করোনাভাইরাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আতঙ্কও। মানুষেরা অনেকটা স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করলেও করোনার আতঙ্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। নানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই অনেকটা সহজ হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে মানবদেহে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে ফুসফুসের। ফলে দেখা দিচ্ছে শ্বাসকষ্টের সমস্যা।
ফুসফুসকে সুস্থ রাখার দিকে খেয়াল রাখতে হবে আমাদের। এর কারণ হলো, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার অন্যতম অঙ্গ এই ফুসফুস।
ফুসফুসকে সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে খাবার। বয়স বৃদ্ধি, পরিবেশ দূষণ এবং বিভিন্ন অসুখ-বিসুখের কারণে যাদের ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে গেছে, তাদের খাবারের তালিকায় বাড়তি নজর দেয়া প্রয়োজন।
আমেরিকান লাং অ্যাসোসিয়েশন এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এক্ষেত্রে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। কারণ কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার পরিপাকের সময় বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি করে এবং উপকারি ফ্যাট জাতীয় খাবার পরিপাকের সময় কার্বন ডাই অক্সাইড কম পরিমাণে তৈরি করে। যার ফলে সুস্থ থাকে আমাদের ফুসফুস।
ফুসফুস ভালো রাখতে কোন ধরনের খাবার খেতে হবে তার তালিকা প্রকাশ করেছে বোল্ডস্কাই-
পানি
পানি পান শরীরের পক্ষে নিঃসন্দেহে উপকারী। এটি ফুসফুস ভালো রাখতে সাহায্য করে। ফুসফুসের স্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখতে প্রতিদিন দুই থেকে তিন লিটার বা তার বেশি পানি পান করুন। এতে ফুসফুসের রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে এবং শ্লেষ্মা পাতলা থাকে। ফলে শরীরের ভেতরে থাকা দূষিত পদার্থ ও জীবাণু হাঁচি-কাশির মাধ্যমে সহজেই বের হয়ে যায়।
গ্রিন টি
গ্রিন টি একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়। গ্রিন টিতে থাকা উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফুসফুসের প্রদাহ কমায় ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। ফুসফুস ভালো রাখতে প্রতিদিন দুইকাপ গ্রিন-টি পান করতে পারেন।
মাছ
বিভিন্নরকম মাছ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মাছ বেশ কার্যকরী। বিশেষ করে ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত সামুদ্রিক মাছ ফুসফুসের কার্যক্ষমতাকে অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। মাছে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ফুসফুসের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। তাই নিয়ম করে মাছ রাখুন পাতে।
কাঁচা হলুদ
হলুদে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও কারকিউমিন, যা ফুসফুসকে দূষিত পদার্থের প্রভাব থেকে রক্ষা করে এবং প্রদাহ কমায়। প্রতিদিন সকালে কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খেতে পারেন। শুধু হলুদ না খেতে ভালো না লাগলে মধু ও হলুদ একসঙ্গে খেতে পারেন। এতে করে ভালো থাকবে ফুসফুস।
রসুন ও আদা
উপকারী মশলা হিসেবে আদা ও রসুনের নাম সবার জানা। এতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য ফুসফুসকে ভালো রাখে এবং ফুসফুস থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। ফুসফুসের রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমাতে কাজে লাগে এই দুই মশলা।
ব্রকলি
ব্রকলিতে আছে সালফোরাফেন ও অক্সিডেটিভ, যা স্ট্রেসের ক্ষতি থেকে শরীরকে রক্ষা করে এবং ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। তাই প্রতিদিনের খাবারের রাখুন ব্রকলি।
ফল ও শাকসবজি
নানারকম ফল ও শাক-সবজি খেলে ভালো থাকবে ফুসফুস। বেদানা, আপেল, আঙুর, কমলালেবু, পেয়ারা, গাজর, বিনস, শসা, কুমড়ো ইত্যাদি ফল ও শাকসবজি ফুসফুস ভালো রাখে। এছাড়াও, পাকা মরিচ, অলিভ অয়েল, বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার, পেঁয়াজ, দুধ ও ডিম ইত্যাদি খাবার ফুসফুসের যত্ন নিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
বিজনেস বাংলাদেশ / আতিক