০৩:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

ঋণের কিস্তি পরিশোধে এবার বিশেষ সুবিধা

ঢালাওভাবে ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা না বাড়িয়ে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণের বকেয়া কিস্তি পরিশোধের বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ঘোষণার মাধ্যমে বকেয়া ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত সময় পাবেন ব্যবসায়ীরা, কিন্তু কিস্তি পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থেকে রেহাই পাবেন না তারা। রবিবার জারি করা সার্কুলারে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত বছর ঋণের কিস্তি পরিশোধের বাধ্যবাধকতায় যে স্থগিতাদেশ ছিল তা আর বর্ধিত করা হবে না।
সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বরের সার্কুলারের মাধ্যমে অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় ঋণগ্রহীতার উপর এর প্রভাব সহনীয় মাত্রায় রাখতে গতবছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের ঋণ শ্রেণিকরণে ডেফারেল সুবিধা দেওয়া হয়েছিল, যা এবছর ১ জানুয়ারি থেকে আর বর্ধিত না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঋণের কিস্তি পরিশোধ সহজ করার লক্ষ্যে ১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে বিদ্যমান অশ্রেণিকৃত ঋণগ্রহীতার উপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব এবং ঋণের বকেয়া স্থিতির পরিমাণ বিবেচনায় ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে কেবলমাত্র মেয়াদী ঋণ হিসাবের অবশিষ্ট মেয়াদের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ সময় বৃদ্ধি করা যাবে। তবে, এরূপ বর্ধিত সময়সীমা কোনভাবেই দুই বছরের বেশি হবে না।”
বিষয়টি ব্যাখা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টা হলো এমন, একজন ব্যবসায়ী কোন প্রকল্পের জন্য ২০ কিস্তিতে পরিশোধ করার শর্তে ঋণ নিয়েছেন। তিনি ১২ কিস্তি আগেই পরিশোধ করেছেন; কিন্তু করোনার কারণে ৮টি কিস্তি বকেয়া হয়েছে। এখন সে ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ১২ কিস্তিতে এই ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। দ্বিমাসিক কিস্তি হলে ১২টি কিস্তি পরিশোধে ২৪ মাস পর্যন্ত সময় পাবেন। কিন্তু এই কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা কোনভাবেই ২৪ মাস বা দুই বছরের বেশি হবে না। সর্বোচ্চ দুই বছরের মধ্যে বকেয়া ঋণ পরিশোধ করতে হবে ঋণ গ্রহীতাকে।”
সার্কুলারে বলা হয়েছে, অন্যান্য ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালা এবং বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রণোদনা প্যাকেজের নীতিমালা অনুসরণীয় হবে।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে ঋণগ্রহীতাদের সুরক্ষা দিতে ২০২০ সালের এপ্রিলে ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। সরকারের নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সার্কুলার জারি করে জানায়, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত কোনো ঋণগ্রহীতা ঋণ শোধ না করলেও ঋণের শ্রেণিমানে কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না। এরপর এ ছাড়ের মেয়াদ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে তৃতীয় দফায় এ সুযোগ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ডিসেম্বর শেষ হওয়ার আগেই ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ঋণ পরিশোধে শিথিলতার মেয়াদ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানিয়ে গভর্নরকে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঋণের কিস্তি পরিশোধের বাধ্যবাধকাতার স্থগিতাদেশের সময়সীমা না বাড়িয়ে বেশি সময় নিয়ে কিস্তি পরিশোধের সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ট্যাগ :

বিএফআইইউ প্রধানের ‘ভিডিও ফাঁস’ বিশেষজ্ঞদের দাবি এআই দারা নির্মিত ষড়যন্ত্র

ঋণের কিস্তি পরিশোধে এবার বিশেষ সুবিধা

প্রকাশিত : ১২:০১:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২১

ঢালাওভাবে ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা না বাড়িয়ে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণের বকেয়া কিস্তি পরিশোধের বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ঘোষণার মাধ্যমে বকেয়া ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত সময় পাবেন ব্যবসায়ীরা, কিন্তু কিস্তি পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থেকে রেহাই পাবেন না তারা। রবিবার জারি করা সার্কুলারে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত বছর ঋণের কিস্তি পরিশোধের বাধ্যবাধকতায় যে স্থগিতাদেশ ছিল তা আর বর্ধিত করা হবে না।
সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বরের সার্কুলারের মাধ্যমে অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় ঋণগ্রহীতার উপর এর প্রভাব সহনীয় মাত্রায় রাখতে গতবছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের ঋণ শ্রেণিকরণে ডেফারেল সুবিধা দেওয়া হয়েছিল, যা এবছর ১ জানুয়ারি থেকে আর বর্ধিত না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঋণের কিস্তি পরিশোধ সহজ করার লক্ষ্যে ১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে বিদ্যমান অশ্রেণিকৃত ঋণগ্রহীতার উপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব এবং ঋণের বকেয়া স্থিতির পরিমাণ বিবেচনায় ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে কেবলমাত্র মেয়াদী ঋণ হিসাবের অবশিষ্ট মেয়াদের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ সময় বৃদ্ধি করা যাবে। তবে, এরূপ বর্ধিত সময়সীমা কোনভাবেই দুই বছরের বেশি হবে না।”
বিষয়টি ব্যাখা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টা হলো এমন, একজন ব্যবসায়ী কোন প্রকল্পের জন্য ২০ কিস্তিতে পরিশোধ করার শর্তে ঋণ নিয়েছেন। তিনি ১২ কিস্তি আগেই পরিশোধ করেছেন; কিন্তু করোনার কারণে ৮টি কিস্তি বকেয়া হয়েছে। এখন সে ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ১২ কিস্তিতে এই ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। দ্বিমাসিক কিস্তি হলে ১২টি কিস্তি পরিশোধে ২৪ মাস পর্যন্ত সময় পাবেন। কিন্তু এই কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা কোনভাবেই ২৪ মাস বা দুই বছরের বেশি হবে না। সর্বোচ্চ দুই বছরের মধ্যে বকেয়া ঋণ পরিশোধ করতে হবে ঋণ গ্রহীতাকে।”
সার্কুলারে বলা হয়েছে, অন্যান্য ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালা এবং বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রণোদনা প্যাকেজের নীতিমালা অনুসরণীয় হবে।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে ঋণগ্রহীতাদের সুরক্ষা দিতে ২০২০ সালের এপ্রিলে ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। সরকারের নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সার্কুলার জারি করে জানায়, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত কোনো ঋণগ্রহীতা ঋণ শোধ না করলেও ঋণের শ্রেণিমানে কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না। এরপর এ ছাড়ের মেয়াদ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে তৃতীয় দফায় এ সুযোগ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ডিসেম্বর শেষ হওয়ার আগেই ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ঋণ পরিশোধে শিথিলতার মেয়াদ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানিয়ে গভর্নরকে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঋণের কিস্তি পরিশোধের বাধ্যবাধকাতার স্থগিতাদেশের সময়সীমা না বাড়িয়ে বেশি সময় নিয়ে কিস্তি পরিশোধের সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।