১১:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

লকডাউনের তৃতীয় দিনে সড়কে বেড়েছে গাড়ি

করোনা মহামারি রোধে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের (লকডাউন) তৃতীয় দিনে রাজধানীতে বেড়েছে রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা। পাশাপাশি বাসা থেকে বাইরেও বের হয়েছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ।

বের হওয়া প্রায় সবারই দাবি ‘জরুরি’ প্রয়োজন। তবে অনেকেই যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেননি। ফলে বেশ কয়েকজনকে জরিমানার মুখেও পড়তে হয়েছে।

সাপ্তাহিক কর্মদিবসের প্রথম দিন হওয়ায় সড়কগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহলও বেড়েছে। রোববার (২৫ জুলাই) সকালে উত্তরা, গাবতলী, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, শাহবাগ, গুলিস্তান, মতিঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে বাইরে আসার কারণ জানতে চাইছেন।

জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যানবাহন নিয়ে রাস্তায় বের হওয়া এবং মাস্ক পরিধানসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষ রাস্তায় চলাচল করছে কিনা তা কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। সন্তোষজনক জবাব না পেলে যানবাহন ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

পুলিশের পাশাপাশি রাজধানীতে সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) সদস্যরা বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে তৎপর রয়েছেন।

শাহবাগ এলাকায় সকাল থেকে পুলিশের অপরাধ ও ট্রাফিক বিভাগ চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহন থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসুর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।

পলাশ কুমার বসু সাংবাদিকদের বলেন, লকডাউন চলাকালে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়া যাবে না এমন নির্দেশনা থাকলেও অনেকে বের হচ্ছেন। আমরা যাচাই করার পরই সবাইকে যেতে দিচ্ছি। আর প্রয়োজন ছাড়া যারা বের হয়েছেন তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

মোহাম্মদপুরে চলছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের যৌথ অভিযান। কঠোর লকডাউনে যারা বিনা কারণে বাইরে বের হয়েছেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ক্যাপ্টেন ইমরান কবীরের সহায়তায় চেকপোস্ট পরিচালনা করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা সিদ্দীকা বেগম।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা সিদ্দীকা বেগম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অনেকেই মাস্ক ছাড়া বের হচ্ছেন, তাদের সতর্ক করা হচ্ছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত তিনজকে জরিমানা করা হয়েছে।’

এবারের লকডাউন বাস্তবায়নে ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’, বিধানের আওতায় মাঠপর্যায়ের কার্যকর টহল নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক সেনা মোতায়েন রয়েছে।

ওয়ারী জোনের চারটি প্রধান পয়েন্ট- পোস্তগোলা, মুন্সিখোলা, সাইনবোর্ডের কুয়া মসজিদ ও সুলতানা কামাল ব্রিজের গোড়ায় সড়কের দুই দিকেই ট্রাফিক পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। সকাল থেকে সেখানেও ব্যক্তিগত যানবাহন বেশি ছিল বলে জানান ট্রাফিক পুলিশের ওয়ারী জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার গোবিন্দ চন্দ্র পাল।

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে ঈদুল আজহার পর গত ২৩ জুলাই থেকে শুরু হয় ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। চলবে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত। এর আগে ১ থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল সরকার। পরে তা ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু ঈদুল আজহার কারণে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছিল। ঈদের পর আবার নতুন করে ১৪ দিনের বিধিনিষেধে বন্দি হয় দেশ।

এদিকে, বাইরে বের হওয়ায় শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশ ৩৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ডিএমপির ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৩৭ জনকে ৯৫ হাজার ২৩০ টাকা জরিমানা করেছেন। আর র‍্যাব ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২১২ জনকে ১ লাখ ৯১ হাজার ৪৭০ টাকা জরিমানা করেছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

লকডাউনের তৃতীয় দিনে সড়কে বেড়েছে গাড়ি

প্রকাশিত : ০৪:৩৯:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ জুলাই ২০২১

করোনা মহামারি রোধে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের (লকডাউন) তৃতীয় দিনে রাজধানীতে বেড়েছে রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা। পাশাপাশি বাসা থেকে বাইরেও বের হয়েছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ।

বের হওয়া প্রায় সবারই দাবি ‘জরুরি’ প্রয়োজন। তবে অনেকেই যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেননি। ফলে বেশ কয়েকজনকে জরিমানার মুখেও পড়তে হয়েছে।

সাপ্তাহিক কর্মদিবসের প্রথম দিন হওয়ায় সড়কগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহলও বেড়েছে। রোববার (২৫ জুলাই) সকালে উত্তরা, গাবতলী, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, শাহবাগ, গুলিস্তান, মতিঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে বাইরে আসার কারণ জানতে চাইছেন।

জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যানবাহন নিয়ে রাস্তায় বের হওয়া এবং মাস্ক পরিধানসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষ রাস্তায় চলাচল করছে কিনা তা কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। সন্তোষজনক জবাব না পেলে যানবাহন ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

পুলিশের পাশাপাশি রাজধানীতে সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) সদস্যরা বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে তৎপর রয়েছেন।

শাহবাগ এলাকায় সকাল থেকে পুলিশের অপরাধ ও ট্রাফিক বিভাগ চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহন থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসুর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।

পলাশ কুমার বসু সাংবাদিকদের বলেন, লকডাউন চলাকালে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়া যাবে না এমন নির্দেশনা থাকলেও অনেকে বের হচ্ছেন। আমরা যাচাই করার পরই সবাইকে যেতে দিচ্ছি। আর প্রয়োজন ছাড়া যারা বের হয়েছেন তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

মোহাম্মদপুরে চলছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের যৌথ অভিযান। কঠোর লকডাউনে যারা বিনা কারণে বাইরে বের হয়েছেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ক্যাপ্টেন ইমরান কবীরের সহায়তায় চেকপোস্ট পরিচালনা করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা সিদ্দীকা বেগম।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা সিদ্দীকা বেগম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অনেকেই মাস্ক ছাড়া বের হচ্ছেন, তাদের সতর্ক করা হচ্ছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত তিনজকে জরিমানা করা হয়েছে।’

এবারের লকডাউন বাস্তবায়নে ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’, বিধানের আওতায় মাঠপর্যায়ের কার্যকর টহল নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক সেনা মোতায়েন রয়েছে।

ওয়ারী জোনের চারটি প্রধান পয়েন্ট- পোস্তগোলা, মুন্সিখোলা, সাইনবোর্ডের কুয়া মসজিদ ও সুলতানা কামাল ব্রিজের গোড়ায় সড়কের দুই দিকেই ট্রাফিক পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। সকাল থেকে সেখানেও ব্যক্তিগত যানবাহন বেশি ছিল বলে জানান ট্রাফিক পুলিশের ওয়ারী জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার গোবিন্দ চন্দ্র পাল।

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে ঈদুল আজহার পর গত ২৩ জুলাই থেকে শুরু হয় ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। চলবে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত। এর আগে ১ থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল সরকার। পরে তা ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু ঈদুল আজহার কারণে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছিল। ঈদের পর আবার নতুন করে ১৪ দিনের বিধিনিষেধে বন্দি হয় দেশ।

এদিকে, বাইরে বের হওয়ায় শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশ ৩৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ডিএমপির ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৩৭ জনকে ৯৫ হাজার ২৩০ টাকা জরিমানা করেছেন। আর র‍্যাব ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২১২ জনকে ১ লাখ ৯১ হাজার ৪৭০ টাকা জরিমানা করেছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ