১২:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে

শরীয়তপুরের এসপি এস.এম আশরাফুজ্জামান

শরীয়তপুর জেলার অধিকাংশ পরিবারের কেউ না কেউ প্রবাসী। বিশেষ করে নড়িয়া উপজেলার প্রবাসী বেশি। এদের অধিকাংশই ইতালি, স্পেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকে। তাই এজেলার করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক ছিলো দেশের অন্যান্য জেলার থেকে অনেক বেশি। আর রাজধানীর ঢাকার নিকটবর্তী হওয়ায়ও করোনা সংক্রমণেরও ভয় ছিলো বেশি। গত ৭ জুলাই পর্যন্ত এ জেলায় আক্রান্ত হয়েছে ৭৩৬ জন, সুস্থ্য হয়েছে ৩৯৭ জন ও মারা গেছে ৬ জন। এদের মধ্যে পুলিশ এই আক্রান্ত হয়েছে ৮৭জন। দেশে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে এর প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার এস.এম আশরাফুজ্জামানের নেতৃত্বে করোনা মোকাবিলায় নানামূখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে জেলা পুলিশ। পাশাপাশি করোনা আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন করছে। এছাড়াও ত্রাণ বিতরণও অব্যাহত রেখেছে।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মার্চের শুরু থেকেই শরীয়তপুরের এসপি এস.এম আশরাফুজ্জামাননের নেতৃত্বে জেলা পুলিশ জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৮০ হাজার পিস মাস্ক বিতরণ করেছে। আর লিফলেট ও হ্যান্ডবিল বিতরণ, মাইকিং, সড়কের যানবাহন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রচারাভিযান এবং নিয়মিত জনসচেতনতামূলক সংগীত পরিবেশন, শর্ট ফ্লিম তৈরি করে স্থানীয় ক্যাবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছে। জেলার বিভিন্ন হাট বাজার ও সড়কে জেলা পুলিশের উদ্যোগে কিটনাশক ছিটানো হয়েছে। এছাড়াও আইসোলেশনে থাকা মৃত ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন করে স্বস্ব থানার পুলিশ।

অন্যদিকে জেলা পুলিশের উদ্যোগে ৬ উপজেলার অটোরিক্সা-সিএনজি চালক, তালিকাভূক্ত অসহায় দরিদ্র, ভিক্ষুক, বেঁদে, তৃতীয় লিঙ্গ, নাপিত, মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও সংবাদ প্রাপ্তি সাপেক্ষে দুস্থ ও অসহায়দের মধ্যে সাধ্যমত আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। মোট ৬ হাজার পিচ হ্যান্ড স্যানেটাইজেশন, ৮ হাজার পিচ মাস্ক, ৮ হাজার পিচ হ্যান্ড গ্লোবস এবং ৮ হাজার পিচ লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। পুরো জেলায় ৯টি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সকল থানার ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও পৌরসভা, পর্যায় পুলিশসহ জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়িতে স্টিকার লাগিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হচ্ছে। আর সামাজিকভাবে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে, আক্রান্ত কেউ যেন আত্মগোপনে না থাকে সে বিষয়েও প্রতিটি থানা সবসময় খোঁজ-খবর নিচ্ছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, যানবাহন চলাচল ও হোম কোয়ারেন্টাইন না মানলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গণজমায়েত ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার লক্ষ্যে মসজিদসহ জনগণের মধ্যে প্রচারণা করা হয়েছে। বিষয়টি সার্বক্ষণিক মনিটরিং এর জন্য প্রতিটি মসজিদে ডিউটি বন্টন করে পুলিশি নজরদারী রাখা হয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি ব্যতিত মসজিদে গমণ প্রতিরোধে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। জনগণ যাতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার আদেশ অমান্য করে প্রকাশ্যস্থানে ঘোরাফেরা করতে না পারে সে জন্য সার্বক্ষণিক পুলিশি টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কোথাও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সন্দেহ হলে তাকে দ্রুত চিকিৎসা ও আইসোলেশনের ব্যবস্থাসহ আশপাশের বাড়ি লকডাউনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গুজব রোধে ব্যাপক প্রচারণার ব্যবস্থা করা হয়েছে ও কেউ যাতে গুজব রটাতে না পারে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার এস.এম আশরাফুজ্জামান বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই শরীয়তপুরের পুলিশ সদস্যরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এসব কার্যক্রম করতে গিয়ে আমাদের অনেক সদস্যরা আক্রান্ত হচ্ছে। তারপরেও মনোবল চাঙ্গা রেখে করোনা মোকাবিলায় নানামূখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। তাই এ যুদ্ধে জয়ী হতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

জনপ্রিয়

প্রধান বিচারপতি হলেন জুবায়ের রহমান চৌধুরী

করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে

প্রকাশিত : ০৮:০২:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জুলাই ২০২০

শরীয়তপুর জেলার অধিকাংশ পরিবারের কেউ না কেউ প্রবাসী। বিশেষ করে নড়িয়া উপজেলার প্রবাসী বেশি। এদের অধিকাংশই ইতালি, স্পেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকে। তাই এজেলার করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক ছিলো দেশের অন্যান্য জেলার থেকে অনেক বেশি। আর রাজধানীর ঢাকার নিকটবর্তী হওয়ায়ও করোনা সংক্রমণেরও ভয় ছিলো বেশি। গত ৭ জুলাই পর্যন্ত এ জেলায় আক্রান্ত হয়েছে ৭৩৬ জন, সুস্থ্য হয়েছে ৩৯৭ জন ও মারা গেছে ৬ জন। এদের মধ্যে পুলিশ এই আক্রান্ত হয়েছে ৮৭জন। দেশে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে এর প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার এস.এম আশরাফুজ্জামানের নেতৃত্বে করোনা মোকাবিলায় নানামূখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে জেলা পুলিশ। পাশাপাশি করোনা আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন করছে। এছাড়াও ত্রাণ বিতরণও অব্যাহত রেখেছে।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মার্চের শুরু থেকেই শরীয়তপুরের এসপি এস.এম আশরাফুজ্জামাননের নেতৃত্বে জেলা পুলিশ জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৮০ হাজার পিস মাস্ক বিতরণ করেছে। আর লিফলেট ও হ্যান্ডবিল বিতরণ, মাইকিং, সড়কের যানবাহন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রচারাভিযান এবং নিয়মিত জনসচেতনতামূলক সংগীত পরিবেশন, শর্ট ফ্লিম তৈরি করে স্থানীয় ক্যাবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছে। জেলার বিভিন্ন হাট বাজার ও সড়কে জেলা পুলিশের উদ্যোগে কিটনাশক ছিটানো হয়েছে। এছাড়াও আইসোলেশনে থাকা মৃত ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন করে স্বস্ব থানার পুলিশ।

অন্যদিকে জেলা পুলিশের উদ্যোগে ৬ উপজেলার অটোরিক্সা-সিএনজি চালক, তালিকাভূক্ত অসহায় দরিদ্র, ভিক্ষুক, বেঁদে, তৃতীয় লিঙ্গ, নাপিত, মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও সংবাদ প্রাপ্তি সাপেক্ষে দুস্থ ও অসহায়দের মধ্যে সাধ্যমত আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। মোট ৬ হাজার পিচ হ্যান্ড স্যানেটাইজেশন, ৮ হাজার পিচ মাস্ক, ৮ হাজার পিচ হ্যান্ড গ্লোবস এবং ৮ হাজার পিচ লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। পুরো জেলায় ৯টি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সকল থানার ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও পৌরসভা, পর্যায় পুলিশসহ জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়িতে স্টিকার লাগিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হচ্ছে। আর সামাজিকভাবে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে, আক্রান্ত কেউ যেন আত্মগোপনে না থাকে সে বিষয়েও প্রতিটি থানা সবসময় খোঁজ-খবর নিচ্ছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, যানবাহন চলাচল ও হোম কোয়ারেন্টাইন না মানলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গণজমায়েত ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার লক্ষ্যে মসজিদসহ জনগণের মধ্যে প্রচারণা করা হয়েছে। বিষয়টি সার্বক্ষণিক মনিটরিং এর জন্য প্রতিটি মসজিদে ডিউটি বন্টন করে পুলিশি নজরদারী রাখা হয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি ব্যতিত মসজিদে গমণ প্রতিরোধে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। জনগণ যাতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার আদেশ অমান্য করে প্রকাশ্যস্থানে ঘোরাফেরা করতে না পারে সে জন্য সার্বক্ষণিক পুলিশি টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কোথাও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সন্দেহ হলে তাকে দ্রুত চিকিৎসা ও আইসোলেশনের ব্যবস্থাসহ আশপাশের বাড়ি লকডাউনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গুজব রোধে ব্যাপক প্রচারণার ব্যবস্থা করা হয়েছে ও কেউ যাতে গুজব রটাতে না পারে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার এস.এম আশরাফুজ্জামান বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই শরীয়তপুরের পুলিশ সদস্যরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এসব কার্যক্রম করতে গিয়ে আমাদের অনেক সদস্যরা আক্রান্ত হচ্ছে। তারপরেও মনোবল চাঙ্গা রেখে করোনা মোকাবিলায় নানামূখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। তাই এ যুদ্ধে জয়ী হতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর