০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

শহরের মানুষ সচেতন, মফস্বলে তথ্য জানানো প্রয়োজন

মোহাম্মদ মিজানুর রহমান

সূচনাঃ চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতা নাগরিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত এবং তথ্য প্রাপ্তির অধিকার এর অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই সরকারী স্বায়ত্বশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং সরকারী বা বিদেশী অর্থায়নে পরিচালিত বেসরকারী সংস্থার কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করনের জন্য তথ্য অধিকার আইন,২০০৯ পাশ করা হয়েছে। এতে সরকার দেশে-বিদেশে প্রশংসাও অর্জন করেছে।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বাস্তবায়ন নিয়ে। আইনটি পাশ করার পূর্বে ,আইনটি পাশ করার পক্ষে বিভিন্ন এনজিওর জোরালো ভূমিকা ছিল। তবে বর্তমানে আইন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় সরকারি কর্মকর্তা,কর্মচারী ও জনগনকে উদ্ভুদ্ধকরণমূলক কার্যক্রমে হাতে গোনা কয়েকটি এনজিও ছাড়া বেশীর ভাগ এনজিও-ই দায়িত্ব শেষ মনে করছে । ফলে আইনটির বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে।

তথ্য পাওয়া জনগনের অধিকার এ বিষয়টি তৃনমূল পর্যায়ের মানুষকে জানতে হবে। পাশাপাশি তথ্য দিয়ে তথ্য লুকিয়ে রাখা এক ধরনের সামাজিক অপরাধ তা সরকারী/বেসরকারী পর্যায় ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা জরুরী। জেলা তথ্য অফিসকে তথ্য ব্যাংকে পরিণত করার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। নামেই জেলা তথ্য অফিস কাজে তার উল্টো। অস্থায়ীভাবে তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা দিয়ে তথ্য আদান-প্রদান করা কঠিন হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা তার মূল দায়িত্ব নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। তা ছাড়া ঐ কর্মকর্তা অন্যত্র বদলি কিংবা প্রমোশন নিয়ে চলে গেলে তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা পদটি শূন্য থাকে। এতে অঙ্কুরেই তথ্য আদান-প্রদানে উভয়ই নিরুৎসাহিত হয়। আবার দেখা গেছে তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ নিয়ে অন্য কাজ করছেন। এতে সরকারের উদ্দেশ্য সফল সম্ভব নয়।

এবার আশা যাক তথ্য কী?
তথ্য এক ধরনের বার্তা, যা জনগনের জন্য সরকারী-বেসরকারী সুযোগ সুবিধার আইন-কানুন বা নীতিমালা । এ আইন-কানুন বা নীতিমালা না জানার কারণে মানুষ প্রতিনিয়ত সরকারী-বেসরকারী সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আবার জন্মের পর থেকেই আমরা নানান রকমের তথ্য পাই, সেসব তথ্য বা বার্তা আমাদের জানা-বোঝা-চেনা সবকিছুকে সহজ করে তোলে। নিচে উদহারণ দিয়ে তথ্যের আদান-প্রদান বোঝানো হলো:

তথ্য গ্রহণকারি ঃ ইউনিয়ন পরিষদের কাজ কয়টি?

তথ্য প্রদানকারি : ইউনিয়ন পরিষদের কাজ ৪৮টি (আবশ্যিক কাজ ১০টি, সাধারন কাজ ৩৮টি)

এবার জানবো তথ্য কেন প্রয়োজন?
তথ্যের অভাবে মানুষের জীবন অচল হয়ে পড়ে। সঠিক তথ্য না পেলে অনেক সময় মানুষ অনেক প্রকারের অসুবিধা ও ক্ষতির সম্মূখীন হয়। তাই প্রতিটি কাজ সহজ করার জন্য তথ্য প্রয়োজন। যেমন-সঠিক সারের ব্যবহার না জানলে একজন কৃষক বুঝতে পারবে না যে তার ফসলের জন্য কোন সার কি পরিমানে প্রয়োজন। সুতরাং তাকে বিষয়ের উপর সঠিক তথ্য জানতে হবে। আবার, কোথায় গেলে একটি রোগের সঠিক চিকিৎসা পাওয়া যাবে-সে তথ্যও সকলের জানা থাকা প্রয়োজন। তথ্যের ঘাটতির কারণে সাধারন জনগণ তাদের যথাযথ উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে পড়ে। তাই সকলের বেঁচে থাকা এবং উন্নতির জন্য সঠিক ও প্রয়োজন মাফিক তথ্য প্রয়োজন।

বুঝতে চেষ্টা করি অধিকার কী?
প্রতিটি মানুষ জন্মের সাথে সাথে এক প্রকারের দাবী নিয়ে পৃথিবীতে আসে। আর সেই দাবী হচ্ছে সুন্দরভাবে, ভালো করে বেচেঁ থাকবার অধিকার। অধিকার হলো এমন এক প্রকারের মানসিক অর্জন যা প্রকৃতি আমাদেরকে দেয়। কিন্তু সমাজে একত্রে বসবাস করবার সময় মানুষ একধরনের নিয়ন্ত্রণ কাঠামো তৈরী করে, যার মূল দায়িত্বে থাকে সরকার। একটি দেশের সরকার যেহেতু ঐ দেশের সকল কর্মকান্ড দেখাশোনা করে, তাই জনগণের অধিকার রক্ষা করার দায়িত্বও তার হাতে থাকে। মানুষের বেচেঁ থাকা, বেড়ে উঠা ও বিকাশের জন্য যা প্রয়োজন তাই হলো অধিকার। আইনবিদ সেমন্ড খুব সহজ করে বলেছেন, “আমার জন্য অন্যের যা করা প্রয়োজন তাই অধিকার” মূলত অধিকার হচ্ছে একটি নায্য দাবী যা আইনগত ও নৈতিকতার মানদন্ডে স্বীকৃত।

অধিকার হলো এক প্রকার পাওনা। মানুষ অন্যের কাছে বা রাষ্ট্রের কাছে আইনসঙ্গত ভাবে যা দাবী করতে পারে,তাকে অধিকার বলে। অধিকার একটি সামাজিক বিষয়। অধিকার বলতে মানুষের বিকাশের জন্য সুযোগ-সুবিধার দাবিকে বোঝায়, যে দাবির নৈতিক কিংবা আইনগত ভিত্তি থাকে। জন্মলাভের পর প্রথম মানুষের নৈতিক অধিকারের স্বীকৃতি দেয় সমাজ। পরে দাবির গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্র এর আইনি স্বীকৃতি দেয় এবং বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করে। ফলে তা আইনে পরিণত হয়। সকল মানুষেরই পাঁচটি মৌলিক চাহিদা রয়েছে। এগুলো হলো- বাসস্থান, খাদ্য,বস্ত্র,শিক্ষা এবং চিকিৎসা। বর্তমানে মানুষের জীবনযাত্রার ধরন আরও উন্নত ও আধুনিক হয়ে উঠবার কারনে অন্যান্য কিছু চাহিদা এগুলির সাথে যোগ হয়েছে। যেমন-বিনোদন, জানার ইচ্ছা ইত্যাদি। এই চাহিদা গুলি পরবর্তীতে দাবীতে পরিণত হয়। মানুষ যখন তার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি জানতে পারেনা, তার চাহিদা, প্রয়োজন, সমস্যা-সম্ভবনা ইত্যাদি অন্যেকে জানাতে বা জানতে পারেনা – তখনই সে তথ্য থেকে বা তার তথ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। তবে অধিকার শুধু রাষ্ট্র বা সমাজ দেবে তাই নয়, ব্যক্তি পর্যায়েও সকলে এর নিশ্চিতকরণে দায়বদ্ধ।

তথ্য অধিকার : আইনগত ভিত্তি

সাধারন জনগণ বা গ্রামীণ মানুষেরা তাদের অধিকারের ব্যপারটি অনেক সময় বুঝতে পারেনা। অন্যভাবে বলতে গেলে, আমাদের বর্তমান সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় তথ্যের আদান-প্রদানের কোন সহজ উপায় তেমন একটা নাই। ফলে নিজেদের অধিকার সর্ম্পকে লোকে জানতে পারেনা। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানে সকল নাগরিকের দায়িত্ব ও অধিকারের পাশাপাশি তথ্য জানা ও জানানোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে দেশের সকল ক্ষমতার মালিক জনগন। দেশের সকল সরকারী কাজকর্ম জনগণের মঙ্গলের জন্য পরিচালিত হয়ে থাকে। এসকল কাজ আবার সাধারণ জনগণের অর্থে পরিচালিত হয়। সুতরাং এসব কর্মকান্ড যাতে জনগনের প্রয়োজন অনুসারে পরিচালিত হয়, সেজন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার তাদের অংশগ্রহণ থাকা প্রয়োজন। সরকারের গৃহীত প্রতিটি পদক্ষেপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা জনগণের অধিকার।

সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার সংরক্ষন করা হয়েছে। এর থেকে বোঝা যায় যে, জীবনকে রক্ষা করতে, সুন্দর করতে এবং মর্যাদাপূর্ণ জীবন যাপন করতে যা কিছু দরকার সেসব কিছুর অধিকার আমাদের রয়েছে। সেইসাথে যেসব বিষয় আমাদের জীবনকে সরাসরি বা খুব কাছ থেকে প্রভাবিত করে সেসব বিষয় সম্পর্কে জানার অধিকার আমাদের রয়েছে।
সংবিধানে ৩৯নং অনুচ্ছেদে সংবাদ দেয়া-নেয়া, সংবাদ দাতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সংরক্ষিত হয়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের তথ্য পাওয়ার পথ আরও প্রসারিত হয়েছে।

তথ্য পাওয়ার অধিকার
তথ্যকে বড় করে দেখতে গেলে, পরিশুদ্ধ করে দেখতে গেলে তা হলো-যে কোন সভার কার্য বিবরণী,সরকারী নীতি ও সিদ্ধান্তসমূহ, সরকারী আদেশ ও আইন, বিশেষ ধরনের হিসাব, নথিপত্র ইত্যাদি। কিন্তু দেখা যায়, সাধারণ মানুষ এসব জানবার সুযোগ তেমন একটা পায়না। একটি দেশের প্রতিটি জনগণেরই রয়েছে তথ্যে প্রবেশাধিকার। এই অধিকার সকল মানুষের জন্য কোন শ্রেণী বা দলের জন্য নয়। এই অধিকার সকল মানুষের সমানভাবে প্রাপ্য, কারো কম বা বেশী নয় এবং কোন বিশেষ মর্যাদা বা সম্পর্কের উপর নির্ভরশীল নয়। এই অধিকার এমনই এক আদায়যোগ্য অধিকার যে তা আদায়ের লক্ষ্যে মানুষকে সচেতন ও তৎপর হতে হবে। একই সাথে এই অধিকারে ঘাটতি হলে তা পাবার জন্য সকলকে সোচ্চার ও প্রতিবাদী হতে হবে। কেননা এই অধিকার মানুষের বেঁচে থাকবার জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি অধিকার।

গ্রামীণ মানুষের তথ্যপ্রাপ্তি ঃ
বাংলাদেশের ৮০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। তাদের জীবন-জীবিকা, দৈনন্দিন কর্মকান্ড, চিন্তা-চেতনা সবকিছুই গ্রামীণ পরিবেশকে ঘিরে। দেখা যায় যে, গ্রামে যোগাযোগ বা প্রযুক্তিগত সুবিধা (যেমন-টেলিফোন,রেডিও,স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদপত্র, টেলিভিশন ইত্যাদি) কম থাকায় লোকজন তথ্য কম পায়। তাই শহরের মানুষদের থেকে তাদের উন্নয়ন বা জানা-বোঝা কম হয়। আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে গ্রামের সাধারণ মানুষ একটু কম শিক্ষিত হওয়ায় এই সমস্যাটি বড় আকার ধারণ করে। তারা তথ্যের অভাবে অনেক দিক দিয়েই পিছিয়ে পড়ে। তাই ব্যালেন্স করতে গ্রামের মানুষকে তথ্য জানানো বেশি প্রয়োজন।গ্রামের মানুষেরা যে সকল দিক থেকে তথ্যের অভাবে ভুগে তার মধ্যে রয়েছে শিক্ষা বিষয়ক তথ্য, চিকিৎসা বষিয়ক তথ্য ,স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক তথ্য, কিভাবে অধিক ও লাভজনক চাষবাদ করা যায় সেবিষয়ক তথ্য, নিরাপদ পানি পান করার বিষয়সহ এরকম আরও অনেক তথ্যের অভাব। আমরা ছোট ছোট কিছু উদাহরণের মধ্যে দিয়ে সম্পূর্ণ ব্যপারটিকে বোঝার চেষ্ট করতে পারি ।

দারিদ্রের ক্ষেত্রে তথ্যের ভূমিকা :

স্থাবর-অস্থাবর, সহায়-সম্পত্তি, শিক্ষা প্রভৃতির কম বা বেশী থাকার ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় মানুষের সামাজিক অবস্থান। তাই কেউ হয় ধনী, আবার কেউ হয় গরীব। সাধারনত দেখা যায় যে, গ্রাম অঞ্চলের বেশীরভাগ মানুষই গরীব বা দরিদ্র হয়ে থাকে। এই দারিদ্রের অন্যতম কারণ হলো-
১) তাদের তথ্যে ঘাটতি,
২) সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য না পাওয়া,
৩) তথ্যকে কিভাবে ব্যবহার করতে হবে সেটা না জানা,
৪) তথ্যটি ঠিকভাবে বুঝতে না পারা প্রভৃতি।

এ ছাড়াও যেসব কারণে গ্রামীণ জনগণ তথ্য থেকে বঞ্চিত হয় এবং ফলস্বরূপ দরিদ্র থাকে সেগুলো হল:

 তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে দাপ্তরিক বিধিনিষেধ
 গ্রাম অঞ্চলে গণমাধ্যম তথা তথ্যর বাহন না পৌছানো
 প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রামীণ জনগণের বসবাস
 তথ্যর বাহনের কাছে পৌছানোর অসুবিধা, যেমন-সংবাদপত্র পড়তে না পারা, রেডিও শুনতে না পারা, রেডিও-টিভি প্রভৃতি না থাকা
 নিরক্ষরতা
 পুরাতন যুগের মন-মানসিকতা বা কুসংস্কার
যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়া
দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে তথ্য :
শুধুমাত্র একটি বিশেষ সময়ে বা বিশেষ ঘটনার জন্য যে তথ্য প্রয়োজন, তা কিন্তু নয়। আমাদের প্রতিদিনের জীবনে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই তথ্য দরকার। তথ্য মানুষকে সচেতন করে, ফলে তার রোজকার কাজ-কর্ম হয়ে ওঠে সহজ ও সুন্দর। তথ্য মানসিকভাবে শক্তি ও সাহস দেয়, ফলে কাজ করার দক্ষতা বাড়ে গ্রামীণ মানুষের প্রতিদিনের জীবন-যাপন পদ্ধতি এখনও সেই পুরানো আমলের রয়ে গেছে, তাই তারা নানান রকমের সমস্যার মুখোমুখি হয়। তথ্যের অভাবে তৈরী হয় অনিয়ম ও অনাচার। ফলে সকল শ্রেণীর মানুষই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তথ্যের ঘাটতি নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ সকলকে তাদের রোজকার কাজে-কর্মে বাধা দান করে ফলে সকলের জীবনের গতি ধীর করে দেয়।

গ্রামীণ মানুষেরা কিভাবে তথ্য সহকারে উন্নতি করবে?
গ্রামীণ মানুষের জীবন পদ্ধতির বহু জায়গায় তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। যে কারণে তারা উন্নতি ও গতিময় জীবন থেকে পিছিয়ে থাকে। এই সকল ঘাটতির জায়গাগুলি খুজেঁ বের করে যদি সেখানে ঠিকঠাকমত তথ্যের যোগান দেওয়া যায়, তাহলে গ্রামের মানুষের জীবন-যাপন হয়ে উঠবে অনেক সুন্দর ও সচ্ছল। তারা তখন নিজেদের ভালো-মন্দ বুঝতে পারবে, সন্তানদের সঠিক শিক্ষা দিতে পারবে, স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হবে।

০ সঠিক চাষাবাদ পদ্ধতি, সারের ব্যবহার, সেচ, বীজ সংরক্ষণ ও ব্যবহার প্রভূতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা তাকলে গ্রামের চাষীরা সঠিক ও সুন্দরভাবে কৃষিকাজ করতে পারবে। ফরে তাদের দারিদ্র দূর হবে এবং তারা উন্নত জীবনাত্রা পাবে।

০ শিক্ষার অভাবে গ্রামের লোকেরা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করতে পারেনা।তাই সঠিক শিক্ষা ও শিক্ষা সর্ম্পকিত যাবতীয় তথ্য পেলে তারা অত্যন্ত উপকৃত হবে।

০ গ্রামে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে অনেক ধরণের অসুখ-বিসুখ দেখা দেয়। তাছাড়া পুষ্টিগুণ, টিকা দেওয়া, খাবারের মান ইত্যাদির বিষয়ে সঠিক তথ্য জানার অভাব মানুষকে অনেক গুরুতর সমস্যা এমনকি মৃত্যুর মুখোমুখি করে দেয়।

০ স্থানীয় প্রসাশন, দাপ্তরিক কাজকর্ম, অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রভৃতি সর্ম্পকে গ্রামের মানুষ অনেক কম জানতে পারে। আর তাই তারা এসব ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করতে পারেনা। ফলে তার্ াতাদের নিজস্ব অধিকার ও উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়। এর মূল কারণই হলো প্রসাশনিক কাঠামো ও তাদের কর্মকান্ড সর্ম্পকিত তথ্য থেকে গ্রামের লোকজনের বিচ্ছিন্নতা। তাই অন্তত: এনজিওরা থথ্য সঅধিকার বিষয়ক বিভিন্ন সভা ,সেমিনার,কর্মশালা , আলোচনা সভা, গোলটেবিল বৈঠক ,মুক্ত আলোচনাসহ যেকোন ধরনের অনুষ্ঠান গ্রমীন পর্যায়ে তথা বিকেন্দ্রীকরন করা।

আমরা উপরে যে কয়টি উদাহারণ দেখলাম, এর সবগুলির মূলেই রয়েছে গ্রামীণ মানুষের সঠিক মময়ে সঠিক তথ্য না পাওয়া। যার ফল স্বরূপ তারা দরিদ্র থেকে যায় এবং মানুষ হিসেবে অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় তাই গ্রামীণ জনগনের সঠিক উন্নয়নের জন্য চাই তথ্য ও তথ্য পাওয়ার অধিকার।

কোথায় গেলে তথ্য পাওয়া যাবে:
গ্রামীণ মানুষের অবস্থার উন্নতির জন্য তথ্য প্রয়োজন। কিন্তু কোথায় গেলে সেই তথ্য পাওয়া যাবে তা আবার অনেক সময় অজানা থেকে যায়। এখানে সেরকম কিছু সমস্যার সমাধান দেখানো হল :

 স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা হলে যেতে হবে ইউনিয়ন এবং থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ও স্যাটেলাইট ক্লিনিক, পারিবারিক স্বাস্থ্য ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, জেলা স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর স্থানীয় অফিস ইত্যাদি জায়গায়।

 জমি-জমা, দলিল সংক্রান্ত বিষয়াদিতে যেতে হবে ইউনিয়ন তহশিলদার অফিস, থানা ভূমি অফিস, রেজিস্ট্রি অফিস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কার্যালয়।

 কৃষি সংক্রান্ত সমস্যার জন্য যেতে হবে স্থানীয কৃষি অফিসারের নিকট, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসার, বøক সুপারভাইজার, বিএডিসি, এগ্রো সার্ভিস কেন্দ্র, মৃত্তিকা সম্পদ ইনষ্টিটিউট প্রভূতি জায়গায়।

 শিক্ষা বিষয়ক তথ্যের জন্য যেতে হবে উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জেলা তথ্য অফিস ও জেলা পরিসংখ্যান অফিসে, উপবৃত্তি প্রকল্প, গণশিক্ষা বিভাগের অফিসে।

 আইনি সহায়তা বিষয়ক তথ্য পাওয়া যাবে গ্রাম আদালত, নিকটস্থ থানা পারিবারিক আদালত, জেলা আইনি সহায়তা কেন্দ্র, জেলা জজের আদালত ইত্যাদি জায়গায়।

 প্রশাসনিক তথ্য সহায়তা পাবার জন্য যেতে হবে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন, কমিশনারগন প্রমুখের কাছে।

 প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যের জন্য যেতে হবে সূর্যের হাসি বা সবুজ ছাতা চিহ্নিত ক্লিনিকে। এছাড়াও উপরে বর্ণিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতেও এই সমস্যায় যেতে পারে।

 সামাজিক সমস্যাদি এবং উন্নয়নমূলক বিষয়ে তথ্যের জন্য অফিস, উপজেলা পরিষদ বা উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তার নিকট যাওয়া যেতে পারে।

 নারী উন্নয়ন, নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন প্রভৃতি সমস্যায় যেতে হবে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, স্থানীয় থানা ইত্যাদি স্থানে। এছাড়া যদি ঐ এলাকায় কোন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এই ধরনের সেবা ও সহায়তা দিয়ে থাকে, তবে তাদের নিকটও যাওয়া যেতে পারে।

 মৎসচাষ সংক্রান্ত সমস্যা ও উন্নয়ন মূলক তথ্যের জন্য যাওয়া যেতে পারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার নিকট।

 ঋণ সংক্রান্ত তথ্য পাবার জন্য গ্রামীণ মানুষ যাবে উক্ত এলাকায় যে সকল বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্র ঋণ দেয় তাদের নিকট, কৃষি ব্যংক, সোনালী ব্যংকসহ অনান্য সরকারী ও বেসরকারী ব্যংকে।

 পরিবেশ বিষয়ক তথ্য জানার জন্য যেতে হবে স্থানীয় বন বিভাগের অফিসে।

 দুর্যোগের সময় যেতে হবে ইউনিয়ন/উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ,জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা, সাইক্লোন সেন্টার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো অথবা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির আশ্রয়নকেন্দ্রে।

 কর্মসংস্থান বিষয়ে জানতে হলে যেতে হবে উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।

 পয়: নিস্কাসন সমস্যা বা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কিত তথ্যের জন্য যেতে হবে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর অফিসে।

সুপারিশ :
১.তথ্য অিিধকার দিবস ইউনিয়ন /উপজেলা পরিষদ পর্যায়ে উদযাপন করা স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সম্পৃক্ততায়।
২.তথ্য অধিকার দিবসে স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসায় বিতর্ক ,রচনা প্রতিযোগীতা,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা ।
৩.তথ্য অধিকার দিবসের গুরুত্ব স্থানীয় ইমাম ও অন্যান্য ধর্মীয় নেতাদের জানানো
৪.বিভিন্ন শ্লোগানসহ পোষ্টার,লিফলেট,ষ্টিকারসহ প্রচারযোগ্য যেকোন উপকরন তৈরী করা ।
৫.তথ্য অধিকার বিষয়ে স্থানীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা ।
৬.তথ্য অধিকার বিষয়ক সেরা লেখার জন্য পুরষ্কারের ব্যবস্থা রাখা।
৭.উপজেলা পর্যায়ের সাংবাডদিক ও সরকারী কর্মকর্তাদের তথ্য অধিকার বিষয়ক প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা।
৮.এনজিওরা তাদের নিজেদের আয়-ব্যয়ের হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করে দৃস্টান্ত স্থাপন করা ।
৯.স্বপ্রনোদিত হয়ে তথ্য অধিকার দিবস উদযাপনে উদ্ভদ্ধ করা।
১০.তথ্য সংগ্রহ ,সংরক্ষন পদ্ধতি ডিজিটালে রূপান্তর করা ।
১১.জেলা তথ্য কর্মকর্তার কার্যালয়কে জেলা তথ্য ব্যাংকে রপান্তর করা ।

তথ্য সূত্র :
যেসকল প্রকাশনা থেকে সহযোগীতা নেয়া হয়েছে :
১.জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরন প্রজেক্ট ম্যানুয়াল-ম্যাস্-লাইন মিডিয়া সেন্টার (এমএমসি),ঢাকা।
২.তথ্য অধিকার (তথ্য প্রাপ্তি সংক্রান্ত ) বিধিমালা ,২০০৯-তথ্য কমিশন বাংলাদেশ।

মোহাম্মদ মিজানুর রহমান
যুগ্ম সম্পাদক
আজকের বিজনেস বাংলাদেশ
মোবাইল :০১৭১১-২৩ ২৫ ১৬

mizanvi12@gmail.com

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

 

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

পিরোজপুরে ছাত্রলীগ কর্মীকে পিটিতে হত্যা মামলায় ২ আসামী গ্রেপ্তার

শহরের মানুষ সচেতন, মফস্বলে তথ্য জানানো প্রয়োজন

প্রকাশিত : ০৬:০০:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

সূচনাঃ চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতা নাগরিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত এবং তথ্য প্রাপ্তির অধিকার এর অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই সরকারী স্বায়ত্বশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং সরকারী বা বিদেশী অর্থায়নে পরিচালিত বেসরকারী সংস্থার কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করনের জন্য তথ্য অধিকার আইন,২০০৯ পাশ করা হয়েছে। এতে সরকার দেশে-বিদেশে প্রশংসাও অর্জন করেছে।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বাস্তবায়ন নিয়ে। আইনটি পাশ করার পূর্বে ,আইনটি পাশ করার পক্ষে বিভিন্ন এনজিওর জোরালো ভূমিকা ছিল। তবে বর্তমানে আইন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় সরকারি কর্মকর্তা,কর্মচারী ও জনগনকে উদ্ভুদ্ধকরণমূলক কার্যক্রমে হাতে গোনা কয়েকটি এনজিও ছাড়া বেশীর ভাগ এনজিও-ই দায়িত্ব শেষ মনে করছে । ফলে আইনটির বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে।

তথ্য পাওয়া জনগনের অধিকার এ বিষয়টি তৃনমূল পর্যায়ের মানুষকে জানতে হবে। পাশাপাশি তথ্য দিয়ে তথ্য লুকিয়ে রাখা এক ধরনের সামাজিক অপরাধ তা সরকারী/বেসরকারী পর্যায় ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা জরুরী। জেলা তথ্য অফিসকে তথ্য ব্যাংকে পরিণত করার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। নামেই জেলা তথ্য অফিস কাজে তার উল্টো। অস্থায়ীভাবে তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা দিয়ে তথ্য আদান-প্রদান করা কঠিন হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা তার মূল দায়িত্ব নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। তা ছাড়া ঐ কর্মকর্তা অন্যত্র বদলি কিংবা প্রমোশন নিয়ে চলে গেলে তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা পদটি শূন্য থাকে। এতে অঙ্কুরেই তথ্য আদান-প্রদানে উভয়ই নিরুৎসাহিত হয়। আবার দেখা গেছে তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ নিয়ে অন্য কাজ করছেন। এতে সরকারের উদ্দেশ্য সফল সম্ভব নয়।

এবার আশা যাক তথ্য কী?
তথ্য এক ধরনের বার্তা, যা জনগনের জন্য সরকারী-বেসরকারী সুযোগ সুবিধার আইন-কানুন বা নীতিমালা । এ আইন-কানুন বা নীতিমালা না জানার কারণে মানুষ প্রতিনিয়ত সরকারী-বেসরকারী সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আবার জন্মের পর থেকেই আমরা নানান রকমের তথ্য পাই, সেসব তথ্য বা বার্তা আমাদের জানা-বোঝা-চেনা সবকিছুকে সহজ করে তোলে। নিচে উদহারণ দিয়ে তথ্যের আদান-প্রদান বোঝানো হলো:

তথ্য গ্রহণকারি ঃ ইউনিয়ন পরিষদের কাজ কয়টি?

তথ্য প্রদানকারি : ইউনিয়ন পরিষদের কাজ ৪৮টি (আবশ্যিক কাজ ১০টি, সাধারন কাজ ৩৮টি)

এবার জানবো তথ্য কেন প্রয়োজন?
তথ্যের অভাবে মানুষের জীবন অচল হয়ে পড়ে। সঠিক তথ্য না পেলে অনেক সময় মানুষ অনেক প্রকারের অসুবিধা ও ক্ষতির সম্মূখীন হয়। তাই প্রতিটি কাজ সহজ করার জন্য তথ্য প্রয়োজন। যেমন-সঠিক সারের ব্যবহার না জানলে একজন কৃষক বুঝতে পারবে না যে তার ফসলের জন্য কোন সার কি পরিমানে প্রয়োজন। সুতরাং তাকে বিষয়ের উপর সঠিক তথ্য জানতে হবে। আবার, কোথায় গেলে একটি রোগের সঠিক চিকিৎসা পাওয়া যাবে-সে তথ্যও সকলের জানা থাকা প্রয়োজন। তথ্যের ঘাটতির কারণে সাধারন জনগণ তাদের যথাযথ উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে পড়ে। তাই সকলের বেঁচে থাকা এবং উন্নতির জন্য সঠিক ও প্রয়োজন মাফিক তথ্য প্রয়োজন।

বুঝতে চেষ্টা করি অধিকার কী?
প্রতিটি মানুষ জন্মের সাথে সাথে এক প্রকারের দাবী নিয়ে পৃথিবীতে আসে। আর সেই দাবী হচ্ছে সুন্দরভাবে, ভালো করে বেচেঁ থাকবার অধিকার। অধিকার হলো এমন এক প্রকারের মানসিক অর্জন যা প্রকৃতি আমাদেরকে দেয়। কিন্তু সমাজে একত্রে বসবাস করবার সময় মানুষ একধরনের নিয়ন্ত্রণ কাঠামো তৈরী করে, যার মূল দায়িত্বে থাকে সরকার। একটি দেশের সরকার যেহেতু ঐ দেশের সকল কর্মকান্ড দেখাশোনা করে, তাই জনগণের অধিকার রক্ষা করার দায়িত্বও তার হাতে থাকে। মানুষের বেচেঁ থাকা, বেড়ে উঠা ও বিকাশের জন্য যা প্রয়োজন তাই হলো অধিকার। আইনবিদ সেমন্ড খুব সহজ করে বলেছেন, “আমার জন্য অন্যের যা করা প্রয়োজন তাই অধিকার” মূলত অধিকার হচ্ছে একটি নায্য দাবী যা আইনগত ও নৈতিকতার মানদন্ডে স্বীকৃত।

অধিকার হলো এক প্রকার পাওনা। মানুষ অন্যের কাছে বা রাষ্ট্রের কাছে আইনসঙ্গত ভাবে যা দাবী করতে পারে,তাকে অধিকার বলে। অধিকার একটি সামাজিক বিষয়। অধিকার বলতে মানুষের বিকাশের জন্য সুযোগ-সুবিধার দাবিকে বোঝায়, যে দাবির নৈতিক কিংবা আইনগত ভিত্তি থাকে। জন্মলাভের পর প্রথম মানুষের নৈতিক অধিকারের স্বীকৃতি দেয় সমাজ। পরে দাবির গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্র এর আইনি স্বীকৃতি দেয় এবং বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করে। ফলে তা আইনে পরিণত হয়। সকল মানুষেরই পাঁচটি মৌলিক চাহিদা রয়েছে। এগুলো হলো- বাসস্থান, খাদ্য,বস্ত্র,শিক্ষা এবং চিকিৎসা। বর্তমানে মানুষের জীবনযাত্রার ধরন আরও উন্নত ও আধুনিক হয়ে উঠবার কারনে অন্যান্য কিছু চাহিদা এগুলির সাথে যোগ হয়েছে। যেমন-বিনোদন, জানার ইচ্ছা ইত্যাদি। এই চাহিদা গুলি পরবর্তীতে দাবীতে পরিণত হয়। মানুষ যখন তার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি জানতে পারেনা, তার চাহিদা, প্রয়োজন, সমস্যা-সম্ভবনা ইত্যাদি অন্যেকে জানাতে বা জানতে পারেনা – তখনই সে তথ্য থেকে বা তার তথ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। তবে অধিকার শুধু রাষ্ট্র বা সমাজ দেবে তাই নয়, ব্যক্তি পর্যায়েও সকলে এর নিশ্চিতকরণে দায়বদ্ধ।

তথ্য অধিকার : আইনগত ভিত্তি

সাধারন জনগণ বা গ্রামীণ মানুষেরা তাদের অধিকারের ব্যপারটি অনেক সময় বুঝতে পারেনা। অন্যভাবে বলতে গেলে, আমাদের বর্তমান সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় তথ্যের আদান-প্রদানের কোন সহজ উপায় তেমন একটা নাই। ফলে নিজেদের অধিকার সর্ম্পকে লোকে জানতে পারেনা। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানে সকল নাগরিকের দায়িত্ব ও অধিকারের পাশাপাশি তথ্য জানা ও জানানোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে দেশের সকল ক্ষমতার মালিক জনগন। দেশের সকল সরকারী কাজকর্ম জনগণের মঙ্গলের জন্য পরিচালিত হয়ে থাকে। এসকল কাজ আবার সাধারণ জনগণের অর্থে পরিচালিত হয়। সুতরাং এসব কর্মকান্ড যাতে জনগনের প্রয়োজন অনুসারে পরিচালিত হয়, সেজন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার তাদের অংশগ্রহণ থাকা প্রয়োজন। সরকারের গৃহীত প্রতিটি পদক্ষেপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা জনগণের অধিকার।

সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার সংরক্ষন করা হয়েছে। এর থেকে বোঝা যায় যে, জীবনকে রক্ষা করতে, সুন্দর করতে এবং মর্যাদাপূর্ণ জীবন যাপন করতে যা কিছু দরকার সেসব কিছুর অধিকার আমাদের রয়েছে। সেইসাথে যেসব বিষয় আমাদের জীবনকে সরাসরি বা খুব কাছ থেকে প্রভাবিত করে সেসব বিষয় সম্পর্কে জানার অধিকার আমাদের রয়েছে।
সংবিধানে ৩৯নং অনুচ্ছেদে সংবাদ দেয়া-নেয়া, সংবাদ দাতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সংরক্ষিত হয়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের তথ্য পাওয়ার পথ আরও প্রসারিত হয়েছে।

তথ্য পাওয়ার অধিকার
তথ্যকে বড় করে দেখতে গেলে, পরিশুদ্ধ করে দেখতে গেলে তা হলো-যে কোন সভার কার্য বিবরণী,সরকারী নীতি ও সিদ্ধান্তসমূহ, সরকারী আদেশ ও আইন, বিশেষ ধরনের হিসাব, নথিপত্র ইত্যাদি। কিন্তু দেখা যায়, সাধারণ মানুষ এসব জানবার সুযোগ তেমন একটা পায়না। একটি দেশের প্রতিটি জনগণেরই রয়েছে তথ্যে প্রবেশাধিকার। এই অধিকার সকল মানুষের জন্য কোন শ্রেণী বা দলের জন্য নয়। এই অধিকার সকল মানুষের সমানভাবে প্রাপ্য, কারো কম বা বেশী নয় এবং কোন বিশেষ মর্যাদা বা সম্পর্কের উপর নির্ভরশীল নয়। এই অধিকার এমনই এক আদায়যোগ্য অধিকার যে তা আদায়ের লক্ষ্যে মানুষকে সচেতন ও তৎপর হতে হবে। একই সাথে এই অধিকারে ঘাটতি হলে তা পাবার জন্য সকলকে সোচ্চার ও প্রতিবাদী হতে হবে। কেননা এই অধিকার মানুষের বেঁচে থাকবার জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি অধিকার।

গ্রামীণ মানুষের তথ্যপ্রাপ্তি ঃ
বাংলাদেশের ৮০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। তাদের জীবন-জীবিকা, দৈনন্দিন কর্মকান্ড, চিন্তা-চেতনা সবকিছুই গ্রামীণ পরিবেশকে ঘিরে। দেখা যায় যে, গ্রামে যোগাযোগ বা প্রযুক্তিগত সুবিধা (যেমন-টেলিফোন,রেডিও,স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদপত্র, টেলিভিশন ইত্যাদি) কম থাকায় লোকজন তথ্য কম পায়। তাই শহরের মানুষদের থেকে তাদের উন্নয়ন বা জানা-বোঝা কম হয়। আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে গ্রামের সাধারণ মানুষ একটু কম শিক্ষিত হওয়ায় এই সমস্যাটি বড় আকার ধারণ করে। তারা তথ্যের অভাবে অনেক দিক দিয়েই পিছিয়ে পড়ে। তাই ব্যালেন্স করতে গ্রামের মানুষকে তথ্য জানানো বেশি প্রয়োজন।গ্রামের মানুষেরা যে সকল দিক থেকে তথ্যের অভাবে ভুগে তার মধ্যে রয়েছে শিক্ষা বিষয়ক তথ্য, চিকিৎসা বষিয়ক তথ্য ,স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক তথ্য, কিভাবে অধিক ও লাভজনক চাষবাদ করা যায় সেবিষয়ক তথ্য, নিরাপদ পানি পান করার বিষয়সহ এরকম আরও অনেক তথ্যের অভাব। আমরা ছোট ছোট কিছু উদাহরণের মধ্যে দিয়ে সম্পূর্ণ ব্যপারটিকে বোঝার চেষ্ট করতে পারি ।

দারিদ্রের ক্ষেত্রে তথ্যের ভূমিকা :

স্থাবর-অস্থাবর, সহায়-সম্পত্তি, শিক্ষা প্রভৃতির কম বা বেশী থাকার ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় মানুষের সামাজিক অবস্থান। তাই কেউ হয় ধনী, আবার কেউ হয় গরীব। সাধারনত দেখা যায় যে, গ্রাম অঞ্চলের বেশীরভাগ মানুষই গরীব বা দরিদ্র হয়ে থাকে। এই দারিদ্রের অন্যতম কারণ হলো-
১) তাদের তথ্যে ঘাটতি,
২) সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য না পাওয়া,
৩) তথ্যকে কিভাবে ব্যবহার করতে হবে সেটা না জানা,
৪) তথ্যটি ঠিকভাবে বুঝতে না পারা প্রভৃতি।

এ ছাড়াও যেসব কারণে গ্রামীণ জনগণ তথ্য থেকে বঞ্চিত হয় এবং ফলস্বরূপ দরিদ্র থাকে সেগুলো হল:

 তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে দাপ্তরিক বিধিনিষেধ
 গ্রাম অঞ্চলে গণমাধ্যম তথা তথ্যর বাহন না পৌছানো
 প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রামীণ জনগণের বসবাস
 তথ্যর বাহনের কাছে পৌছানোর অসুবিধা, যেমন-সংবাদপত্র পড়তে না পারা, রেডিও শুনতে না পারা, রেডিও-টিভি প্রভৃতি না থাকা
 নিরক্ষরতা
 পুরাতন যুগের মন-মানসিকতা বা কুসংস্কার
যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়া
দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে তথ্য :
শুধুমাত্র একটি বিশেষ সময়ে বা বিশেষ ঘটনার জন্য যে তথ্য প্রয়োজন, তা কিন্তু নয়। আমাদের প্রতিদিনের জীবনে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই তথ্য দরকার। তথ্য মানুষকে সচেতন করে, ফলে তার রোজকার কাজ-কর্ম হয়ে ওঠে সহজ ও সুন্দর। তথ্য মানসিকভাবে শক্তি ও সাহস দেয়, ফলে কাজ করার দক্ষতা বাড়ে গ্রামীণ মানুষের প্রতিদিনের জীবন-যাপন পদ্ধতি এখনও সেই পুরানো আমলের রয়ে গেছে, তাই তারা নানান রকমের সমস্যার মুখোমুখি হয়। তথ্যের অভাবে তৈরী হয় অনিয়ম ও অনাচার। ফলে সকল শ্রেণীর মানুষই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তথ্যের ঘাটতি নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ সকলকে তাদের রোজকার কাজে-কর্মে বাধা দান করে ফলে সকলের জীবনের গতি ধীর করে দেয়।

গ্রামীণ মানুষেরা কিভাবে তথ্য সহকারে উন্নতি করবে?
গ্রামীণ মানুষের জীবন পদ্ধতির বহু জায়গায় তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। যে কারণে তারা উন্নতি ও গতিময় জীবন থেকে পিছিয়ে থাকে। এই সকল ঘাটতির জায়গাগুলি খুজেঁ বের করে যদি সেখানে ঠিকঠাকমত তথ্যের যোগান দেওয়া যায়, তাহলে গ্রামের মানুষের জীবন-যাপন হয়ে উঠবে অনেক সুন্দর ও সচ্ছল। তারা তখন নিজেদের ভালো-মন্দ বুঝতে পারবে, সন্তানদের সঠিক শিক্ষা দিতে পারবে, স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হবে।

০ সঠিক চাষাবাদ পদ্ধতি, সারের ব্যবহার, সেচ, বীজ সংরক্ষণ ও ব্যবহার প্রভূতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা তাকলে গ্রামের চাষীরা সঠিক ও সুন্দরভাবে কৃষিকাজ করতে পারবে। ফরে তাদের দারিদ্র দূর হবে এবং তারা উন্নত জীবনাত্রা পাবে।

০ শিক্ষার অভাবে গ্রামের লোকেরা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করতে পারেনা।তাই সঠিক শিক্ষা ও শিক্ষা সর্ম্পকিত যাবতীয় তথ্য পেলে তারা অত্যন্ত উপকৃত হবে।

০ গ্রামে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে অনেক ধরণের অসুখ-বিসুখ দেখা দেয়। তাছাড়া পুষ্টিগুণ, টিকা দেওয়া, খাবারের মান ইত্যাদির বিষয়ে সঠিক তথ্য জানার অভাব মানুষকে অনেক গুরুতর সমস্যা এমনকি মৃত্যুর মুখোমুখি করে দেয়।

০ স্থানীয় প্রসাশন, দাপ্তরিক কাজকর্ম, অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রভৃতি সর্ম্পকে গ্রামের মানুষ অনেক কম জানতে পারে। আর তাই তারা এসব ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করতে পারেনা। ফলে তার্ াতাদের নিজস্ব অধিকার ও উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়। এর মূল কারণই হলো প্রসাশনিক কাঠামো ও তাদের কর্মকান্ড সর্ম্পকিত তথ্য থেকে গ্রামের লোকজনের বিচ্ছিন্নতা। তাই অন্তত: এনজিওরা থথ্য সঅধিকার বিষয়ক বিভিন্ন সভা ,সেমিনার,কর্মশালা , আলোচনা সভা, গোলটেবিল বৈঠক ,মুক্ত আলোচনাসহ যেকোন ধরনের অনুষ্ঠান গ্রমীন পর্যায়ে তথা বিকেন্দ্রীকরন করা।

আমরা উপরে যে কয়টি উদাহারণ দেখলাম, এর সবগুলির মূলেই রয়েছে গ্রামীণ মানুষের সঠিক মময়ে সঠিক তথ্য না পাওয়া। যার ফল স্বরূপ তারা দরিদ্র থেকে যায় এবং মানুষ হিসেবে অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় তাই গ্রামীণ জনগনের সঠিক উন্নয়নের জন্য চাই তথ্য ও তথ্য পাওয়ার অধিকার।

কোথায় গেলে তথ্য পাওয়া যাবে:
গ্রামীণ মানুষের অবস্থার উন্নতির জন্য তথ্য প্রয়োজন। কিন্তু কোথায় গেলে সেই তথ্য পাওয়া যাবে তা আবার অনেক সময় অজানা থেকে যায়। এখানে সেরকম কিছু সমস্যার সমাধান দেখানো হল :

 স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা হলে যেতে হবে ইউনিয়ন এবং থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ও স্যাটেলাইট ক্লিনিক, পারিবারিক স্বাস্থ্য ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, জেলা স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর স্থানীয় অফিস ইত্যাদি জায়গায়।

 জমি-জমা, দলিল সংক্রান্ত বিষয়াদিতে যেতে হবে ইউনিয়ন তহশিলদার অফিস, থানা ভূমি অফিস, রেজিস্ট্রি অফিস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কার্যালয়।

 কৃষি সংক্রান্ত সমস্যার জন্য যেতে হবে স্থানীয কৃষি অফিসারের নিকট, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসার, বøক সুপারভাইজার, বিএডিসি, এগ্রো সার্ভিস কেন্দ্র, মৃত্তিকা সম্পদ ইনষ্টিটিউট প্রভূতি জায়গায়।

 শিক্ষা বিষয়ক তথ্যের জন্য যেতে হবে উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জেলা তথ্য অফিস ও জেলা পরিসংখ্যান অফিসে, উপবৃত্তি প্রকল্প, গণশিক্ষা বিভাগের অফিসে।

 আইনি সহায়তা বিষয়ক তথ্য পাওয়া যাবে গ্রাম আদালত, নিকটস্থ থানা পারিবারিক আদালত, জেলা আইনি সহায়তা কেন্দ্র, জেলা জজের আদালত ইত্যাদি জায়গায়।

 প্রশাসনিক তথ্য সহায়তা পাবার জন্য যেতে হবে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন, কমিশনারগন প্রমুখের কাছে।

 প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যের জন্য যেতে হবে সূর্যের হাসি বা সবুজ ছাতা চিহ্নিত ক্লিনিকে। এছাড়াও উপরে বর্ণিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতেও এই সমস্যায় যেতে পারে।

 সামাজিক সমস্যাদি এবং উন্নয়নমূলক বিষয়ে তথ্যের জন্য অফিস, উপজেলা পরিষদ বা উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তার নিকট যাওয়া যেতে পারে।

 নারী উন্নয়ন, নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন প্রভৃতি সমস্যায় যেতে হবে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, স্থানীয় থানা ইত্যাদি স্থানে। এছাড়া যদি ঐ এলাকায় কোন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এই ধরনের সেবা ও সহায়তা দিয়ে থাকে, তবে তাদের নিকটও যাওয়া যেতে পারে।

 মৎসচাষ সংক্রান্ত সমস্যা ও উন্নয়ন মূলক তথ্যের জন্য যাওয়া যেতে পারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার নিকট।

 ঋণ সংক্রান্ত তথ্য পাবার জন্য গ্রামীণ মানুষ যাবে উক্ত এলাকায় যে সকল বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্র ঋণ দেয় তাদের নিকট, কৃষি ব্যংক, সোনালী ব্যংকসহ অনান্য সরকারী ও বেসরকারী ব্যংকে।

 পরিবেশ বিষয়ক তথ্য জানার জন্য যেতে হবে স্থানীয় বন বিভাগের অফিসে।

 দুর্যোগের সময় যেতে হবে ইউনিয়ন/উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ,জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা, সাইক্লোন সেন্টার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো অথবা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির আশ্রয়নকেন্দ্রে।

 কর্মসংস্থান বিষয়ে জানতে হলে যেতে হবে উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।

 পয়: নিস্কাসন সমস্যা বা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কিত তথ্যের জন্য যেতে হবে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর অফিসে।

সুপারিশ :
১.তথ্য অিিধকার দিবস ইউনিয়ন /উপজেলা পরিষদ পর্যায়ে উদযাপন করা স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সম্পৃক্ততায়।
২.তথ্য অধিকার দিবসে স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসায় বিতর্ক ,রচনা প্রতিযোগীতা,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা ।
৩.তথ্য অধিকার দিবসের গুরুত্ব স্থানীয় ইমাম ও অন্যান্য ধর্মীয় নেতাদের জানানো
৪.বিভিন্ন শ্লোগানসহ পোষ্টার,লিফলেট,ষ্টিকারসহ প্রচারযোগ্য যেকোন উপকরন তৈরী করা ।
৫.তথ্য অধিকার বিষয়ে স্থানীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা ।
৬.তথ্য অধিকার বিষয়ক সেরা লেখার জন্য পুরষ্কারের ব্যবস্থা রাখা।
৭.উপজেলা পর্যায়ের সাংবাডদিক ও সরকারী কর্মকর্তাদের তথ্য অধিকার বিষয়ক প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা।
৮.এনজিওরা তাদের নিজেদের আয়-ব্যয়ের হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করে দৃস্টান্ত স্থাপন করা ।
৯.স্বপ্রনোদিত হয়ে তথ্য অধিকার দিবস উদযাপনে উদ্ভদ্ধ করা।
১০.তথ্য সংগ্রহ ,সংরক্ষন পদ্ধতি ডিজিটালে রূপান্তর করা ।
১১.জেলা তথ্য কর্মকর্তার কার্যালয়কে জেলা তথ্য ব্যাংকে রপান্তর করা ।

তথ্য সূত্র :
যেসকল প্রকাশনা থেকে সহযোগীতা নেয়া হয়েছে :
১.জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরন প্রজেক্ট ম্যানুয়াল-ম্যাস্-লাইন মিডিয়া সেন্টার (এমএমসি),ঢাকা।
২.তথ্য অধিকার (তথ্য প্রাপ্তি সংক্রান্ত ) বিধিমালা ,২০০৯-তথ্য কমিশন বাংলাদেশ।

মোহাম্মদ মিজানুর রহমান
যুগ্ম সম্পাদক
আজকের বিজনেস বাংলাদেশ
মোবাইল :০১৭১১-২৩ ২৫ ১৬

mizanvi12@gmail.com

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ