল জেলায় এক হাজার ৭৫৭ জন, পটুয়াখালীতে ৫৪২ জন, ভোলায় ৩৪৫ জন, পিরোজপুরে ৩১০ জন, বরগুনায় ৩২০ ও ঝালকাঠিতে ২৬৩ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। বিভাগটিতে করোনায় মৃত ৭৭ জনের মধ্যে বরিশাল নগরীসহ জেলায় ৩০ জন, পটুয়াখালীতে ২২ জন, ঝালকাঠিতে ১০ জন, পিরোজপুরে পাঁচজন, বরগুনায় পাঁচজন ও ভোলায় পাঁচজন রয়েছেন।

১১৯ জন মারা গেলেন করোনা ওয়ার্ডে

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ১১৯ জনের মৃত্যু ঘটেছে। যাদের সকলেই করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। মারা যাবার পর মাত্র ৪৫ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। আর করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৭৪ জন। তবে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালসহ বিভাগের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসাপ্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৪৭৯ জন। এর মধ্যে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ৯৬৭ জনকে।

চলতি বছরের ২৯ মার্চ সরকারি উদ্যোগে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুরু হয় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা। প্রথম দিকে এখানে রোগী ভর্তির হার কম থাকলেও সম্প্রতি রোগী ভর্তির হার এক লাফে বেড়ে গিয়েছে অনেকটা। ৩০ জুন পাওযা খবর অনুসারে, ১৩০ শষ্যার করোনা ওয়ার্ডে ১২৭ জন করোনা আক্রান্ত ভর্তি রয়েছেন। যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। অবশ্য রোগী সংখ্যা বাড়লেও হাসপাতালে একসঙ্গে ২০০ জন রোগীর চিকিৎসা করার মতো শষ্য রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তারা বলছেন, হাসপাতালের ১৩০টির বাইরেও আরো শয্যা প্রস্তুত রাখা আছে।

প্রায় তিন’মাস ধরে শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে। হাসপাতালের একটি পৃথক ভবনে করোনা ইউনিট করে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ১৩০ শয্যা বিশিষ্ট এই করোনা ওয়ার্ডে একসঙ্গে ১২৭ জন করোনা আক্রান্ত চিকিৎসাধীন বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। যেভাবে করোনা সংক্রমণে হার বেড়েছে, তাতে সাধারণ মানুষ থেকে চিকিৎসকেরাও উদ্বিগ্ন। তাই দূরে থেকে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এস এম বাকির হোসেন বলেন, ৫০০ শষ্যার হাসপাতালে করোনার আগে গড়ে দুই হাজারের বেশি রোগী ভর্তি থাকত। তখন প্রতিদিন ১৬ জনের মৃত্যু ঘটত। এখন সবমিলে ৫০০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি নেই। করোনার ভয়ে রোগীরা হাসপাতালে আসছেন না। তার পরেও গড়ে হাসপাতালে ১৪ জনের মৃত্যু হচ্ছে।

কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এস এম বাকির হোসেন বলেন, করোনার উপসর্গ ছাড়াও হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, কিডনি, লিভারজনিত নানা রোগে আক্রান্ত রোগীও ওই ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আগে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালের নির্ধারিত ওয়ার্ডে ভর্তি করা হতো। সেখানে নির্ধারিত রোগের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সেবা দিতেন। কিন্তু করোনা ইউনিটে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেভাবে নেই। কিছু রোগীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে এটিও একটি কারণ হতে পারে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ প্রান্ত

জনপ্রিয়

৩৫ শতাংশ মানুষ করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার সংখ্যা বাড়ছে

প্রকাশিত : ০৪:৪৮:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই ২০২০

করোনায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার সংখ্যা বাড়ছে বরিশাল বিভাগ জুরে। এখন পর্যন্ত এ বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার ৫৩৭ জন। তার মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক হাজার ২২৩। এই পরিসংখ্যান বলছে, বিভাগের ছয় জেলায় সুস্থতার হার (ডিসচার্জ রেট) ৩৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ। যা গত জুন মাসের মাঝামাঝি ছিল ২৫ দশমিক ১১ শতাংশ।

একই সময় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ৭৭ জন। আক্রান্ত, সুস্থ আর মারা যাবার পরিসংখ্যানগত দিক বিবেচনায় বিভাগীয় শহর বরিশাল শীর্ষে অবস্থান করছে।

শহরের ২৭ ওয়ার্ড রেড জোন ঘোষণা করা হলেও লকডাউনের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি প্রশাসন।বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ৩ হাজার ৫৩৭ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া বিভাগটিতে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ২২৩ জন এবং মারা গেছেন ৭৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ১১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। গেলো ২৪ ঘণ্টায় ছয় জেলায় ৬৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস বলেন,বিভাগের মধ্যে এ পর্যন্ত এক হাজার ২২৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন।এদের মধ্যে বরিশালে ৪৯২ জন, পটুয়াখালী ১৩৪, পিরোজপুর ১৬২, ভোলায় ১৪১, বরগুনায় ১৬৯ এবং ঝালকাঠীতে ১২৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন।এ ছাড়া বিভাগের বিভিন্ন জেলায় হাসপাতালে (প্রতিষ্ঠানিক) কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৩ হাজার ২৬০ জন। আর এ পর্যন্ত এক হাজার ৫৯১ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া ৩ হাজার ৫৩৭ জনের মধ্যে বরিশাল জেলায় এক হাজার ৭৫৭ জন, পটুয়াখালীতে ৫৪২ জন, ভোলায় ৩৪৫ জন, পিরোজপুরে ৩১০ জন, বরগুনায় ৩২০ ও ঝালকাঠিতে ২৬৩ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। বিভাগটিতে করোনায় মৃত ৭৭ জনের মধ্যে বরিশাল নগরীসহ জেলায় ৩০ জন, পটুয়াখালীতে ২২ জন, ঝালকাঠিতে ১০ জন, পিরোজপুরে পাঁচজন, বরগুনায় পাঁচজন ও ভোলায় পাঁচজন রয়েছেন।

১১৯ জন মারা গেলেন করোনা ওয়ার্ডে

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ১১৯ জনের মৃত্যু ঘটেছে। যাদের সকলেই করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। মারা যাবার পর মাত্র ৪৫ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। আর করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৭৪ জন। তবে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালসহ বিভাগের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসাপ্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৪৭৯ জন। এর মধ্যে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ৯৬৭ জনকে।

চলতি বছরের ২৯ মার্চ সরকারি উদ্যোগে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুরু হয় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা। প্রথম দিকে এখানে রোগী ভর্তির হার কম থাকলেও সম্প্রতি রোগী ভর্তির হার এক লাফে বেড়ে গিয়েছে অনেকটা। ৩০ জুন পাওযা খবর অনুসারে, ১৩০ শষ্যার করোনা ওয়ার্ডে ১২৭ জন করোনা আক্রান্ত ভর্তি রয়েছেন। যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। অবশ্য রোগী সংখ্যা বাড়লেও হাসপাতালে একসঙ্গে ২০০ জন রোগীর চিকিৎসা করার মতো শষ্য রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তারা বলছেন, হাসপাতালের ১৩০টির বাইরেও আরো শয্যা প্রস্তুত রাখা আছে।

প্রায় তিন’মাস ধরে শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে। হাসপাতালের একটি পৃথক ভবনে করোনা ইউনিট করে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ১৩০ শয্যা বিশিষ্ট এই করোনা ওয়ার্ডে একসঙ্গে ১২৭ জন করোনা আক্রান্ত চিকিৎসাধীন বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। যেভাবে করোনা সংক্রমণে হার বেড়েছে, তাতে সাধারণ মানুষ থেকে চিকিৎসকেরাও উদ্বিগ্ন। তাই দূরে থেকে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এস এম বাকির হোসেন বলেন, ৫০০ শষ্যার হাসপাতালে করোনার আগে গড়ে দুই হাজারের বেশি রোগী ভর্তি থাকত। তখন প্রতিদিন ১৬ জনের মৃত্যু ঘটত। এখন সবমিলে ৫০০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি নেই। করোনার ভয়ে রোগীরা হাসপাতালে আসছেন না। তার পরেও গড়ে হাসপাতালে ১৪ জনের মৃত্যু হচ্ছে।

কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এস এম বাকির হোসেন বলেন, করোনার উপসর্গ ছাড়াও হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, কিডনি, লিভারজনিত নানা রোগে আক্রান্ত রোগীও ওই ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আগে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালের নির্ধারিত ওয়ার্ডে ভর্তি করা হতো। সেখানে নির্ধারিত রোগের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সেবা দিতেন। কিন্তু করোনা ইউনিটে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেভাবে নেই। কিছু রোগীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে এটিও একটি কারণ হতে পারে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ প্রান্ত