০৮:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

সাবেক মন্ত্রী পুত্রের সুইজারল্যান্ডসহ তিন দেশে বাড়ি !

সাম্প্রতিক সময়ে অভিযোগ উঠেছে অবৈধ উপায়ে দূর্নীতির মাধ‍্যমে সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের ছেলে সাদাত মান্নান অভির অস্বাভাবিক সম্পদের। কর নথিতে ২১৩ কোটি টাকার সম্পদ দেখালেও আয়ের উৎস দেখাননি সাবেক এ উপজেলা চেয়ারম্যান।

যুক্তরাজ্যের বার্কলে ব্যাংকে চাকরি করা সাদাতের আছে লন্ডনে চার বাড়ি, সুইজারল্যান্ডে একটি ও ঢাকায় একটি। অবশ্য কর পরিহারের দায়ে তাকে লন্ডনে চাকরিও হারাতে হয়েছিল।

বনানীর এ ব্লকের ছয়তলা ভবনের সাতটি ফ্ল্যাট ও সাতটি গ্যারেজের মালিক সাদাত মান্নান। আয়কর নথিতে প্রায় ১৭ হাজার স্কয়ার ফিটের এ সম্পদের মূল্য দেখানো হয়েছে মাত্র সাড়ে ছয় কোটি টাকা।যদিও বাজারমূল্য কয়েকগুন। একটি ফ্ল্যাটে নিজেই থাকেন সাদাত। বাকিগুলো ভাড়া দেয়া। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই সাদাতের ফ্ল্যাটে ঝুলছে তালা।

বিদেশে সাদাত মান্নানের সম্পদ সম্পর্কে জানা গেছে যা অবিশ্বাস্য। যুক্তরাজ্যের সারি শহরের কোবহামের ফেয়ারমিলে ২০১৬ সালে একটি বাড়ি কেনেন তিনি। তখন দাম ছিলো প্রায় ৪৮ কোটি টাকার সমান।

একই শহরের এশার ড্রাকেসক্লোজে আরো একটি বাড়ি আছে তার। দাম ২০ কোটি টাকা প্রায়। সাদাত এটি কেনেন ২০১৩ সালে।লন্ডনের ওয়েস্টফেরি সার্কাসে ২০১২ সালে একটি এপার্টমেন্ট কেনেন তিনি। দাম পড়ে ১৭ কোটি টাকা প্রায়। একই শহরের হার্টসমেয়ার রোডেও একটি এপার্টমেন্ট আছে তার।২০০৭ সালে সাদাত সেটি ক্রয় করেন সাড়ে ছয় কোটি টাকায়। আর, সুইজারল্যান্ডের ভো রাজ্যে সিগনি এভেনেক্সে সাদাত বাড়ি কেনেন ২০০৮ সালে। তখন এটির দাম ছিল ২৫ কোটি টাকা প্রায়।

সুনামগঞ্জে দুই একরের বেশি জমির মালিক সাদাত মান্নান। ঢাকাসহ একাধিক স্থানে আছে আবাসিক প্লটের ভাগ। তার নগদ আছে প্রায় ৮ কোটি টাকা।

২০২৩-২৪ করবর্ষে সাদাত নিট সম্পদ দেখিয়েছেন একশ’ ৩৯ কোটি টাকা। কিন্তু আয়ের উৎস দেখাননি। আয়কর নথিতে সম্পদ বন্ধকবাবদ ৭৩ কোটি টাকার দায় দেখান সাদাত মান্নান। এরও বিস্তারিত বিবরণ নেই নথিতে। 
সাদাত মান্নানের এসব সম্পদে কর ফাঁকি তদন্ত করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইসি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্পদ, বিনিয়োগ ও ঋণের উৎস দেখানো না হলে তা আয় হয়ে যায়।

১৯৮০ সালে জন্ম নেয়া এই মন্ত্রীপুত্র লেখাপড়া করেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে। তারপর লন্ডনে বার্কলে ব্যাংকে প্রায় ২০ বছর চাকরি করেন। বার্কলে ব্যাংকে চাকরির সময় আইন ফাঁকফোকর বের করে কোম্পানির মুনাফা বাড়ানোর অভিযোগে চাকরিও যায় তার। পরে যোগ দেন অন্য একটি কোম্পানিতে। এ নিয়ে অনুসন্ধানি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্লুমবার্গও।

দুই বছর আগে দেশে ফিরে এমপি পদে নমিনেশন না পেলেও সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয় পান তিনি।

কর ফাঁকির অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে সাদাতের মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও সাড়া মেলেনি।

ডিএস./

 

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

গাজীপুর রেড ক্রিসেন্ট নির্বাচন: বিএনপি সমর্থিত বাবুল-টুলু প্যানেলের নিরঙ্কুশ জয়

সাবেক মন্ত্রী পুত্রের সুইজারল্যান্ডসহ তিন দেশে বাড়ি !

প্রকাশিত : ০৪:৫৯:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাম্প্রতিক সময়ে অভিযোগ উঠেছে অবৈধ উপায়ে দূর্নীতির মাধ‍্যমে সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের ছেলে সাদাত মান্নান অভির অস্বাভাবিক সম্পদের। কর নথিতে ২১৩ কোটি টাকার সম্পদ দেখালেও আয়ের উৎস দেখাননি সাবেক এ উপজেলা চেয়ারম্যান।

যুক্তরাজ্যের বার্কলে ব্যাংকে চাকরি করা সাদাতের আছে লন্ডনে চার বাড়ি, সুইজারল্যান্ডে একটি ও ঢাকায় একটি। অবশ্য কর পরিহারের দায়ে তাকে লন্ডনে চাকরিও হারাতে হয়েছিল।

বনানীর এ ব্লকের ছয়তলা ভবনের সাতটি ফ্ল্যাট ও সাতটি গ্যারেজের মালিক সাদাত মান্নান। আয়কর নথিতে প্রায় ১৭ হাজার স্কয়ার ফিটের এ সম্পদের মূল্য দেখানো হয়েছে মাত্র সাড়ে ছয় কোটি টাকা।যদিও বাজারমূল্য কয়েকগুন। একটি ফ্ল্যাটে নিজেই থাকেন সাদাত। বাকিগুলো ভাড়া দেয়া। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই সাদাতের ফ্ল্যাটে ঝুলছে তালা।

বিদেশে সাদাত মান্নানের সম্পদ সম্পর্কে জানা গেছে যা অবিশ্বাস্য। যুক্তরাজ্যের সারি শহরের কোবহামের ফেয়ারমিলে ২০১৬ সালে একটি বাড়ি কেনেন তিনি। তখন দাম ছিলো প্রায় ৪৮ কোটি টাকার সমান।

একই শহরের এশার ড্রাকেসক্লোজে আরো একটি বাড়ি আছে তার। দাম ২০ কোটি টাকা প্রায়। সাদাত এটি কেনেন ২০১৩ সালে।লন্ডনের ওয়েস্টফেরি সার্কাসে ২০১২ সালে একটি এপার্টমেন্ট কেনেন তিনি। দাম পড়ে ১৭ কোটি টাকা প্রায়। একই শহরের হার্টসমেয়ার রোডেও একটি এপার্টমেন্ট আছে তার।২০০৭ সালে সাদাত সেটি ক্রয় করেন সাড়ে ছয় কোটি টাকায়। আর, সুইজারল্যান্ডের ভো রাজ্যে সিগনি এভেনেক্সে সাদাত বাড়ি কেনেন ২০০৮ সালে। তখন এটির দাম ছিল ২৫ কোটি টাকা প্রায়।

সুনামগঞ্জে দুই একরের বেশি জমির মালিক সাদাত মান্নান। ঢাকাসহ একাধিক স্থানে আছে আবাসিক প্লটের ভাগ। তার নগদ আছে প্রায় ৮ কোটি টাকা।

২০২৩-২৪ করবর্ষে সাদাত নিট সম্পদ দেখিয়েছেন একশ’ ৩৯ কোটি টাকা। কিন্তু আয়ের উৎস দেখাননি। আয়কর নথিতে সম্পদ বন্ধকবাবদ ৭৩ কোটি টাকার দায় দেখান সাদাত মান্নান। এরও বিস্তারিত বিবরণ নেই নথিতে। 
সাদাত মান্নানের এসব সম্পদে কর ফাঁকি তদন্ত করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইসি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্পদ, বিনিয়োগ ও ঋণের উৎস দেখানো না হলে তা আয় হয়ে যায়।

১৯৮০ সালে জন্ম নেয়া এই মন্ত্রীপুত্র লেখাপড়া করেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে। তারপর লন্ডনে বার্কলে ব্যাংকে প্রায় ২০ বছর চাকরি করেন। বার্কলে ব্যাংকে চাকরির সময় আইন ফাঁকফোকর বের করে কোম্পানির মুনাফা বাড়ানোর অভিযোগে চাকরিও যায় তার। পরে যোগ দেন অন্য একটি কোম্পানিতে। এ নিয়ে অনুসন্ধানি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্লুমবার্গও।

দুই বছর আগে দেশে ফিরে এমপি পদে নমিনেশন না পেলেও সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয় পান তিনি।

কর ফাঁকির অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে সাদাতের মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও সাড়া মেলেনি।

ডিএস./