১০:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

বলাকইড় পদ্মবিল হতে পারে সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা

পদ্মকে জলজ ফুলের রানী বলা হয়। আর প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া এই পদ্মফুল সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে গোপালগঞ্জের বিলের চিত্র। দ‚র থেকে মনে হবে যেন ফুলের বিছানা পেতে রেখেছে কেউ। প্রতিদিনই এ বিলের পদ্মের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছে শত শত দর্শনার্থী। বর্ষাকালে কোনো কাজ না থাকায় দর্শনার্থীদের নৌকায় করে বিলে আনা নেওয়ার কাজ করে এবং পদ্মফুল ও ফল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন স্থানীয় অনেকে। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা। এজেলায় ছোট-বড় অসংখ্য বিল রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম সদর উপজেলার বলাকইড় বিল। জেলা সদর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দ‚রে এর অবস্থান। বর্ষা মৌসুমে চারিদিকে শুধু পদ্ম আর পদ্ম। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে গোলাপী ও সাদা রং এর পদ্ম দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। এমন অপরূপ দৃশ্য যেন ভ্রমণ পিপাসুদের হাতছানি দিচ্ছে। এ বিলের সৌন্দর্য ও পদ্ম দেখার জন্য প্রতিদিনই বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজন নিয়ে ভীড় করছেন অনেকে। তারা নৌকায় ঘুরে সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। ।
বলাকইড় গ্রামের শাহাবুদ্দিন শেখ জানান, আমাদের পূর্বপুরুষের কাছে শুনেছি বিলে অনেক পদ্মফুল ফুটতো। কিন্তু হঠাৎ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এ ফুল ফোটা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ১৯৮৮ সালে বন্যার পর থেকে বর্ষাকালে এ বিলের অধিকাংশ জমিতেই প্রাকৃতিকভাবে পদ্মফুল জন্ম হয়ে থাকে। আর এ কারণে বিলটি এখন পদ্মবিল নামেই পরিচিত হয়ে উঠেছে।

বলাকইড় দক্ষিণপাড়ার নৌকার মাঝি ইনাজ ঢালী বলেন, এখানে শত শত লোক আসে পদ্ম দেখতে। তাদের নিয়ে বিলের পদ্ম ঘুরে ঘুরে দেখাই। প্রতিদিন ৫শ থেকে ১৫শ টাকা পর্যন্ত আয় হয়। এদিয়ে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালাই। নৌকার ভাড়া মিটিয়ে খেয়ে দেয়ে আমরা ভালো আছি বলেও জানান তিনি।

গোপালগঞ্জ থেকে পরিবার নিয়ে পদ্মবিল ঘুরতে আসা অভিভাবকটি কেন্ এরআগে এখানে আসেননি এই আফসোস করে কবির ভাষায় বলেন, বহুদিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে-বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে, দেখিতে গিয়াছি পর্বতমালা-দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু, দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া-ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া, একটি ধানের শীষের উপর একটি শিশির বিন্দু।

কোটালীপাড়া থেকে এ বিলে ঘুরতে আসা হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা পাঁচ বন্ধু এ বিলের পদ্ম দেখতে এসেছি। এর সৌন্দর্য দেখে আমরা মুগ্ধ। কিন্তু এখানের আসার পথ এত খারাপ আর সরু যে ইজিবাইক নিয়ে আসতেও অনেক কষ্ট হয়েছে।

এ বিলের সৌন্দর্য নিয়ে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানান, এবিলের পদ্ম দেখতে সারাদেশ থেকে বর্ষাকালে দর্শনার্থীরা ভীড় করে। এখানে আসার রাস্তা সরু ও সংকীর্ণ হওয়ায় ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি তারা খুব তাড়াতাড়ি এ রাস্তার কাজ শুরু করবেন। আর একটা পর্যটন স্থানের জন্য যে সমস্ত অবকাঠামো প্রয়োজন হয় সে বিষয়ে পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও এ বিষয়গুলো দেখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। ভবিষ্যতে এটি একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। তাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত জায়গাকে সুন্দর রাখার দায়িত্ব সবার। প্রকৃতি যাতে নষ্ট না হয় তাই প্রকৃতিকে রক্ষায় সকলকে সজাগ ও সচেতন থাকার অনুরোধ করেন তিনি।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

বিল্ডিং এ ডিজাবিলিটি ইনক্লুসিভ ওয়ার্কফোর্স শীর্ষক ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত

বলাকইড় পদ্মবিল হতে পারে সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা

প্রকাশিত : ০৭:০৮:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

পদ্মকে জলজ ফুলের রানী বলা হয়। আর প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া এই পদ্মফুল সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে গোপালগঞ্জের বিলের চিত্র। দ‚র থেকে মনে হবে যেন ফুলের বিছানা পেতে রেখেছে কেউ। প্রতিদিনই এ বিলের পদ্মের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছে শত শত দর্শনার্থী। বর্ষাকালে কোনো কাজ না থাকায় দর্শনার্থীদের নৌকায় করে বিলে আনা নেওয়ার কাজ করে এবং পদ্মফুল ও ফল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন স্থানীয় অনেকে। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা। এজেলায় ছোট-বড় অসংখ্য বিল রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম সদর উপজেলার বলাকইড় বিল। জেলা সদর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দ‚রে এর অবস্থান। বর্ষা মৌসুমে চারিদিকে শুধু পদ্ম আর পদ্ম। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে গোলাপী ও সাদা রং এর পদ্ম দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। এমন অপরূপ দৃশ্য যেন ভ্রমণ পিপাসুদের হাতছানি দিচ্ছে। এ বিলের সৌন্দর্য ও পদ্ম দেখার জন্য প্রতিদিনই বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজন নিয়ে ভীড় করছেন অনেকে। তারা নৌকায় ঘুরে সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। ।
বলাকইড় গ্রামের শাহাবুদ্দিন শেখ জানান, আমাদের পূর্বপুরুষের কাছে শুনেছি বিলে অনেক পদ্মফুল ফুটতো। কিন্তু হঠাৎ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এ ফুল ফোটা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ১৯৮৮ সালে বন্যার পর থেকে বর্ষাকালে এ বিলের অধিকাংশ জমিতেই প্রাকৃতিকভাবে পদ্মফুল জন্ম হয়ে থাকে। আর এ কারণে বিলটি এখন পদ্মবিল নামেই পরিচিত হয়ে উঠেছে।

বলাকইড় দক্ষিণপাড়ার নৌকার মাঝি ইনাজ ঢালী বলেন, এখানে শত শত লোক আসে পদ্ম দেখতে। তাদের নিয়ে বিলের পদ্ম ঘুরে ঘুরে দেখাই। প্রতিদিন ৫শ থেকে ১৫শ টাকা পর্যন্ত আয় হয়। এদিয়ে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালাই। নৌকার ভাড়া মিটিয়ে খেয়ে দেয়ে আমরা ভালো আছি বলেও জানান তিনি।

গোপালগঞ্জ থেকে পরিবার নিয়ে পদ্মবিল ঘুরতে আসা অভিভাবকটি কেন্ এরআগে এখানে আসেননি এই আফসোস করে কবির ভাষায় বলেন, বহুদিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে-বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে, দেখিতে গিয়াছি পর্বতমালা-দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু, দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া-ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া, একটি ধানের শীষের উপর একটি শিশির বিন্দু।

কোটালীপাড়া থেকে এ বিলে ঘুরতে আসা হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা পাঁচ বন্ধু এ বিলের পদ্ম দেখতে এসেছি। এর সৌন্দর্য দেখে আমরা মুগ্ধ। কিন্তু এখানের আসার পথ এত খারাপ আর সরু যে ইজিবাইক নিয়ে আসতেও অনেক কষ্ট হয়েছে।

এ বিলের সৌন্দর্য নিয়ে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানান, এবিলের পদ্ম দেখতে সারাদেশ থেকে বর্ষাকালে দর্শনার্থীরা ভীড় করে। এখানে আসার রাস্তা সরু ও সংকীর্ণ হওয়ায় ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি তারা খুব তাড়াতাড়ি এ রাস্তার কাজ শুরু করবেন। আর একটা পর্যটন স্থানের জন্য যে সমস্ত অবকাঠামো প্রয়োজন হয় সে বিষয়ে পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও এ বিষয়গুলো দেখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। ভবিষ্যতে এটি একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। তাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত জায়গাকে সুন্দর রাখার দায়িত্ব সবার। প্রকৃতি যাতে নষ্ট না হয় তাই প্রকৃতিকে রক্ষায় সকলকে সজাগ ও সচেতন থাকার অনুরোধ করেন তিনি।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর