গত একটি বছর গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির চিকিৎসাসহ অন্যান্য বিষয়ে সার্বিক খোঁজ-খবর নিয়েছিলেন তিনি। সব রকম সহায়তার হাত বাড়িয়ে ছিলেন। গাজীপুর-৪ আসনের সেই সাংসদ, বঙ্গতাজ তাজউদ্দিন আহমদের মেয়ে ও সাহিত্যিক সিমিন হোসেন রিমি এবং তাঁর দুই ছেলে সস্ত্রীক করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন।
সাংসদ সিমিন হোসেন রিমি গত ২৬ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় আইসোলেশনে ছিলেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তিনি রাজধানীর ইউনাইডেট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর স্বামী মোস্তাক হোসাইন।
মোস্তাক হোসাইন জানান, রিমির করোনা পজিটিভ ফলাফল পাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা নমুনা দিলে তাঁদের দুই ছেলে রাজিব হোসাইন ও রাকিব হোসাইন এবং দুই ছেলের স্ত্রীদের কোভিড-১৯ ধরা পড়ে। বর্তমানে তাঁরা হোম আইসোলেসনে রয়েছেন।
মোস্তাক হোসাইন আরও জানিয়েছেন, সিমিন হোসেন রিমির সর্দি-জ্বর রয়েছে। সোমবার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কিছুটা কমে গেলে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে যান তিনি। সেখানে বেশ কিছু পরীক্ষা করান। মঙ্গলবার দুপুরে চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
মোস্তাক হোসাইন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গত ২৫ মার্চ নমুনা দেন সিমিন হোসেন রিমি। তার পরের দিন নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসে। তখন থেকেই তিনি বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তাঁর সর্দি-জ্বর দেখা দেয়।
তাঁদের ছেলেরা স্ত্রীসহ এখন অনেকটাই সুস্থ আছেন। তাঁদের শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। তাঁরা বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁদের সবার জন্য দোয়া চেয়েছেন মোস্তাক হোসাইন।
জানা যায়, মানবিক কাপাসিয়া গড়ার রূপকার সাংসদ সিমিন হোসেন রিমি গত একটি বছর কাপাসিয়া উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির চিকিৎসাসহ অন্যান্য বিষয়ে সার্বিক খোঁজ-খবর নিয়েছেন। সব রকম সহায়তার হাত বাড়িয়ে ছিলেন। সেই সিমিন হোসেন রিমি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরে কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী পরিবার তথা কাপাসিয়াবাসীর মনে হতাশা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, অসাধারণ মানবীয় গুণাবলীর অধিকারী সাংসদ সিমিন হোসেন রিমির করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরে তাঁর নির্বাচনী এলাকা কাপাসিয়া উপজেলার সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তারা কাপাসিয়ার বিভিন্ন মসজিদে দোয়ার আয়োজন করছেন। অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়েও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসমত আরা জানান, শুরু থেকেই উপজেলাজুড়ে করোনা সংক্রমিতদের পাশে সদা জাগ্রত সিমিন হোসেন রিমি। ঝুঁকি নিয়ে ঘরে ঘরে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। নিজের উদ্যোগে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন রোগীদের। মানবিক সেবা দিয়ে এখন তিনি নিজেই আক্রান্ত।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবদুস সালাম সরকার জানান, করোনা মহামারি শুরুর পর ঝুঁকিতে পড়ে গর্ভবতী মায়েরা। ঘরে ঘরে তাদের চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে ইউনিয়নভিত্তিক উদ্যোগ নিয়েছিলেন সাংসদ। ওই উদ্যোগে গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত প্রসবকালে মাতৃমৃত্যু এখন শূন্য। এ ছাড়া শিশুদের জন্য ঘরে ঘরে তিনি শিশুখাদ্য পৌঁছে দিয়েছেন।
বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ


























