০৫:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

রংপুরে ছয় আসনে নির্বাচনী উত্তাপ,হেভিওয়েটসহ ৫৬ প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল

রংপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিল কার্যক্রম শেষ হয়েছে।নির্ধারিত সময়ে রংপুর জেলার ছয়টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৫৬ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ১৭টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ৪৭ জন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৯ জন।

গতসোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আট উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জাতীয় পার্টি, বাসদ, সিপিবি, খেলাফত মজলিস, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, নাগরিক ঐক্য ও স্বতন্ত্রসহ মোট ৫৬ জন প্রার্থী।

বুধবার(৩০ ডিসেম্বর)সকালে জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়,রংপুরের ছয়টি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মোট ৬১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন।তবে শেষ দিনে ৫৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে রংপুর-১ আসনে ৯ জন, রংপুর-২ আসনে ৫ জন, রংপুর-৩ আসনে ১০ জন, রংপুর-৪ আসনে ১০ জন, রংপুর-৫ ও রংপুর-৬ আসনে ১১ জন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও উপজেলা নির্বাচন অফিসগুলোতে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা যায়। দলীয় নেতাকর্মীদের ভিড়, স্লোগান ও মিছিলের মধ্য দিয়ে মনোনয়ন দাখিল করেন অনেক প্রার্থী। এতে করে পুরো রংপুরজুড়ে নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।

হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনের জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।রংপুর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন রংপুর-৩ (সদর ও সিটি করপোরেশন) আসনের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।এছাড়া বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনের জামায়াতের নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম।

এদিকে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে একাধিক দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে।অভিযোগ রয়েছে, এনসিপি, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় পার্টির কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়ন জমার সময় মিছিল ও শোডাউন করেছেন।অথচ আচরণবিধি অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দিতে প্রার্থীসহ সর্বোচ্চ পাঁচজন উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তা কিংবা রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া ও সিটি করপোরেশনের ১-৯ নম্বর ওয়ার্ড) আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন ইসলামী আন্দোলনের এটিএম গোলাম মোস্তফা বাবু, বাসদ (মার্কসবাদী) আহসানুল আরেফিন, ইসলামী ফ্রন্টের মো. আনাস, খেলাফত মজলিসের মো. মমিনুর রহমান, জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার মঞ্জুম আলী, জামায়াতের রায়হান সিরাজী, বিএনপির মোকাররম হোসেন সুজন, গণঅধিকার পরিষদের হানিফ খান সজিব ও এনসিপির আল মামুন।

রংপুর-২ আসনে বিএনপির মোহাম্মদ আলী সরকার,জাতীয় পার্টির আনিছুল ইসলাম মণ্ডল, জামায়াতের এটিএম আজহারুল ইসলাম, জেএসডির মো. আজিজুর রহমান ও ইসলামী আন্দোলনের মো. আশরাফ আলী মনোনয়নপত্র জমা দেন।

রংপুর-৩ আসনে বাসদের আব্দুল কুদ্দুছ, ইসলামী আন্দোলনের আমিরুজ্জামান পিয়াল, বিএনপির সামসুজ্জামান সামু, জাতীয় পার্টির জিএম কাদের, জামায়াতের মাহবুবুর রহমান বেলাল, স্বতন্ত্র রিটা রহমানসহ তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী মোছা. আনোয়ারা ইসলাম রানী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

রংপুর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসান বলেন, “উৎসবমুখর পরিবেশে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।জেলা ও উপজেলাগুলোতে সুশৃঙ্খলভাবে মনোনয়ন গ্রহণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।

উল্লেখ্য,মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল নির্বাচনী প্রচারণা।

ডিএস./

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

কুড়িগ্রামে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি ডায়ালগ

রংপুরে ছয় আসনে নির্বাচনী উত্তাপ,হেভিওয়েটসহ ৫৬ প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল

প্রকাশিত : ০৩:৩৭:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

রংপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিল কার্যক্রম শেষ হয়েছে।নির্ধারিত সময়ে রংপুর জেলার ছয়টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৫৬ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ১৭টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ৪৭ জন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৯ জন।

গতসোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আট উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জাতীয় পার্টি, বাসদ, সিপিবি, খেলাফত মজলিস, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, নাগরিক ঐক্য ও স্বতন্ত্রসহ মোট ৫৬ জন প্রার্থী।

বুধবার(৩০ ডিসেম্বর)সকালে জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়,রংপুরের ছয়টি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মোট ৬১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন।তবে শেষ দিনে ৫৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে রংপুর-১ আসনে ৯ জন, রংপুর-২ আসনে ৫ জন, রংপুর-৩ আসনে ১০ জন, রংপুর-৪ আসনে ১০ জন, রংপুর-৫ ও রংপুর-৬ আসনে ১১ জন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও উপজেলা নির্বাচন অফিসগুলোতে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা যায়। দলীয় নেতাকর্মীদের ভিড়, স্লোগান ও মিছিলের মধ্য দিয়ে মনোনয়ন দাখিল করেন অনেক প্রার্থী। এতে করে পুরো রংপুরজুড়ে নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।

হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনের জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।রংপুর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন রংপুর-৩ (সদর ও সিটি করপোরেশন) আসনের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।এছাড়া বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনের জামায়াতের নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম।

এদিকে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে একাধিক দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে।অভিযোগ রয়েছে, এনসিপি, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় পার্টির কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়ন জমার সময় মিছিল ও শোডাউন করেছেন।অথচ আচরণবিধি অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দিতে প্রার্থীসহ সর্বোচ্চ পাঁচজন উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তা কিংবা রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া ও সিটি করপোরেশনের ১-৯ নম্বর ওয়ার্ড) আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন ইসলামী আন্দোলনের এটিএম গোলাম মোস্তফা বাবু, বাসদ (মার্কসবাদী) আহসানুল আরেফিন, ইসলামী ফ্রন্টের মো. আনাস, খেলাফত মজলিসের মো. মমিনুর রহমান, জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার মঞ্জুম আলী, জামায়াতের রায়হান সিরাজী, বিএনপির মোকাররম হোসেন সুজন, গণঅধিকার পরিষদের হানিফ খান সজিব ও এনসিপির আল মামুন।

রংপুর-২ আসনে বিএনপির মোহাম্মদ আলী সরকার,জাতীয় পার্টির আনিছুল ইসলাম মণ্ডল, জামায়াতের এটিএম আজহারুল ইসলাম, জেএসডির মো. আজিজুর রহমান ও ইসলামী আন্দোলনের মো. আশরাফ আলী মনোনয়নপত্র জমা দেন।

রংপুর-৩ আসনে বাসদের আব্দুল কুদ্দুছ, ইসলামী আন্দোলনের আমিরুজ্জামান পিয়াল, বিএনপির সামসুজ্জামান সামু, জাতীয় পার্টির জিএম কাদের, জামায়াতের মাহবুবুর রহমান বেলাল, স্বতন্ত্র রিটা রহমানসহ তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী মোছা. আনোয়ারা ইসলাম রানী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

রংপুর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসান বলেন, “উৎসবমুখর পরিবেশে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।জেলা ও উপজেলাগুলোতে সুশৃঙ্খলভাবে মনোনয়ন গ্রহণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।

উল্লেখ্য,মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল নির্বাচনী প্রচারণা।

ডিএস./