বিলুপ্তি হয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহি সেই তালের ডোঙ্গা!। এক সময় সর্বত্র চোখে পড়তো বরিশাল সহ বিভিন্ন জেলাতে তাল গাছ দিয়ে তৈরি হতো এই ডোঙ্গা। তালের এই বিশেষ নৌকা ছিল গ্রামের লোকজনের যাতায়াতের অন্যতম বাহন। এখন আর ডোঙ্গা তেমন দেখা যায় না। হারিয়ে গেছে এই তালের নৌকা। বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের সাপানি এলাকার আব্দুল লতিফ জানায়, বর্ষার মৌসুমে থেকে শুরুড়ড় হয়ে প্রায় সারা বছর বিলে ঝিলে পানি থাকত। বাড়ি থেকে হাট বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াতের প্রধান বাহন ছিল তালের ডোঙ্গা।
তিনি আরো বলেন, এ ছাড়াও দুই তিনজনের পারাপার, মাছ ধরা, ধান কাটা, শাপলা তোলা, শামুক সংগ্রহ, বিল বাঁওড় পুকুরে মাছের ঘেরে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো তালের ডোঙ্গা। বরিশাল সহ বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল বিল এলাকার বিভিন্ন গ্রামে ডোঙ্গার গ্রামে আগেরকার দিনে ব্যবহার চোখে পড়লেও তবে এখন হারিয়ে গেছে সর্বত্র ঐতিহ্যের সেই তালের ডোঙ্গা। বরিশালে উজিরপুর উপজেলায় ডোঙ্গা তৈরির কারিগর গোপাল সরকার জানান, তাল গাছের আধিক্যের কারণেই অঞ্চলে এক সময় প্রচুর ডোঙ্গা তৈরি হতো। ডোঙ্গা তেরি করে জীবিকা নির্বাহ করত অনেক লোকজন। ডোঙ্গা তৈরি করতে কেউ কারিগর নিয়ে বাড়ির উপর তৈরি করতেন তালের ডোঙ্গা। তবে এক সময় প্রত্যকে জেলা উপজেলা কিংবা গ্রামে প্রচুর তাল গাছ ছিল। ফলে তখন কার সময় বেশিভাগই তালের ডোঙ্গা তৈরি হতো।
যেমন হারিয়ে গেছে তালগাছ ঠিকই পৃথিবীর থেকে চলে গেছেন কারিগর’রাও। জানা যায় ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সী একটি তাল গাছ থেকে দুটি ডোঙ্গা তৈরি করা যায়। ডোঙ্গার মাথা বিভিন্ন নকশা করে তৈরি করা হয়। ভালো গাছের ডোঙ্গা ৮-১০ বছর ব্যবহার করা যায়। বর্ষা চলে গেলে ডোঙ্গা পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হয়। শ্রাবণ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত ডোঙ্গা বেশি বিক্রি হয়।এটি পরিবেশ বান্ধব ও সহজ নৌযান। এ ধরনের নৌযান টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।
বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব