০১:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

পারল না পতন ঠেকাতে ব্যাংক

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (১৭ জানুয়ারি) প্রায় সবকটি ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়লেও বড় দরপতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি শেয়ারবাজার। অন্য খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় এই দরপতন হয়েছে।

মূল্য সূচকের বড় পতন হলেও তাকে স্বাভাবিক বলছেন শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ মুনাফা তুলে নেয়ার চেষ্টা করেছে। বিপরীতে অন্য একটি পক্ষ কম দামে শেয়ার কেনার চেষ্টা করছেন। এ কারণে সূচকের পতন হলেও লেনদেন বেড়েছে। সেই সঙ্গে প্রায় সবকটি ব্যাংকের শেয়ার দাম বেড়েছে। এটা বাজারের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। কারণ ব্যাংকের ফ্রি ফ্লোট (লেনদেন যোগ্য) শেয়ার সব থেকে বেশি।

  • তারা আরও বলছেন, কয়েকদিন ধরে শেয়ারবাজার টানা বাড়ছে। কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়ে দ্বিগুণ ছাড়িয়ে গেছে। যে কারণে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ মুনাফা তুলে নেয়ার জন্য এসব কোম্পানির শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়িয়েছেন। আর বিক্রির চাপ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, রোববার লেনদেনের শুরু থেকেই একের পর এক ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়তে থাকে। এতে লেনদেনের শুরুতে মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়। প্রথম মিনিটেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৬২ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

  • ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়ার এ প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। কিন্তু লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পতনের খাতায় নাম লেখায় অন্য খাতের একের পর এক প্রতিষ্ঠান। ফলে ধীরে ধীরে বড় পতনে দিকে রূপ নেই শেয়ারবাজার।
  • এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮৫০ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ২৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ২৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

মূল্য সূচকের এই পতনের বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে যাওয়ায় মূল্য সূচকের পতন হয়েছে। যদি বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার দাম না বাড়তো তাহলে সূচকের আরও বড় পতন হতো। এমনকি অর্ধেক ব্যাংকের শেয়ার দাম কমলেও দেখা যেত সূচক ১০০ পয়েন্টের ওপরে পড়ে গেছে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, এদিন ডিএসইতে দিনভর লেনদেনে অংশ নেয়া মাত্র ৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩১টির। আর ৫৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অপরদিকে ব্যাংক খাতের মাত্র তিনটি কোম্পানির শেয়ার দাম কমেছে। বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৪টির এবং তিনটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক মো. রকিবুর রহমান বলেন, ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়া খুবই ভালো লক্ষণ। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন। কারণ ব্যাংকের ফ্রি ফ্লোট শেয়ার বেশি। আর যে কোম্পানির ফ্রি ফ্লোট শেয়ার বেশি থাকে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে সেই কোম্পানির শেয়ার বেশি থাকে। তাছাড়া বাজার মূলধনের বড় অংশই ব্যাংকের। সুতরাং ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়া বাজারের জন্য সুসংবাদ।

ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ার দিনে মূল্য সূচকের পতনের বিষয়ে জানতে চাইলে রবিকুর রহমান বলেন, এটাকে পতন বলা যায় না। কয়েকদিন ধরে টানা বাড়ায় কিছু বিনিয়োগকারী মুনাফা তুলে নেয়ার চেষ্টা করেছেন। অপরদিকে দাম কমায় কিছু বিনিয়োগকারী কম দামে শেয়ার কিনে নিয়েছেন। এটাই শেয়ারবাজার।

  • এদিকে সূচকের বড় পতন হলেও ডিএসইতে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩৮৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। যা আগের দিন ছিল ২ হাজার ৭০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৩১৪ কোটি ২ লাখ টাকা।

এই লেনদেন বাড়ার বিষয়টি উল্লেখ করে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, লেনদেন কেমন হয়েছে সেটা দেখতে হবে। ডিএসইতে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। শেয়ারের দাম কমলে কেনার জন্য বিনিয়োগকারীরা বসে রয়েছেন। সুতরাং এখন শেয়ারবাজারে পতন বলে কিছু নেই।

  • বড় অঙ্কের লেনদেনে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে রবি’র শেয়ার। কোম্পানিটির ২৮১ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ১৯০ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৬৮ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।
  • এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে ডিএসইতে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সামিট পাওয়ার, বেক্সিমকো ফার্মা, সিটি ব্যাংক, লাফার্জহোলসিম, আইএফআইসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং বিডি ফাইন্যান্স।
  • অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৭৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৫১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৭৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৮টির এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

জনপ্রিয়

ইসরায়েলে আঘাত হেনেছে হিজবুল্লাহর ড্রোন, আহত ১৮

পারল না পতন ঠেকাতে ব্যাংক

প্রকাশিত : ০৪:৪১:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২১

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (১৭ জানুয়ারি) প্রায় সবকটি ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়লেও বড় দরপতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি শেয়ারবাজার। অন্য খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় এই দরপতন হয়েছে।

মূল্য সূচকের বড় পতন হলেও তাকে স্বাভাবিক বলছেন শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ মুনাফা তুলে নেয়ার চেষ্টা করেছে। বিপরীতে অন্য একটি পক্ষ কম দামে শেয়ার কেনার চেষ্টা করছেন। এ কারণে সূচকের পতন হলেও লেনদেন বেড়েছে। সেই সঙ্গে প্রায় সবকটি ব্যাংকের শেয়ার দাম বেড়েছে। এটা বাজারের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। কারণ ব্যাংকের ফ্রি ফ্লোট (লেনদেন যোগ্য) শেয়ার সব থেকে বেশি।

  • তারা আরও বলছেন, কয়েকদিন ধরে শেয়ারবাজার টানা বাড়ছে। কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়ে দ্বিগুণ ছাড়িয়ে গেছে। যে কারণে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ মুনাফা তুলে নেয়ার জন্য এসব কোম্পানির শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়িয়েছেন। আর বিক্রির চাপ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, রোববার লেনদেনের শুরু থেকেই একের পর এক ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়তে থাকে। এতে লেনদেনের শুরুতে মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়। প্রথম মিনিটেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৬২ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

  • ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়ার এ প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। কিন্তু লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পতনের খাতায় নাম লেখায় অন্য খাতের একের পর এক প্রতিষ্ঠান। ফলে ধীরে ধীরে বড় পতনে দিকে রূপ নেই শেয়ারবাজার।
  • এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮৫০ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ২৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ২৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

মূল্য সূচকের এই পতনের বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে যাওয়ায় মূল্য সূচকের পতন হয়েছে। যদি বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার দাম না বাড়তো তাহলে সূচকের আরও বড় পতন হতো। এমনকি অর্ধেক ব্যাংকের শেয়ার দাম কমলেও দেখা যেত সূচক ১০০ পয়েন্টের ওপরে পড়ে গেছে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, এদিন ডিএসইতে দিনভর লেনদেনে অংশ নেয়া মাত্র ৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩১টির। আর ৫৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অপরদিকে ব্যাংক খাতের মাত্র তিনটি কোম্পানির শেয়ার দাম কমেছে। বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৪টির এবং তিনটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক মো. রকিবুর রহমান বলেন, ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়া খুবই ভালো লক্ষণ। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন। কারণ ব্যাংকের ফ্রি ফ্লোট শেয়ার বেশি। আর যে কোম্পানির ফ্রি ফ্লোট শেয়ার বেশি থাকে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে সেই কোম্পানির শেয়ার বেশি থাকে। তাছাড়া বাজার মূলধনের বড় অংশই ব্যাংকের। সুতরাং ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়া বাজারের জন্য সুসংবাদ।

ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ার দিনে মূল্য সূচকের পতনের বিষয়ে জানতে চাইলে রবিকুর রহমান বলেন, এটাকে পতন বলা যায় না। কয়েকদিন ধরে টানা বাড়ায় কিছু বিনিয়োগকারী মুনাফা তুলে নেয়ার চেষ্টা করেছেন। অপরদিকে দাম কমায় কিছু বিনিয়োগকারী কম দামে শেয়ার কিনে নিয়েছেন। এটাই শেয়ারবাজার।

  • এদিকে সূচকের বড় পতন হলেও ডিএসইতে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩৮৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। যা আগের দিন ছিল ২ হাজার ৭০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৩১৪ কোটি ২ লাখ টাকা।

এই লেনদেন বাড়ার বিষয়টি উল্লেখ করে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, লেনদেন কেমন হয়েছে সেটা দেখতে হবে। ডিএসইতে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। শেয়ারের দাম কমলে কেনার জন্য বিনিয়োগকারীরা বসে রয়েছেন। সুতরাং এখন শেয়ারবাজারে পতন বলে কিছু নেই।

  • বড় অঙ্কের লেনদেনে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে রবি’র শেয়ার। কোম্পানিটির ২৮১ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ১৯০ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৬৮ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।
  • এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে ডিএসইতে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সামিট পাওয়ার, বেক্সিমকো ফার্মা, সিটি ব্যাংক, লাফার্জহোলসিম, আইএফআইসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং বিডি ফাইন্যান্স।
  • অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৭৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৫১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৭৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৮টির এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।