০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চাকরি ছেড়ে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে সফল চিরিরন্দরের নাঈম

চিরিরবন্দর উপজেলার নাঈম হুদা চাকরি ছেড়ে কেঁচো কম্পোস্ট বা ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনে সফল হয়েছে। নিজের কৃষিকাজে এই জৈব সার ব্যবহার করে গড়ে প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার কেঁচো সার ও কেঁচো ৮ থেকে ১০ হাজার টাকারবিক্রি করে। এখন প্রতিমাসে নাঈমের কেঁচো সার ও কেঁচো বিক্রিকরে আয় ৩৫-৪০ হাজার টাকা।

নাঈম হুদা তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের বৈকন্ঠপুরের গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে। সে ভুসিরবন্দর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে এসএসসি, ভুসিরবন্দর টেকনিক্যাল কলেজ থেকে ২০১২ সালে এইচএসসি ও ২০১৬ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে স্নাতক শেষ করে উত্তরা ইপিজেডের চাকরি নেন।

নাঈম হুদা বলেন, ২০১৬ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা শেষে করে চাকরির পিছনে সময় দেই এর পরে উত্তরা ইপিজেডে চাকরি পাই সেখানে প্রায় দুই বছর চাকরি করি চাকরিতে যে পরিমান সময় শ্রম দিয়ে থাকি সে পরিমান অর্থ পাইনা ।তখন মাথায় চিন্তা আসে বাসার কৃষিতে যদি এর থেকে কম সময় ও শ্রম-দেই তাহলে এর থেকে দ্বিগুন পরিমান অর্থ আয় করতে পারব। পরে ২০১৯ সালে চাকরি ছেড়ে বাসায় এসে কৃষিতে মনোযোগ দেই এর পরে একে একে করে কমলা বাগান মাল্টা বাগান ও মিশ্রফল বাগান পুকুরে মাছ চাষ শুরু করি । তখন দেখি ফল বাগানে রাসায়নিক সারের পাশাপাশি জৈব সারের প্রয়োজন হচ্ছে। তখন কৃষি অফিসের পরামর্শে দুই শতক মাটির উপর কেচো কম্পোস্ট এর একটা প্রজেক্ট দেয় উপজেলা কৃষি অফিস। সেই থেকে কেচো কম্পোস্ট সার দিয়ে ফলবাগানের গাছের চেহারা ভালো ও ফলন ভালো হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, পরে আমি এটা আমর পুকুরের মাছকে খাওয়ানো শুরু করি মাছেও ভালো ফলাফল আসে। তখন গ্রামের অনেক আমার দেখে ধানের জমিতে সবজি খেতে কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার শুরু করে। পরে দেখি কেঁচো খামারে ভালো মুনাফা আছে। তখন আমি এই সার ও কেঁচো নিয়ে গবেষনা শুরু করি তখন হাউজ ও রিং থেকে আমি কেচো সার বাংলাদেশে প্রথম ট্রেতে এ সার উৎপাদন শুরু করলাম এটা আমি মনে হয় দেশে প্রথম।এখন পরীক্ষামুলক ভাবে বস্তার মধ্যেও শুরু করেছি কেঁচো কম্পোস্ট সার উৎপাদন। ইনশাআল্লাহ আল্লাহর রহমত ভালো রেজাল্টা পাচ্ছি।

চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়া খামারটি বড় করার জন্য আমি আরো কিছু হাউজ তৈরি শুরু করছি। এখন আমার প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শতক মাটির উপর তেরি করেছি কেচো কম্পোস্ট এর খামার ।এ খামার থেকে প্রতি মাসে গড় ৪ থেকে ৫ টন কেচো কম্পোস্ট সার উৎপাদিত হয়।প্রতি টন কেচো কম্পোস্ট সার ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করি পাইকারি ভাবে। আর খুচরা এ সার বিক্রি হয় ১৬ টাকা থেকে ১৮ টাকা কেজি দরে।আমার দেখে অনে আনেক এখন এ খামার করার আগ্রহ প্রকাশ করছে কেউ কেউ আমার কাছ থেকে কেঁচো নিয়ে গিয়ে বাসায় ছোট পরিসরে কোচো কম্পোস্ট সার তৈরি করছে। এখন প্রতিমাসে ভার্মি কম্পোস্ট সার ও কেচো বিক্রি করে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আয় করছি।

বৈকন্ঠপুর গ্রামের কৃষক সাকিল ইসলাম বলেন, নাঈম আমাদের গ্রামের ছেলে তার কাছ থেকে জৈব সার নিয়ে কলা বাগানে দিছিলাম সাথে লাল শাক খেতেও দিছি কলা ও শাকের বাম্পার ফলন হয়েছে। সেই সাথে রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে যে খরচ হত তার থেকে অনেক কম খরচ হয়েছে জৈব সার ব্যবহার করে।

তেঁতুলিয়ার গ্রামের কৃষক হযরত আলী বলেন,নাঈমের সবজি খেতে জৈব সার ব্যবহারের ফরে তার সবজির ফলন ভালো ও খরচ কম হওয়ায় তার দেখো দেখি তার কাছ থেকে এ জৈব সার কিনে আমার সবজি খেতে দিছি সবজি খেতের রেজাল্ট ভালো হয়েছে।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা বলেন, চিরিরবন্দর উপজেলায় এনএটিপি প্রকল্পের আওতায় বেশকয়েটি ভার্মি কম্পোস্ট প্রকল্প চালু করেছি এর মধ্যে অনেকে ভালো করেছে । তবে নাঈম হুদা উদ্যাক্তা হিসেবে খুব ভালা করছে। সে ইতি মধ্যে ভার্মি কম্পোস্ট সার ও কেঁচো বিক্রি করে ভালা একটা অবস্থা তৈরি করেছে। আমরা সকলে জানি ভার্মি কম্পোস্ট উৎকৃষ্ঠ মানের একটি জৈব সার এটি মাটিতে দিলে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে মাটির সয়েলড বোন্ড ডিজিস গাছে কম হয়।

সেখানে নাঈম হুদা নিজে সার তৈরি করে নিজের বাগানে দিচ্ছে এবং এগুলো বিক্রিও করে অর্থ লাভ করছে পাশাপাশি তার পুকুরের মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে ভালো ফলাফল পেয়েছে। ইতি মধ্যে আমরা কৃষি বিভাগ নাইমের ভার্মি কম্পোস্ট মৃত্তিকা গবেষনা ইনস্টিটিউড ভার্মি কম্পোস্ট এরে স্যাম্পল পাঠিয়েছি সেই সাথে আমরা বগুড়া আরডিএতে স্যাম্পল পাঠানোর ব্যবস্থা হতে নিয়েছি। যাতে আমরা বুঝতে পারি এই ভার্মি কম্পোস্টে কি কি পুষ্টি উপাদান গুলো রয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

জনপ্রিয়

বিসিবির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের বোনাস পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা

চাকরি ছেড়ে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে সফল চিরিরন্দরের নাঈম

প্রকাশিত : ০৩:২৬:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২২

চিরিরবন্দর উপজেলার নাঈম হুদা চাকরি ছেড়ে কেঁচো কম্পোস্ট বা ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনে সফল হয়েছে। নিজের কৃষিকাজে এই জৈব সার ব্যবহার করে গড়ে প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার কেঁচো সার ও কেঁচো ৮ থেকে ১০ হাজার টাকারবিক্রি করে। এখন প্রতিমাসে নাঈমের কেঁচো সার ও কেঁচো বিক্রিকরে আয় ৩৫-৪০ হাজার টাকা।

নাঈম হুদা তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের বৈকন্ঠপুরের গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে। সে ভুসিরবন্দর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে এসএসসি, ভুসিরবন্দর টেকনিক্যাল কলেজ থেকে ২০১২ সালে এইচএসসি ও ২০১৬ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে স্নাতক শেষ করে উত্তরা ইপিজেডের চাকরি নেন।

নাঈম হুদা বলেন, ২০১৬ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা শেষে করে চাকরির পিছনে সময় দেই এর পরে উত্তরা ইপিজেডে চাকরি পাই সেখানে প্রায় দুই বছর চাকরি করি চাকরিতে যে পরিমান সময় শ্রম দিয়ে থাকি সে পরিমান অর্থ পাইনা ।তখন মাথায় চিন্তা আসে বাসার কৃষিতে যদি এর থেকে কম সময় ও শ্রম-দেই তাহলে এর থেকে দ্বিগুন পরিমান অর্থ আয় করতে পারব। পরে ২০১৯ সালে চাকরি ছেড়ে বাসায় এসে কৃষিতে মনোযোগ দেই এর পরে একে একে করে কমলা বাগান মাল্টা বাগান ও মিশ্রফল বাগান পুকুরে মাছ চাষ শুরু করি । তখন দেখি ফল বাগানে রাসায়নিক সারের পাশাপাশি জৈব সারের প্রয়োজন হচ্ছে। তখন কৃষি অফিসের পরামর্শে দুই শতক মাটির উপর কেচো কম্পোস্ট এর একটা প্রজেক্ট দেয় উপজেলা কৃষি অফিস। সেই থেকে কেচো কম্পোস্ট সার দিয়ে ফলবাগানের গাছের চেহারা ভালো ও ফলন ভালো হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, পরে আমি এটা আমর পুকুরের মাছকে খাওয়ানো শুরু করি মাছেও ভালো ফলাফল আসে। তখন গ্রামের অনেক আমার দেখে ধানের জমিতে সবজি খেতে কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার শুরু করে। পরে দেখি কেঁচো খামারে ভালো মুনাফা আছে। তখন আমি এই সার ও কেঁচো নিয়ে গবেষনা শুরু করি তখন হাউজ ও রিং থেকে আমি কেচো সার বাংলাদেশে প্রথম ট্রেতে এ সার উৎপাদন শুরু করলাম এটা আমি মনে হয় দেশে প্রথম।এখন পরীক্ষামুলক ভাবে বস্তার মধ্যেও শুরু করেছি কেঁচো কম্পোস্ট সার উৎপাদন। ইনশাআল্লাহ আল্লাহর রহমত ভালো রেজাল্টা পাচ্ছি।

চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়া খামারটি বড় করার জন্য আমি আরো কিছু হাউজ তৈরি শুরু করছি। এখন আমার প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শতক মাটির উপর তেরি করেছি কেচো কম্পোস্ট এর খামার ।এ খামার থেকে প্রতি মাসে গড় ৪ থেকে ৫ টন কেচো কম্পোস্ট সার উৎপাদিত হয়।প্রতি টন কেচো কম্পোস্ট সার ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করি পাইকারি ভাবে। আর খুচরা এ সার বিক্রি হয় ১৬ টাকা থেকে ১৮ টাকা কেজি দরে।আমার দেখে অনে আনেক এখন এ খামার করার আগ্রহ প্রকাশ করছে কেউ কেউ আমার কাছ থেকে কেঁচো নিয়ে গিয়ে বাসায় ছোট পরিসরে কোচো কম্পোস্ট সার তৈরি করছে। এখন প্রতিমাসে ভার্মি কম্পোস্ট সার ও কেচো বিক্রি করে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আয় করছি।

বৈকন্ঠপুর গ্রামের কৃষক সাকিল ইসলাম বলেন, নাঈম আমাদের গ্রামের ছেলে তার কাছ থেকে জৈব সার নিয়ে কলা বাগানে দিছিলাম সাথে লাল শাক খেতেও দিছি কলা ও শাকের বাম্পার ফলন হয়েছে। সেই সাথে রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে যে খরচ হত তার থেকে অনেক কম খরচ হয়েছে জৈব সার ব্যবহার করে।

তেঁতুলিয়ার গ্রামের কৃষক হযরত আলী বলেন,নাঈমের সবজি খেতে জৈব সার ব্যবহারের ফরে তার সবজির ফলন ভালো ও খরচ কম হওয়ায় তার দেখো দেখি তার কাছ থেকে এ জৈব সার কিনে আমার সবজি খেতে দিছি সবজি খেতের রেজাল্ট ভালো হয়েছে।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা বলেন, চিরিরবন্দর উপজেলায় এনএটিপি প্রকল্পের আওতায় বেশকয়েটি ভার্মি কম্পোস্ট প্রকল্প চালু করেছি এর মধ্যে অনেকে ভালো করেছে । তবে নাঈম হুদা উদ্যাক্তা হিসেবে খুব ভালা করছে। সে ইতি মধ্যে ভার্মি কম্পোস্ট সার ও কেঁচো বিক্রি করে ভালা একটা অবস্থা তৈরি করেছে। আমরা সকলে জানি ভার্মি কম্পোস্ট উৎকৃষ্ঠ মানের একটি জৈব সার এটি মাটিতে দিলে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে মাটির সয়েলড বোন্ড ডিজিস গাছে কম হয়।

সেখানে নাঈম হুদা নিজে সার তৈরি করে নিজের বাগানে দিচ্ছে এবং এগুলো বিক্রিও করে অর্থ লাভ করছে পাশাপাশি তার পুকুরের মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে ভালো ফলাফল পেয়েছে। ইতি মধ্যে আমরা কৃষি বিভাগ নাইমের ভার্মি কম্পোস্ট মৃত্তিকা গবেষনা ইনস্টিটিউড ভার্মি কম্পোস্ট এরে স্যাম্পল পাঠিয়েছি সেই সাথে আমরা বগুড়া আরডিএতে স্যাম্পল পাঠানোর ব্যবস্থা হতে নিয়েছি। যাতে আমরা বুঝতে পারি এই ভার্মি কম্পোস্টে কি কি পুষ্টি উপাদান গুলো রয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব