০৯:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের সাড়ে ১৭ বিলিয়ন ডলার

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের দাপট বাড়ছেই। এমনকি করোনা মহামারীকালেও ওই অঞ্চলে পোশাক রপ্তানিতে ভালো সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। বর্তমান বৈশ্বিক সংকটেও বাংলাদেশ ইউরোপে সাড়ে ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার দখল করে আছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোয় পোশাক আমদানির সর্বশেষ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাট। সেখানেই এমন তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশের জন্য এ প্রতিবেদনকে সুসংবাদ এবং বড় অর্জন বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ইইউ অঞ্চলে পোশাক আমদানি ৪৩.২১ শতাংশ বেড়ে ১৭.৫৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে সারা বিশ্ব থেকে তাদের আমদানি ২৭.৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের মতোই বাংলাদেশ ২২.৫৬ শতাংশ শেয়ার নিয়ে ইউরোপে পোশাক আমদানিতে দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস এবং চীন ২৯.০৪ শতাংশ শেয়ার নিয়ে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। ইইউ ২০২২ সালের প্রথম নয় মাসে চীন থেকে ২২.৫৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে। যেখানে বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি ছিল ২৫.১৯ শতাংশ।

ইউরোপে তৃতীয় বৃহত্তম পোশাক আমদানির উৎস তুরস্ক। এ ছাড়া ভারত থেকে ইইউ অঞ্চলে আমদানি বেড়েছে ১৫.৮৫ শতাংশ। উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধিসহ অন্য দেশগুলো হলো কম্বোডিয়া ৪১.০৮ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ৩৩.৪৬ শতাংশ এবং পাকিস্তান ৩০.৭৬ শতাংশ।

এ বিষয়ে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপ। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সময়ে আমরা ইউরোপের বাজারে রপ্তানির ধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছি এটাই বড় অর্জন। মহামারীপরবর্তী সময়ে ক্ষতি পুনরুদ্ধারে আমাদের উদ্যোক্তাদের বাড়তি প্রচেষ্টা ছিল, কীভাবে রপ্তানি আরও বাড়ানো যায়। প্রধান গন্তব্য দেশগুলোর পাশাপাশি অপ্রচলিত বাজারেও রপ্তানি সম্প্রসারণে নেওয়া হয় বিশেষ উদ্যোগ। সবকিছু মিলিয়ে আমরা রপ্তানি বাড়াতে সক্ষম হয়েছি।’

এদিকে বিজিএমইএর পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি ২০২২-২৩ বছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পাঁচ মাসে ইউরোপ অঞ্চলে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ১৬.২৭ শতাংশ বেড়ে ৭.৮১ বিলিয়ন ডলার থেকে ৯.০৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ইউরোপের সবচেয়ে বড় বাজার জার্মানিতে পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি ২.৭১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১.৮৮ শতাংশ।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, স্পেন এবং ফ্রান্সেও বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে যথাক্রমে ১৯.১৫ শতাংশ এবং ৩৮.৮৭ শতাংশ। ইইউ অঞ্চলের অন্যান্য দেশ ইতালি, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস এবং সুইডেনে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ৫০.৯৫ শতাংশ, ৪৮.৮৭ শতাংশ, ৩৪.৩৯ শতাংশ এবং ২২.৯০ শতাংশ। তবে জুলাই-নভেম্বর সময়ে রপ্তানি আয়ের হ্রাসের ঘটনা ঘটেছে ইউরোপের দেশ পোল্যান্ডে। দেশটিতে আগের বছরের চেয়ে পোশাক রপ্তানি ১৯.৬১ শতাংশ কমেছে।

তৈরি পোশাক রপ্তানির চিত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪.০৭ শতাংশ। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য এবং কানাডায় বাংলাদেশের রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ১১.৭১ শতাংশ এবং ৩০.২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে, অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি ২.৪৭ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.১৯ বিলিয়ন ডলারে। প্রধান অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে জাপানে রপ্তানি ৫৯৭.৮৩ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছে বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৮.১১ শতাংশ। মালয়েশিয়া রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ১০০ শতাংশের ওপরে এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩০ শতাংশ। এর বাইরে মেক্সিকোতে ৫০ শতাংশ, ভারতে ৪৯ শতাংশ এবং ব্রাজিলে ৪৫ শতাংশ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

জনপ্রিয়

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার মনোনয়নপত্র জমা

ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের সাড়ে ১৭ বিলিয়ন ডলার

প্রকাশিত : ১২:০০:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের দাপট বাড়ছেই। এমনকি করোনা মহামারীকালেও ওই অঞ্চলে পোশাক রপ্তানিতে ভালো সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। বর্তমান বৈশ্বিক সংকটেও বাংলাদেশ ইউরোপে সাড়ে ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার দখল করে আছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোয় পোশাক আমদানির সর্বশেষ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাট। সেখানেই এমন তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশের জন্য এ প্রতিবেদনকে সুসংবাদ এবং বড় অর্জন বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ইইউ অঞ্চলে পোশাক আমদানি ৪৩.২১ শতাংশ বেড়ে ১৭.৫৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে সারা বিশ্ব থেকে তাদের আমদানি ২৭.৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের মতোই বাংলাদেশ ২২.৫৬ শতাংশ শেয়ার নিয়ে ইউরোপে পোশাক আমদানিতে দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস এবং চীন ২৯.০৪ শতাংশ শেয়ার নিয়ে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। ইইউ ২০২২ সালের প্রথম নয় মাসে চীন থেকে ২২.৫৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে। যেখানে বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি ছিল ২৫.১৯ শতাংশ।

ইউরোপে তৃতীয় বৃহত্তম পোশাক আমদানির উৎস তুরস্ক। এ ছাড়া ভারত থেকে ইইউ অঞ্চলে আমদানি বেড়েছে ১৫.৮৫ শতাংশ। উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধিসহ অন্য দেশগুলো হলো কম্বোডিয়া ৪১.০৮ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ৩৩.৪৬ শতাংশ এবং পাকিস্তান ৩০.৭৬ শতাংশ।

এ বিষয়ে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপ। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সময়ে আমরা ইউরোপের বাজারে রপ্তানির ধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছি এটাই বড় অর্জন। মহামারীপরবর্তী সময়ে ক্ষতি পুনরুদ্ধারে আমাদের উদ্যোক্তাদের বাড়তি প্রচেষ্টা ছিল, কীভাবে রপ্তানি আরও বাড়ানো যায়। প্রধান গন্তব্য দেশগুলোর পাশাপাশি অপ্রচলিত বাজারেও রপ্তানি সম্প্রসারণে নেওয়া হয় বিশেষ উদ্যোগ। সবকিছু মিলিয়ে আমরা রপ্তানি বাড়াতে সক্ষম হয়েছি।’

এদিকে বিজিএমইএর পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি ২০২২-২৩ বছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পাঁচ মাসে ইউরোপ অঞ্চলে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ১৬.২৭ শতাংশ বেড়ে ৭.৮১ বিলিয়ন ডলার থেকে ৯.০৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ইউরোপের সবচেয়ে বড় বাজার জার্মানিতে পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি ২.৭১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১.৮৮ শতাংশ।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, স্পেন এবং ফ্রান্সেও বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে যথাক্রমে ১৯.১৫ শতাংশ এবং ৩৮.৮৭ শতাংশ। ইইউ অঞ্চলের অন্যান্য দেশ ইতালি, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস এবং সুইডেনে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ৫০.৯৫ শতাংশ, ৪৮.৮৭ শতাংশ, ৩৪.৩৯ শতাংশ এবং ২২.৯০ শতাংশ। তবে জুলাই-নভেম্বর সময়ে রপ্তানি আয়ের হ্রাসের ঘটনা ঘটেছে ইউরোপের দেশ পোল্যান্ডে। দেশটিতে আগের বছরের চেয়ে পোশাক রপ্তানি ১৯.৬১ শতাংশ কমেছে।

তৈরি পোশাক রপ্তানির চিত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪.০৭ শতাংশ। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য এবং কানাডায় বাংলাদেশের রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ১১.৭১ শতাংশ এবং ৩০.২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে, অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি ২.৪৭ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.১৯ বিলিয়ন ডলারে। প্রধান অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে জাপানে রপ্তানি ৫৯৭.৮৩ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছে বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৮.১১ শতাংশ। মালয়েশিয়া রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ১০০ শতাংশের ওপরে এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩০ শতাংশ। এর বাইরে মেক্সিকোতে ৫০ শতাংশ, ভারতে ৪৯ শতাংশ এবং ব্রাজিলে ৪৫ শতাংশ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব