০৭:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫

তারুণ্য এবং সততাই মূলমন্ত্র

  • তাকী জোবায়ের
  • প্রকাশিত : ০১:১২:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • 153

অব্যাহত লোকসানে ডুবতে থাকা রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার পর ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে ব্যাংকটিকে তুলে এনেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বকালীন তিন বছরেই বড় অঙ্ক মুনাফা করে ব্যাংকটি। এর প্রতিদান হিসেবে দেশের সবচেয়ে বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংকের দায়িত্ব তুলে দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখানেও তরুণ কর্মীবাহিনীকে জাগিয়ে তুলে নিজের সততা, নিষ্ঠায় সোনালী ব্যাংককে সাফল্যের চূঁড়ায় নিয়ে যান মো. আতাউর রহমান প্রধান। নিজের জীবন দর্শন, সাফল্যের সূত্র, আর্থিক খাতের চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে কথা বলেছেন ‘আজকের বিজনেস বাংলাদেশ’-এর সঙ্গে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন আজকের বিজনেস বাংলাদেশের প্রধান প্রতিবেদক তাকী জোবায়ের।

দীর্ঘদিন লোকসানে থাকা রূপালী ব্যাংককে ঘোষণা দিয়েই মুনাফায় নিয়ে এসেছিলেন। মুজিব বর্ষে সোনালী ব্যাংককে সবার শীর্ষে নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছিলেন যে ঘোষণা করোনা মহামারির মধ্যেও বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। আপনার এই চ্যালেঞ্জ জয়ের মূলমন্ত্র কী?
রূপালী ব্যাংকের ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছিল সেটা হলো, রূপালী ব্যাংকের জনবলকে জাগিয়ে তোলা গেছে। জেগে ওঠা জনবলকে নিয়ে তখন আমাদের লক্ষ্যগুলো নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করেছি। আর সোনালী ব্যাংকের ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছে, এই ব্যাংক থেকেই আমি আমার কর্মজীবন শুরু করি। সোনালী ব্যাংকের ক্ষেত্রে আমার আরও বেশি সুযোগ সুবিধা ছিল এই কারণে, সোনালী ব্যাংকের বেশিরভাগ মানুষকেই আমি চিনি; এবং আমি জানি যে তাদেরকে কিভাবে মোটিভেট করলে কাজে লাগানো যাবে। সোনালী ব্যাংকের ক্ষেত্রে বড় স্বস্তির জায়গাটা হলো, এখানে যারা কাজ করে এরা বয়সে বেশিরভাগই তরুণ। তরুণরা জেগে উঠলে যা হয়। এখানে আসলে আমার কোনো ক্রেডিট নাই। আমাদের যে অর্জনগুলো হয়েছে সেটা আমাদের সহকর্মীদের সম্মিলিত কাজের ফলে। আমরা ম্যানেজমেন্ট যে কাজটা করতে পেরেছি সেটা হলো কর্মীবাহিনীকে জাগ্রত করতে পেরেছি। এই জনবলকে যখন মোটিভেট করা সম্ভব হয়েছে তখনই এই অর্জনটা সহজ হয়েছে। করোনায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও আমরা কিন্তু নিশ্চুপ ছিলাম না। আমরা আমাদের সকল কর্মকাণ্ড স্বাভাবিকভাবেই বহাল রেখেছি। করোনা মহামারির শুরুতে সরকার যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল প্রণোদনার যে অংশ সোনালী ব্যাংকের ওপরে এসেছিল সেটা আমরা যথাসময়ে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেছি। করোনার সময় ঘরে বসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে বলা হয়েছিল। সেই সময়ে আমরা ঘরে বসে অ্যাকাউন্ট খোলার যে অ্যাপসটা তৈরি করালাম সেটা একটা বিষয়। মানুষ এখন দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে ঘরে বসে পাঁচ মিনিটে সোনালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন। এসব বিষয় আমাদের অর্জনে বড় ভূমিকা রেখেছে।

ব্যাংকিং সেবা জনগণের হাতের মুঠোয় নিয়ে যেতে আপনারা কি কি পদক্ষেপ নিয়েছেন?
প্রথম যে কথাটি বলতে হবে, সোনালী ব্যাংক দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক। ১ হাজার ২২৭টি শাখা নিয়ে আমরা কাজ করছি। সোনালী ব্যাংকের প্রতিটি শাখা এখন অনলাইন। আপনি যদি কোন একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন প্রথম দিনেই সেটা অনলাইনে চলে আসছে। ফলে যারা ব্যাংকের বর্তমান গ্রাহক আছেন তারা এই সুবিধাটা পাচ্ছেন। এর পাশাপাশি আমরা ঘরে বসে অ্যাকাউন্ট খোলার অ্যাপস করলাম। যে কারণে মানুষ আধুনিক ব্যাংকিংয়ের এই সুবিধাগুলো পেয়েছে। ব্যাংকিং সেবার আওতার বাইরে যে জনগোষ্ঠী আছে তাদের কাছে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা ইতোমধ্যেই এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে গেছি। ইতোমধ্যে আমরা এর কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। এজেন্ট নিয়োগের প্রক্রিয়াও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অটোমেশন পদ্ধতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন। সারাদেশের শতভাগ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা সয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বিতরণের পুরো কার্যক্রমটা সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমেই সম্পাদিত হচ্ছে। এছাড়াও আমরা নগদের সঙ্গে কাজ করছি। বিকাশের সঙ্গেও আমরা ‘লিয়েন অ্যাকাউন্ট’ করেছি। সোনালী ব্যাংকের যেকোন অ্যাকাউন্টের টাকা সরাসরি বিকাশে নেওয়া যায়। আবার কোনো গ্রাহক যদি প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে তার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করতে চায় বিকাশের মাধ্যমে সেটাও করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যাংকিংটাও আমরা ২০২০ সালের মার্চ মাসের মধ্যে চালু করছি। যদিও বর্তমানে আমাদের ইনহাউজ ইন্টারনেট ব্যাংকিং হচ্ছে। গ্রাহকের সুবিধার্থে যেসব প্রযুক্তিগত সেবা দেওয়া দরকার আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলায় আমরা নিজস্ব এটিএম বুথ স্থাপন করেছি। এবছর আরও ৬শ এটিএম বুথ আমরা স্থাপন করবো। পাশাপাশি ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড প্রচুর পরিমাণে বিতরণ করছি। গ্রাহকের যে চাহিদাগুলো আছে, ঘরে বসে সেবা পাওয়ার, সেই সেবাগুলো আমরা দেয়ার চেষ্টা করছি এবং অনেকাংশেই সেবা দিতে পেরেছি।

একসময় সরকারের একমাত্র ট্রেজারি ব্যাংক ছিল সোনালী। এখন অনেকগুলো ব্যাংক এই সুবিধা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতেও কিভাবে সোনালী ব্যাংকের অগ্রগতি ধরে রাখলেন?
করোনার মাঝেও আমাদের আমানত ১০ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের সেবার মান বৃদ্ধির ফলে। জনগণের যে আস্থা, গ্রাহকদের যে আস্থা, সেটা তৈরি হয়েছে; সেবার মান ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে কারণে আমাদের ডিপোজিটের হার ক্রমশ বাড়ছে। সরকারি যে চালান কর্মকাণ্ড সোনালী ব্যাংক একা করতো সেটা এখন অনেক ব্যাংকের মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে। আমরা এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছি। আমরা মনে করি, যদি সেবার মানকে অক্ষুণ্ণ রাখতে পারি তাহলে আমাদের গ্রাহক আমাদের কাছেই থাকবে। এবং সেবার মান যাতে সামনের দিকে আরও ভাল হয় সেই প্রচেষ্টাই আমরা নিয়েছি। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, সেবার মান দিয়েই আমাদের গ্রাহকদের ধরে রাখতে পারবো।

আপনার জন্ম প্রত্যন্ত সীমান্ত অঞ্চল বুড়িমারিতে। সেখান থেকে নিজেকে দেশের সবচেয়ে বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করলেন। কিভাবে নিজেকে সাফল্যের চূঁড়ায় নিয়ে আসলেন?
এটা ঠিক, প্রত্যন্ত এক অঞ্চলে আমার জন্ম। কোন এক সময় এটা দুর্ভিক্ষ অঞ্চল ছিল। এখন উন্নয়নের ছোঁয়া বাংলাদেশের সব জায়গাতেই লেগেছে। ওই অঞ্চলও এখন উন্নত হয়েছে। আমি নিজেকে গর্বিত মনে করি এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্ম নিয়ে আমি আজ এখান পর্যন্ত এসেছি। এর পেছনে আমি যেটা মনে করি, আমার কর্মস্পৃহা, কর্মের প্রতি আগ্রহ, এবং নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করা, যখন যে দায়িত্ব পেয়েছি সেটা নিষ্ঠার সঙ্গে সম্পাদন করার চেষ্টা করেছি; যে কারণে কর্তৃপক্ষ এটার মূল্যায়ন করেছেন, বাংলাদেশ সরকার মূল্যায়ন করেছেন, এবং এর ভিত্তিতেই আমি আজ এই জায়গায় আসতে পেরেছি।

সোনালী ব্যাংক নিয়ে সামনের দিনে পরিকল্পনা কী?
সোনালী ব্যাংক রাষ্ট্রের সবথেকে বড় ব্যাংক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই ব্যাংকটির নাম নিজেই করেছেন। আমরা যেটা সংযুক্ত করি: সোনার বাংলা, সোনার মানুষ, সোনালী ব্যাংক। সোনালী ব্যাংকের ওপর রাষ্ট্রের অনেক দায়িত্ব। সরকারি ব্যাংক হিসেবে মুনাফা শুধু নয়, এদেশের অপামর জনগণ যাতে ব্যাংকিং সেবা পায়, অর্থনীতির গতি যাতে সবসময় সচল থাকে, এবং এর জন্য রাষ্ট্রের একটি ব্যাংক হিসেবে যে সাপোর্ট দরকার সেই সাপোর্টগুলো দিতে চাই; এবং এই সাপোর্ট অব্যাহত রেখেই আমরা শীর্ষে থাকতে চাই। সকল ক্ষেত্রেই আমরা শীর্ষে আছি। এখন সেবার দিক দিয়েও আমরা শীর্ষে থাকতে চাই। এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ।

ব্যাংক খাতের বর্তমান সংকট কী এবং সংকট মোকাবেলার উপায় কী?
আমাদের নন পারফর্মিং লোন (খেলাপি ঋণ) সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই নন পারফর্মিং লোন আজ একদিনে ঘটেনি। আমরা যখন নতুন করে শিল্পায়নে গেছি, নতুন করে ঋণ প্রবাহ বেড়েছে, অনেক শিল্প ভাল করেছে, অনেক শিল্প খারাপ করেছে। অনেক শিল্প থেকে টাকা ফেরত আসেনি। ফলে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। শুধু এই কারণেই নয়, অনেক সময় ইচ্ছাকৃতও খেলাপি হয়েছে। ফলে নন পারফর্মিং লোনটা যত বেড়েছে পারফর্মিং লোনের ওপর তত চাপ এসেছে। এই চাপের কারণে ভাল গ্রাহকদের অনেক সময় পেনাল্টি দিতে হয়েছে। আমরা মনে করি, নন পারফর্মিং লোনটা আমরা যত দ্রুত কমিয়ে আনতে পারবো তত ব্যাংকের স্বাস্থ্য ভাল হবে। নন পারফর্মিং লোন কমিয়ে আনার পদক্ষেপ ইতোমধ্যে সরকারও নিয়েছে। ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে অনেক ঋণ নিয়মিত হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে এর মধ্যে কোভিড-১৯ এসেছে। এটা কারও জানাই ছিল না। এটাকে বিবেচনায় নিয়ে আগামীতে ঋণগুলো কিভাবে নিয়মিত রাখা যায় সেটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ এবং সেই লক্ষ্যেই আমাদের কাজ করতে হবে।

করোনা মহামারি আর্থিক খাতের জন্য নতুন কোন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে কী?
করোনা মানুষকে যেমন আতঙ্কিত করেছে, তেমনি নতুন চিন্তা ভাবনা করার সুযোগ করে দিয়েছে। বিশেষ করে, সরকারি ব্যাংকগুলো প্রযুক্তির দিক দিয়ে অনেক পেছনে ছিলাম। সোনালী ব্যাংকেরই আগামি ৫ বছরের পরিকল্পনা ছিল প্রযুক্তিগত বিভিন্ন বিষয় বাস্তবায়নের। কিন্তু করোনাকালে আমাদের বিকল্প চিন্তা করতে হয়েছে। প্রযুক্তিগত যে উন্নয়নটা আমরা ৫ বছরে করার পরিকল্পনা করেছিলাম তার বেশিরভাগই এই এক বছরে অর্জিত হয়েছে। আমি মনে করি, প্রযুক্তির দিক থেকে করোনাকালে আমাদের চিন্তা প্রসারিত হয়েছে। আগে আমরা এক ধরনের সেবা নিয়ে কাজ করতাম। এখন নতুন চিন্তা এসেছে, আরও ভিন্নভাবে আমরা অর্থায়নগুলো করতে পারি কিনা। যেমন, ওষুধ শিল্প, সুরক্ষা পণ্য ও পোশাক, মাস্ক; এগুলোতে যদি এখন আমরা ফোকাস করি তাহলে ব্যাংক খাত ও ব্যবসায়িরা লাভবান হবে।

সোনালী ব্যাংকের কর্পোরেট গভর্নেন্স সম্পর্কে বলুন?
সোনালী ব্যাংকের কর্পোরেট গভর্নেন্স অনেক ব্যাংকের তুলনায় ভাল এবং অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় ভাল। আমাদের পরিচালনা পর্ষদে এখন বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। এবং তাঁরা অত্যন্ত সততার সঙ্গে কাজ করছেন। সম্প্রতি আমরা ‘হুইসেল ব্লোয়ার’ নামে একটি পলিসি করেছি। এই পলিসির আওতায় একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে ন্যায়পাল হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি হলেন পর্ষদের অডিট কমিটির চেয়ারম্যান। যে কেউ নিঃশঙ্কোচে তাঁর কাছে তথ্য-প্রমাণসহ অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন এবং তার পরিচয় গোপন থাকবে।

ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে আপনার সততা প্রশ্নাতীত। সৎ থাকার সাহস ও শক্তি কোথায় পেলেন?
আমি মনে করিনা সৎ থাকাটা কোন গুণ; এটা মানুষের স্বাভাবিক বৃত্তি হওয়া উচিত। যদি আপনি আপনার নিজের জায়গায় অবস্থান পরিস্কার রাখেন আপনি কথা বলার সাহস পাবেন। আপনার নিজের দুর্বলতা থাকলে শক্তভাবে কথা বলতে পারবেন না। কাজেই এটাকে আমি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখিনা। মানুষ সৎ থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

সৎ থাকা কি চ্যালেঞ্জের বিষয় নয়?
আমি মনে করিনা এটা কঠিন কোনো কাজ। আপনার অবস্থানে পরিস্কার থাকলে আপনার সহকর্মীরাও আপনাকে অনুসরণ করবে। মাথায় পঁচন হলে নিচের দিকে আপনি পঁচন রোধ করতে পারবেন না। মাথা যত পরিস্কার থাকবে নিচের দিকে পঁচন রোধ ততটাই হবে। আমি মনে করি, স্বচ্ছ থাকা মানুষের খুব স্বাভাবিক একটি গুণ।

আপনার জীবনের আদর্শ কে?
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমার জীবনের আদর্শ; যাঁর সৃষ্টি না হলে বাংলাদেশ হতো না। মাত্র ৫০ বছরে তিনি একটি দেশ সৃষ্টি করেছেন। তাঁর অসমাপ্ত জীবনী যদি পড়ি দেখবেন, একটা মানুষের এত অল্প সময়ে এত কিছু অর্জন! আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে যদি অনুসরণ করতে পারি তাহলে আমরা নিশ্চয়ই ভাল থাকবো এবং ভাল কর্ম করতে সক্ষম হবো।

ট্যাগ :

বিএফআইইউ প্রধানের ‘ভিডিও ফাঁস’ বিশেষজ্ঞদের দাবি এআই দারা নির্মিত ষড়যন্ত্র

তারুণ্য এবং সততাই মূলমন্ত্র

প্রকাশিত : ০১:১২:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১

অব্যাহত লোকসানে ডুবতে থাকা রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার পর ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে ব্যাংকটিকে তুলে এনেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বকালীন তিন বছরেই বড় অঙ্ক মুনাফা করে ব্যাংকটি। এর প্রতিদান হিসেবে দেশের সবচেয়ে বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংকের দায়িত্ব তুলে দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখানেও তরুণ কর্মীবাহিনীকে জাগিয়ে তুলে নিজের সততা, নিষ্ঠায় সোনালী ব্যাংককে সাফল্যের চূঁড়ায় নিয়ে যান মো. আতাউর রহমান প্রধান। নিজের জীবন দর্শন, সাফল্যের সূত্র, আর্থিক খাতের চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে কথা বলেছেন ‘আজকের বিজনেস বাংলাদেশ’-এর সঙ্গে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন আজকের বিজনেস বাংলাদেশের প্রধান প্রতিবেদক তাকী জোবায়ের।

দীর্ঘদিন লোকসানে থাকা রূপালী ব্যাংককে ঘোষণা দিয়েই মুনাফায় নিয়ে এসেছিলেন। মুজিব বর্ষে সোনালী ব্যাংককে সবার শীর্ষে নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছিলেন যে ঘোষণা করোনা মহামারির মধ্যেও বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। আপনার এই চ্যালেঞ্জ জয়ের মূলমন্ত্র কী?
রূপালী ব্যাংকের ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছিল সেটা হলো, রূপালী ব্যাংকের জনবলকে জাগিয়ে তোলা গেছে। জেগে ওঠা জনবলকে নিয়ে তখন আমাদের লক্ষ্যগুলো নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করেছি। আর সোনালী ব্যাংকের ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছে, এই ব্যাংক থেকেই আমি আমার কর্মজীবন শুরু করি। সোনালী ব্যাংকের ক্ষেত্রে আমার আরও বেশি সুযোগ সুবিধা ছিল এই কারণে, সোনালী ব্যাংকের বেশিরভাগ মানুষকেই আমি চিনি; এবং আমি জানি যে তাদেরকে কিভাবে মোটিভেট করলে কাজে লাগানো যাবে। সোনালী ব্যাংকের ক্ষেত্রে বড় স্বস্তির জায়গাটা হলো, এখানে যারা কাজ করে এরা বয়সে বেশিরভাগই তরুণ। তরুণরা জেগে উঠলে যা হয়। এখানে আসলে আমার কোনো ক্রেডিট নাই। আমাদের যে অর্জনগুলো হয়েছে সেটা আমাদের সহকর্মীদের সম্মিলিত কাজের ফলে। আমরা ম্যানেজমেন্ট যে কাজটা করতে পেরেছি সেটা হলো কর্মীবাহিনীকে জাগ্রত করতে পেরেছি। এই জনবলকে যখন মোটিভেট করা সম্ভব হয়েছে তখনই এই অর্জনটা সহজ হয়েছে। করোনায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও আমরা কিন্তু নিশ্চুপ ছিলাম না। আমরা আমাদের সকল কর্মকাণ্ড স্বাভাবিকভাবেই বহাল রেখেছি। করোনা মহামারির শুরুতে সরকার যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল প্রণোদনার যে অংশ সোনালী ব্যাংকের ওপরে এসেছিল সেটা আমরা যথাসময়ে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেছি। করোনার সময় ঘরে বসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে বলা হয়েছিল। সেই সময়ে আমরা ঘরে বসে অ্যাকাউন্ট খোলার যে অ্যাপসটা তৈরি করালাম সেটা একটা বিষয়। মানুষ এখন দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে ঘরে বসে পাঁচ মিনিটে সোনালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন। এসব বিষয় আমাদের অর্জনে বড় ভূমিকা রেখেছে।

ব্যাংকিং সেবা জনগণের হাতের মুঠোয় নিয়ে যেতে আপনারা কি কি পদক্ষেপ নিয়েছেন?
প্রথম যে কথাটি বলতে হবে, সোনালী ব্যাংক দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক। ১ হাজার ২২৭টি শাখা নিয়ে আমরা কাজ করছি। সোনালী ব্যাংকের প্রতিটি শাখা এখন অনলাইন। আপনি যদি কোন একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন প্রথম দিনেই সেটা অনলাইনে চলে আসছে। ফলে যারা ব্যাংকের বর্তমান গ্রাহক আছেন তারা এই সুবিধাটা পাচ্ছেন। এর পাশাপাশি আমরা ঘরে বসে অ্যাকাউন্ট খোলার অ্যাপস করলাম। যে কারণে মানুষ আধুনিক ব্যাংকিংয়ের এই সুবিধাগুলো পেয়েছে। ব্যাংকিং সেবার আওতার বাইরে যে জনগোষ্ঠী আছে তাদের কাছে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা ইতোমধ্যেই এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে গেছি। ইতোমধ্যে আমরা এর কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। এজেন্ট নিয়োগের প্রক্রিয়াও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অটোমেশন পদ্ধতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন। সারাদেশের শতভাগ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা সয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বিতরণের পুরো কার্যক্রমটা সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমেই সম্পাদিত হচ্ছে। এছাড়াও আমরা নগদের সঙ্গে কাজ করছি। বিকাশের সঙ্গেও আমরা ‘লিয়েন অ্যাকাউন্ট’ করেছি। সোনালী ব্যাংকের যেকোন অ্যাকাউন্টের টাকা সরাসরি বিকাশে নেওয়া যায়। আবার কোনো গ্রাহক যদি প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে তার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করতে চায় বিকাশের মাধ্যমে সেটাও করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যাংকিংটাও আমরা ২০২০ সালের মার্চ মাসের মধ্যে চালু করছি। যদিও বর্তমানে আমাদের ইনহাউজ ইন্টারনেট ব্যাংকিং হচ্ছে। গ্রাহকের সুবিধার্থে যেসব প্রযুক্তিগত সেবা দেওয়া দরকার আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলায় আমরা নিজস্ব এটিএম বুথ স্থাপন করেছি। এবছর আরও ৬শ এটিএম বুথ আমরা স্থাপন করবো। পাশাপাশি ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড প্রচুর পরিমাণে বিতরণ করছি। গ্রাহকের যে চাহিদাগুলো আছে, ঘরে বসে সেবা পাওয়ার, সেই সেবাগুলো আমরা দেয়ার চেষ্টা করছি এবং অনেকাংশেই সেবা দিতে পেরেছি।

একসময় সরকারের একমাত্র ট্রেজারি ব্যাংক ছিল সোনালী। এখন অনেকগুলো ব্যাংক এই সুবিধা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতেও কিভাবে সোনালী ব্যাংকের অগ্রগতি ধরে রাখলেন?
করোনার মাঝেও আমাদের আমানত ১০ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের সেবার মান বৃদ্ধির ফলে। জনগণের যে আস্থা, গ্রাহকদের যে আস্থা, সেটা তৈরি হয়েছে; সেবার মান ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে কারণে আমাদের ডিপোজিটের হার ক্রমশ বাড়ছে। সরকারি যে চালান কর্মকাণ্ড সোনালী ব্যাংক একা করতো সেটা এখন অনেক ব্যাংকের মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে। আমরা এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছি। আমরা মনে করি, যদি সেবার মানকে অক্ষুণ্ণ রাখতে পারি তাহলে আমাদের গ্রাহক আমাদের কাছেই থাকবে। এবং সেবার মান যাতে সামনের দিকে আরও ভাল হয় সেই প্রচেষ্টাই আমরা নিয়েছি। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, সেবার মান দিয়েই আমাদের গ্রাহকদের ধরে রাখতে পারবো।

আপনার জন্ম প্রত্যন্ত সীমান্ত অঞ্চল বুড়িমারিতে। সেখান থেকে নিজেকে দেশের সবচেয়ে বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করলেন। কিভাবে নিজেকে সাফল্যের চূঁড়ায় নিয়ে আসলেন?
এটা ঠিক, প্রত্যন্ত এক অঞ্চলে আমার জন্ম। কোন এক সময় এটা দুর্ভিক্ষ অঞ্চল ছিল। এখন উন্নয়নের ছোঁয়া বাংলাদেশের সব জায়গাতেই লেগেছে। ওই অঞ্চলও এখন উন্নত হয়েছে। আমি নিজেকে গর্বিত মনে করি এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্ম নিয়ে আমি আজ এখান পর্যন্ত এসেছি। এর পেছনে আমি যেটা মনে করি, আমার কর্মস্পৃহা, কর্মের প্রতি আগ্রহ, এবং নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করা, যখন যে দায়িত্ব পেয়েছি সেটা নিষ্ঠার সঙ্গে সম্পাদন করার চেষ্টা করেছি; যে কারণে কর্তৃপক্ষ এটার মূল্যায়ন করেছেন, বাংলাদেশ সরকার মূল্যায়ন করেছেন, এবং এর ভিত্তিতেই আমি আজ এই জায়গায় আসতে পেরেছি।

সোনালী ব্যাংক নিয়ে সামনের দিনে পরিকল্পনা কী?
সোনালী ব্যাংক রাষ্ট্রের সবথেকে বড় ব্যাংক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই ব্যাংকটির নাম নিজেই করেছেন। আমরা যেটা সংযুক্ত করি: সোনার বাংলা, সোনার মানুষ, সোনালী ব্যাংক। সোনালী ব্যাংকের ওপর রাষ্ট্রের অনেক দায়িত্ব। সরকারি ব্যাংক হিসেবে মুনাফা শুধু নয়, এদেশের অপামর জনগণ যাতে ব্যাংকিং সেবা পায়, অর্থনীতির গতি যাতে সবসময় সচল থাকে, এবং এর জন্য রাষ্ট্রের একটি ব্যাংক হিসেবে যে সাপোর্ট দরকার সেই সাপোর্টগুলো দিতে চাই; এবং এই সাপোর্ট অব্যাহত রেখেই আমরা শীর্ষে থাকতে চাই। সকল ক্ষেত্রেই আমরা শীর্ষে আছি। এখন সেবার দিক দিয়েও আমরা শীর্ষে থাকতে চাই। এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ।

ব্যাংক খাতের বর্তমান সংকট কী এবং সংকট মোকাবেলার উপায় কী?
আমাদের নন পারফর্মিং লোন (খেলাপি ঋণ) সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই নন পারফর্মিং লোন আজ একদিনে ঘটেনি। আমরা যখন নতুন করে শিল্পায়নে গেছি, নতুন করে ঋণ প্রবাহ বেড়েছে, অনেক শিল্প ভাল করেছে, অনেক শিল্প খারাপ করেছে। অনেক শিল্প থেকে টাকা ফেরত আসেনি। ফলে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। শুধু এই কারণেই নয়, অনেক সময় ইচ্ছাকৃতও খেলাপি হয়েছে। ফলে নন পারফর্মিং লোনটা যত বেড়েছে পারফর্মিং লোনের ওপর তত চাপ এসেছে। এই চাপের কারণে ভাল গ্রাহকদের অনেক সময় পেনাল্টি দিতে হয়েছে। আমরা মনে করি, নন পারফর্মিং লোনটা আমরা যত দ্রুত কমিয়ে আনতে পারবো তত ব্যাংকের স্বাস্থ্য ভাল হবে। নন পারফর্মিং লোন কমিয়ে আনার পদক্ষেপ ইতোমধ্যে সরকারও নিয়েছে। ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে অনেক ঋণ নিয়মিত হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে এর মধ্যে কোভিড-১৯ এসেছে। এটা কারও জানাই ছিল না। এটাকে বিবেচনায় নিয়ে আগামীতে ঋণগুলো কিভাবে নিয়মিত রাখা যায় সেটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ এবং সেই লক্ষ্যেই আমাদের কাজ করতে হবে।

করোনা মহামারি আর্থিক খাতের জন্য নতুন কোন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে কী?
করোনা মানুষকে যেমন আতঙ্কিত করেছে, তেমনি নতুন চিন্তা ভাবনা করার সুযোগ করে দিয়েছে। বিশেষ করে, সরকারি ব্যাংকগুলো প্রযুক্তির দিক দিয়ে অনেক পেছনে ছিলাম। সোনালী ব্যাংকেরই আগামি ৫ বছরের পরিকল্পনা ছিল প্রযুক্তিগত বিভিন্ন বিষয় বাস্তবায়নের। কিন্তু করোনাকালে আমাদের বিকল্প চিন্তা করতে হয়েছে। প্রযুক্তিগত যে উন্নয়নটা আমরা ৫ বছরে করার পরিকল্পনা করেছিলাম তার বেশিরভাগই এই এক বছরে অর্জিত হয়েছে। আমি মনে করি, প্রযুক্তির দিক থেকে করোনাকালে আমাদের চিন্তা প্রসারিত হয়েছে। আগে আমরা এক ধরনের সেবা নিয়ে কাজ করতাম। এখন নতুন চিন্তা এসেছে, আরও ভিন্নভাবে আমরা অর্থায়নগুলো করতে পারি কিনা। যেমন, ওষুধ শিল্প, সুরক্ষা পণ্য ও পোশাক, মাস্ক; এগুলোতে যদি এখন আমরা ফোকাস করি তাহলে ব্যাংক খাত ও ব্যবসায়িরা লাভবান হবে।

সোনালী ব্যাংকের কর্পোরেট গভর্নেন্স সম্পর্কে বলুন?
সোনালী ব্যাংকের কর্পোরেট গভর্নেন্স অনেক ব্যাংকের তুলনায় ভাল এবং অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় ভাল। আমাদের পরিচালনা পর্ষদে এখন বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। এবং তাঁরা অত্যন্ত সততার সঙ্গে কাজ করছেন। সম্প্রতি আমরা ‘হুইসেল ব্লোয়ার’ নামে একটি পলিসি করেছি। এই পলিসির আওতায় একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে ন্যায়পাল হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি হলেন পর্ষদের অডিট কমিটির চেয়ারম্যান। যে কেউ নিঃশঙ্কোচে তাঁর কাছে তথ্য-প্রমাণসহ অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন এবং তার পরিচয় গোপন থাকবে।

ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে আপনার সততা প্রশ্নাতীত। সৎ থাকার সাহস ও শক্তি কোথায় পেলেন?
আমি মনে করিনা সৎ থাকাটা কোন গুণ; এটা মানুষের স্বাভাবিক বৃত্তি হওয়া উচিত। যদি আপনি আপনার নিজের জায়গায় অবস্থান পরিস্কার রাখেন আপনি কথা বলার সাহস পাবেন। আপনার নিজের দুর্বলতা থাকলে শক্তভাবে কথা বলতে পারবেন না। কাজেই এটাকে আমি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখিনা। মানুষ সৎ থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

সৎ থাকা কি চ্যালেঞ্জের বিষয় নয়?
আমি মনে করিনা এটা কঠিন কোনো কাজ। আপনার অবস্থানে পরিস্কার থাকলে আপনার সহকর্মীরাও আপনাকে অনুসরণ করবে। মাথায় পঁচন হলে নিচের দিকে আপনি পঁচন রোধ করতে পারবেন না। মাথা যত পরিস্কার থাকবে নিচের দিকে পঁচন রোধ ততটাই হবে। আমি মনে করি, স্বচ্ছ থাকা মানুষের খুব স্বাভাবিক একটি গুণ।

আপনার জীবনের আদর্শ কে?
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমার জীবনের আদর্শ; যাঁর সৃষ্টি না হলে বাংলাদেশ হতো না। মাত্র ৫০ বছরে তিনি একটি দেশ সৃষ্টি করেছেন। তাঁর অসমাপ্ত জীবনী যদি পড়ি দেখবেন, একটা মানুষের এত অল্প সময়ে এত কিছু অর্জন! আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে যদি অনুসরণ করতে পারি তাহলে আমরা নিশ্চয়ই ভাল থাকবো এবং ভাল কর্ম করতে সক্ষম হবো।