০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

অর্থপাচার প্রতিরোধে জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে কাস্টমস

বাংলাদেশ কাস্টমস সরকারের যথাযথ রাজস্ব সংরক্ষণ, নিরাপদ বাণিজ্য নিশ্চিতকরণ এবং চোরাচালান ও অর্থপাচার প্রতিরোধে জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যা টেকসই অর্থনীতি বাস্তবায়নে বিপুল ভূমিকা রাখবে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য সবার আগে প্রয়োজন স্মার্ট জনবল। কাস্টমসকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে পারস্পরিক জ্ঞান বিতরণ এবং উত্তম পেশাদারিত্ব অর্জনই আগামীর প্রত্যয়।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার, যাত্রী ও ইলেকট্রনিক কমার্সের বিপুল বিস্তৃতি এবং অংশীজনদের উন্নত সেবাপ্রাপ্তির চাহিদা কাস্টমসকে স্মার্ট কাস্টমসে রূপান্তরের অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। রাজস্ব আহরণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিল্পের বিকাশ, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্ন রাখা এবং ক্ষতিকারক পণ্যের গমনাগমন নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিতের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও জনগণের কল্যাণে কাজ করছে কাস্টমস।

আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবসে বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস আয়োজিত সেমিনারে এ অভিমত ব্যক্ত করেন কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার একেএম মাহবুবুর রহমান।

তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে বিভিন্ন দেশের কাস্টমস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লক চেইন, ক্লাউড কম্পিউটিং এবং বিগ ডাটা সহ আধুনিক প্রযুক্তি কাস্টমস কার্যক্রম দ্রুতকরণ এবং ঝুঁকি নিবারণে সফলভাবে ব্যবহার করছে। বিশ্ব পরিস্থিতিতে কাস্টমস এখন রাজস্ব আহরণ ছাড়াও ট্রেড ফেসিলিশন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি, আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনসহ নানাবিধ বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকে।

আমাদের আশা, ভবিষ্যতে স্টেকহোল্ডারদের উপস্থিতি ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাংলাদেশ কাস্টমস সেবা দেবে। এজন্য আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে একটি অটোমেটেড পেপারলেস কাস্টমস সিস্টেম তৈরি করা আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পণ্য চালান জাহাজীকরণ ও খালাস দ্রুততর করা এবং ব্যবসার খরচ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা আমাদের মূল লক্ষ্য।

তিনি জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে এনবিআর আহরিত কর রাজস্ব ৩ লাখ ১ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। যার মধ্যে কাস্টমস আহরিত রাজস্ব ৮৯ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা, ৩০ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে কর রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কাস্টমসের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা।

কাস্টম হাউসের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ট্যাক্সেস আপিলাত ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামের সদস্য মোছা. সফিনা জাহান, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রামের কমিশনার সৈয়দ মুসফিকুর রহমান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার সহ সভাপতি এএম মাহাবুব চৌধুরী ও চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবিদা মোস্তফা। সভাপতিত্ব করেন কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির মহাপরিচালক মো. মাহবুবুজ্জামান।

স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান। তিনি বলেন, বিশ্বের ১৮৪টি দেশ কাস্টমস দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। এবারের কাস্টমস দিবসের প্রতিপাদ্য ‘নার্চারিং দ্যা নেক্সট জেনারেশন: প্রমোটিং অ্যা কালচার অব নলেজ-শেয়ারিং অ্যান্ড প্রফেশনাল প্রাইড ইন কাস্টমস’। (ভবিষ্যৎ প্রজন্মের লালনঃ কাস্টমসে জ্ঞানচর্চার সংস্কৃতি ও উত্তম পেশাদারিত্বের বিকাশ)

সঞ্চালনায় ছিলেন ডেপুটি কমিশনার খাদিজা পারভিন সুমি ও মো. আহসানুল্লাহ। অনুষ্ঠানে মোরশেদ আলমের পরিচালনায় বাংলাদেশ কাস্টমসের কার্যক্রমের ওপর তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

আন্তর্জাতিক শুল্ক দিবস (২৬ জানুয়ারি), বিশ্ব শুল্ক সংস্থা (World Customs Organization), একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন যা বিশ্বব্যাপী আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় শুল্ক সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে। পূর্বে এই সংস্থাটির নাম ছিল শুল্ক সহযোগিতা কেন্দ্র। বিশ্ব শুল্ক সংস্থার দপ্তর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেল্‌স শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত। পৃথিবীর ১৮২টি দেশ বর্তমানে এই সংস্থার সদস্য। ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি ব্রাসেলসে প্রথম কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে এই সংগঠনের নাম বিশ্ব শুল্ক সংস্থা নির্ধারণ করা হয়। ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত এই সংস্থার প্রথম অধিবেশনের স্মরণে প্রতিবছর ২৬ জানুয়ারি তারিখে বিশ্বব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক শুল্ক দিবস’ পালিত হয়।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

জনপ্রিয়

বিল্ডিং এ ডিজাবিলিটি ইনক্লুসিভ ওয়ার্কফোর্স শীর্ষক ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত

অর্থপাচার প্রতিরোধে জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে কাস্টমস

প্রকাশিত : ১২:৪৪:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৩

বাংলাদেশ কাস্টমস সরকারের যথাযথ রাজস্ব সংরক্ষণ, নিরাপদ বাণিজ্য নিশ্চিতকরণ এবং চোরাচালান ও অর্থপাচার প্রতিরোধে জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যা টেকসই অর্থনীতি বাস্তবায়নে বিপুল ভূমিকা রাখবে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য সবার আগে প্রয়োজন স্মার্ট জনবল। কাস্টমসকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে পারস্পরিক জ্ঞান বিতরণ এবং উত্তম পেশাদারিত্ব অর্জনই আগামীর প্রত্যয়।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার, যাত্রী ও ইলেকট্রনিক কমার্সের বিপুল বিস্তৃতি এবং অংশীজনদের উন্নত সেবাপ্রাপ্তির চাহিদা কাস্টমসকে স্মার্ট কাস্টমসে রূপান্তরের অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। রাজস্ব আহরণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিল্পের বিকাশ, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্ন রাখা এবং ক্ষতিকারক পণ্যের গমনাগমন নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিতের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও জনগণের কল্যাণে কাজ করছে কাস্টমস।

আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবসে বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস আয়োজিত সেমিনারে এ অভিমত ব্যক্ত করেন কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার একেএম মাহবুবুর রহমান।

তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে বিভিন্ন দেশের কাস্টমস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লক চেইন, ক্লাউড কম্পিউটিং এবং বিগ ডাটা সহ আধুনিক প্রযুক্তি কাস্টমস কার্যক্রম দ্রুতকরণ এবং ঝুঁকি নিবারণে সফলভাবে ব্যবহার করছে। বিশ্ব পরিস্থিতিতে কাস্টমস এখন রাজস্ব আহরণ ছাড়াও ট্রেড ফেসিলিশন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি, আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনসহ নানাবিধ বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকে।

আমাদের আশা, ভবিষ্যতে স্টেকহোল্ডারদের উপস্থিতি ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাংলাদেশ কাস্টমস সেবা দেবে। এজন্য আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে একটি অটোমেটেড পেপারলেস কাস্টমস সিস্টেম তৈরি করা আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পণ্য চালান জাহাজীকরণ ও খালাস দ্রুততর করা এবং ব্যবসার খরচ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা আমাদের মূল লক্ষ্য।

তিনি জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে এনবিআর আহরিত কর রাজস্ব ৩ লাখ ১ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। যার মধ্যে কাস্টমস আহরিত রাজস্ব ৮৯ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা, ৩০ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে কর রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কাস্টমসের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা।

কাস্টম হাউসের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ট্যাক্সেস আপিলাত ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামের সদস্য মোছা. সফিনা জাহান, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রামের কমিশনার সৈয়দ মুসফিকুর রহমান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার সহ সভাপতি এএম মাহাবুব চৌধুরী ও চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবিদা মোস্তফা। সভাপতিত্ব করেন কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির মহাপরিচালক মো. মাহবুবুজ্জামান।

স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান। তিনি বলেন, বিশ্বের ১৮৪টি দেশ কাস্টমস দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। এবারের কাস্টমস দিবসের প্রতিপাদ্য ‘নার্চারিং দ্যা নেক্সট জেনারেশন: প্রমোটিং অ্যা কালচার অব নলেজ-শেয়ারিং অ্যান্ড প্রফেশনাল প্রাইড ইন কাস্টমস’। (ভবিষ্যৎ প্রজন্মের লালনঃ কাস্টমসে জ্ঞানচর্চার সংস্কৃতি ও উত্তম পেশাদারিত্বের বিকাশ)

সঞ্চালনায় ছিলেন ডেপুটি কমিশনার খাদিজা পারভিন সুমি ও মো. আহসানুল্লাহ। অনুষ্ঠানে মোরশেদ আলমের পরিচালনায় বাংলাদেশ কাস্টমসের কার্যক্রমের ওপর তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

আন্তর্জাতিক শুল্ক দিবস (২৬ জানুয়ারি), বিশ্ব শুল্ক সংস্থা (World Customs Organization), একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন যা বিশ্বব্যাপী আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় শুল্ক সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে। পূর্বে এই সংস্থাটির নাম ছিল শুল্ক সহযোগিতা কেন্দ্র। বিশ্ব শুল্ক সংস্থার দপ্তর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেল্‌স শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত। পৃথিবীর ১৮২টি দেশ বর্তমানে এই সংস্থার সদস্য। ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি ব্রাসেলসে প্রথম কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে এই সংগঠনের নাম বিশ্ব শুল্ক সংস্থা নির্ধারণ করা হয়। ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত এই সংস্থার প্রথম অধিবেশনের স্মরণে প্রতিবছর ২৬ জানুয়ারি তারিখে বিশ্বব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক শুল্ক দিবস’ পালিত হয়।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব