‘কালোজিরা শুধু মসলা জাতীয় ফসল নয়- মৃত্যু ছাড়া সব রোগের মহৌষধ’- গ্রামে এমন কথার প্রচলন রয়েছে। এই মহৌষধ মাদারীপুর শিবচরে কৃষকদের মুখে হাসি এনে দিয়েছে কালোজিরা। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় মসলা জাতীয় এই ফসল উৎপাদনে অত্যন্ত আগ্রহী কৃষকেরা। কালোজিরা তাদের কাছে এখন ‘কালো সোনা’ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।
কম খরচে বেশি মুনাফা লাভের প্রত্যাশায় আশাতীত হারে কালোজিরা চাষ করা হয়েছে। এতে কালোজিরা চাষে অপার সম্ভাবনা দেখছেন সাধারণ কৃষক ও চাষিরা। কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, এ অঞ্চলের আবহাওয়া কালোজিরা চাষে খুবই উপযোগী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন মাঠে চাষ করা হচ্ছে অনেকটা দেখতে ধনিয়া গাছের মত দেখতে কালোজিরা। সাদা ফুলে ভরে গেছে মাঠ। মৌমাছিরা গুন গুন শব্দে মুখরিত করে তুলছে ক্ষেত, মধু আহরণে ব্যস্ত ওরা।
উপজেলার দ্বিতীয়খন্ড ইউনিয়নের কৃষক রাজ্জাম মিয়া বলেন, ‘আমার জমিতে কালোজিরা আবাদ করতে মোট খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। যদি কোনো সমস্যা না হয় আর বাজার মূল্য ঠিক থাকে, তাহলে লক্ষাধিক টাকার বেশি বিক্রি করতে পারবো’।
একই এলাকার আরেক কৃষক রোকন ফকির বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে সার ও বীজ সরবরাহ এবং মাঠকর্মীদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় এ বছর দুই বিঘা জমিতে কালোজিরা চাষ করেছি’।
উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের মো. মজিদ হাওলাদা জানান, ‘বাড়ির পাশে ১০ শতাংশ জমিতে কালো জিরা ফসলের চাষ করেছি। গাছগুলো বেশ ভালো হয়েছে। আশা করছি ফলনও ভালো হবে। এই জমিতে যে পরিমান কালো জিরা পাবো, তাতে আমার পরিবারের চাহিদা মিটবে। কালো জিরা তরকারিতে মসলা হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এতে তরকারি বেশ মজাদায়ক হয়’।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় ২৫৯০ হেক্টর জমিতে কালোজিরা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনুপম রায় বলেন, ‘এ উপজেলার মাটি কালোজিরা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় কৃষকরা ঝুঁকছেন কালোজিরার আবাদে। বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষণে কৃষকদের মসলা জাতীয় ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়ে থাকে।
বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ


























