বাংলাদেশ থেকে ১০ দালালের মাধ্যমে সুন্দরী তরুণীদের সংগ্রহ করার পর তাদের জোর করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হতো। এসব তরুণীর মাধ্যমে বছরে ১৯২ কোটি টাকা উপার্জন হতো আজম খানের। চাকরির নামে এক হাজারের বেশি তরুণী-কিশোরীকে দুবাইয়ে পাচার করে তাদের অনৈতিক কাজে জড়াতে বাধ্য করেন আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের মূলহোতা আজম খান। এ বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন তিনি।
আদালতে আজম খান ও তার সহযোগী ডায়মন্ডের স্বীকারোক্তমূলক জবানবন্দি থেকে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ১০ দালালের মাধ্যমে সুন্দরী তরুণীদের সংগ্রহ করতো দালালরা মেয়েদের প্রলুব্ধ করে নির্ধারিত দু’টি বিদেশি এয়ারলাইন্স এজেন্সির মাধ্যমে দুবাই পাঠাতো। দুবাইতে তাদের নেওয়া হতো আর্টিস্ট ভিসায়। দুবাই যাওয়ার পরে তাদের প্রথমে ছোটখাটো কাজ দেওয়া হতো। এরপর জোরপূর্বক ড্যান্স ক্লাবে নাচতে বাধ্য করা হতো। আটকে রাখা হতো, খাবার দেওয়া হতো না, শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হতো। বৈদ্যুতিক শক পর্যন্ত দেওয়া হতো এবং দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হতো।
এসব তরুণীর মাধ্যমে দুবাইয়ের ৪টি হোটেল থেকে বছরে ১৯২ কোটি টাকা উপার্জন হতো আজম খানের। এসব হোটেলে খরিদ্দারের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের বড় মাপের ব্যবসায়ীরা। গতকাল সোমবার আদালতে আজম খান ও তার সহযোগী আল আমিন ওরফে ডায়মন্ডের ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বলে মামলার তদন্ত তদারক সূত্রে জানা গেছে।
সিআইডি ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, রিমান্ডে থাকা আজম খান চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। গতকাল সে ও তার এক সহযোগীসহ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। সেখানে দেশে ও বিদেশের কয়েকজন ব্যবসায়ীর নাম উঠে এসেছে। যারা নিয়মিত আজম খানের হোটেলে আসা-যাওয়া করত। এছাড়া দেশে তাদের অন্তত অর্ধশতাধিক দালাল রয়েছে। যাদের মাধ্যমে নারীদের সংগ্রহ করা হতো। তাদের নামও পাওয়া গেছে। এখন তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলে এই চক্রের জাল ছিন্নভিন্ন করা সম্ভব হবে। তারা এসব নারীর আর্টিস্ট ভিসার মাধ্যমে পাচার করত বলেও তদন্তে উঠে এসেছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই তাদের নাম, ঠিকানা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, ড্যান্সবার, কফি শপ ও দেহব্যবসা চালিয়ে দুবাইয়ে ৪টি হোটেলের মালিক বনে গেছেন আজম খান। এসব হোটেলে নারীদের কাজ দেওয়ার নাম করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নারীদের সংগ্রহ করা হতো। প্রথমে তাদের ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা বেতনের চাকরির অফার করা হতো। এক পর্যায়ে তাদের আগাম এক মাসের বেতনও দেওয়া হতো। এসব কাজ করত আজম খানের বিশ্বস্ত সহযোগী আল আমিন ওরফে ডায়মন্ড। এই ডায়মন্ড এক এক নারী প্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পেত।
বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর