গত ৩২ বছর থেকে ১৩৫৪ জন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে খুঁজে পাচ্ছে না বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। বিভিন্ন মামলায় বিভিন্ন সময় এদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য আদালত থেকে সমন জারি করা হয়েছে। পুলিশ বলছে এদেরকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। পুলিশের অপেক্ষমান এ ধারাকে মানতে নারাজ আইনজীবীরা।
১৯৯০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৩২ বছরে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের চার থানায় খেলাপি ওয়ারেন্টি আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৫৪ জনে। এ সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। এ ওয়ারেন্টি আসামি গ্রেপ্তার পুলিশি কার্যক্রমের অন্যতম কাজ হলেও এতো সংখ্যক ওয়ারেন্ট তলব না হওয়াটায় বিস্মিত আইন মহল। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ওয়ারেন্ট তলবে সব প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু ঘর বাড়ি নদী ভাঙ্গনে পড়ায়, আসামি ভাড়াটিয়া হওয়ায় এবং অনেকেই মারা যাওয়ায় এদের হদিস মিলছে না। পুলিশের মতে অনেকে জানেই না যে সে ওয়ারেন্টি আসামি। চলতি বছরেও বরিশাল মেট্রো এলাকায় ১৮৯৮ টি নতুন মামলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও সব ওয়ারেন্টিদের ধরা যায়নি বলে জানান কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আজিমুল করিম।
বরিশালের আদালত সংশ্লিষ্টদের মতে এক্ষেত্রে পুলিশি অবস্থান স্বচ্ছ নয়। অনেক ওয়ারেন্টি আছে, যারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের ধরছে না। আইনজীবীরা এতো বিরাট সংখ্যক ওয়ারেন্ট তামিল না হওয়াকে যুক্তিহীন মনে করেন। তাদের মতে পুলিশের উচিত ছিলো ওয়ারেন্টিকে খুঁজে পাওয়া না গেলে অথবা আদৌ খুঁজে পাবার সম্ভাবনা না থাকলে তা আদালতকে লিখিত জানিয়ে বিচার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ওয়ারেন্ট নিয়ে ঘুরে বেড়ালে এবং পুলিশ না ধরলে তা আইনের প্রতি ধৃষ্টতার সামিল। এতে করে সামাজিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় বলে জানিয়েছেন সিনিয়র আইনজীবী দিলীপ ঘোষ।
অপর আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন মুন্সি যিনি নিজেও এমন একটি মামলার বাদি ও ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, তার মামলার আসামি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ পুলিশ তাকে খুঁজে পাচ্ছে না। এ অবস্থায় ওয়ারেন্টিদের গ্রেপ্তার এবং বিস্তারিত তথ্য জানতে আটঘাট বেধে মাঠে নেমেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করে দ্রুত মামলার নিস্পত্তিতে কার্যকর হতে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মোঃ সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, ওয়ারেন্ট তামিল করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ৭ দিনের সময় দেয়া হবে। কেউ যদি তাতেও ব্যর্থ হয়, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব


























