রাত পোহালেই বহুল আলোচিত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এফডিসিতে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। নির্বাচনে ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ এবং মিশা সওদাগর-জায়েদ খান প্যানেল, ২ জন স্বতন্ত্রসহ মোট ৪৪ জন অংশ নিচ্ছেন। দুটি প্যানেলেই রয়েছেন তারকা অভিনয়শিল্পীরা। শুরু থেকেই দুই প্যানেলের প্রার্থী এবং সমর্থকের মধ্যেই ছিল দারুণ উৎসাহ ও উদ্দীপনা। নির্বাচনের সার্বিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে পাওয়া যাচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস।
চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এবারের নির্বাচন অন্য যে কোনোবারের থেকে আলাদা হবে। কারণ বর্তমান কমিটি মিশা-জায়েদ প্যানেল চাইছে আবার ক্ষমতায় বসতে, অন্যদিকে ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল মাঠে নেমেছে পরিবর্তন আনতে।
এবারের নির্বাচনের আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। বিষয়টিকে সবাই ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। এমনকি তার প্রতিদ্বন্দ্বী মিশা সওদাগর বলেছেন, ‘ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই আমাদের উপদেষ্টা ছিলেন। একজন একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পীও সমিতির সেবা করতে চান। তার মানে আমাদের গত পরিষদ এমন হাইপ তুলেছে, যার কারণে ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই সেবা করার জন্য আসতে চাইছেন। এটি ভালো দিক। আমার বিশ্বাস, এবারের নির্বাচন খুব ভালো ও সুন্দরভাবে হবে।’
ভোট নিয়ে নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন মনোবাসনা সবাইকে নিয়ে কাজ করতে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা শিল্পী। আমাদের মানুষ চেনে। সমিতিতে শিল্পীদের চেহারা দামি একটা ব্যাপার। এ কাজগুলো তো অন্যরা খুব একটা সহজে করতে পারবে না। আমরা শিল্পীরা চেষ্টা করব যখন, তখন চলচ্চিত্রের সামগ্রিক উন্নতি হবে। এতে শিল্পী, ডাইরেক্টর, প্রডিউসার, নৃত্যশিল্পী, ফাইটিং গ্রæপ এবং টেকনিশিয়ানরা লাভবান হবেন। লাভবান যেন পুরো ইন্ডাস্ট্রি ভোগ করতে পারে, সেটি নিয়ে শিল্পী সমিতি অনেক ভূমিকা রাখতে পারে।’
ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণের প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ বলেছেন, ‘আমাদের প্যানেল ভালোভাবে সাজিয়েছি। বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। বিজয়ী হয়ে চলচ্চিত্রের এ মন্দা অবস্থা কাটিয়ে তুলতে চলচ্চিত্রের সব সংগঠনকে এক ছাতার তলে এনে কাজ করার চেষ্টা করব।’ মিশা-জায়েদ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জায়েদ খান বলেন, ‘জয়-পরাজয় এখানে বিষয় না। আমরা সব সময় সাধারণ শিল্পীদের পাশে ছিলাম, থাকব। তবে বিগত দিনগুলোয় আমরা যে কাজ করেছি, তাতে আমাদের পাশে সাধারণ শিল্পীরা থাকবেন বলে আশা করি।
আলোচিত শিল্পী সমিতির নির্বাচনে দুইটি প্যানেল ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন করছেন। দুই প্যানেলে প্রার্থী হলেন-
লিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ : সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, সাধারণ সম্পাদক নিপুণ, সহসভাপতি রিয়াজ ও ডিএ তায়েব, সহসাধারণ সম্পাদক সাইমন সাদিক, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনূর, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নিরব, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক আরমান, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক ইমন, কোষাধ্যক্ষ আজাদ খান। কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য অমিত হাসান, শাকিল খান, নানা শাহ, আফজাল শরীফ, সাংকো পাঞ্জা, জেসমিন, কেয়া, পরীমনি, গাঙ্গুয়া ও সীমান্ত আহমেদ।
মিশা সওদাগর-জায়েদ খান : সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান, সহসভাপতি ডিপজল ও রুবেল, সহসাধারণ সম্পাদক সুব্রত, সাংগঠনিক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক জয় চৌধুরী, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক জাকির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ ফরহাদ। কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য রোজিনা, অঞ্জনা, সুচরিতা, মৌসুমী, অরুণা বিশ্বাস, আসিফ ইকবাল, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, নাদের খান ও হাসান জাহাঙ্গীর।
স্বতন্ত্র প্রার্থী : কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য ডন ও হরবোলা।
এবারের নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন পীরজাদা শহীদুল হারুন। তার সঙ্গে থাকছেন বিএইচ নিশান ও বজলুর রাশীদ চৌধুরী। আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে থাকছেন পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান। সদস্য হিসেবে আছেন মোহাম্মদ হোসেন জেমি ও মোহাম্মদ হোসেন।
বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ