০১:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

হরিরামপুরে জেগে ওঠা চরেই ভাসমান জেলেদের আশ্রয়স্থল

মানিকগঞ্জের পদ্মা অধ্যুষিত অন্যতম উপজেলা হরিরামপুর। পঞ্চাশের দশক থেকে অনবদ্য পদ্মার ভাঙন কবলে ১৩টি ইউনিয়নের মধ্য ৯টি ইউনিয়নের ভৌগলিক আয়তনের অধিকাংশই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙা গড়ার সাথে পাল্লা দিয়েই চলতি বছরে বর্ষার পানি চলে যেতে না যেতেই উপজেলার প্রাণকেন্দ্র আন্ধারমানিক ট্রলার ঘাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে জেগে ওঠেছে সুবিস্তৃত এক বিশাল চর। ওপরে খোলা নীল আকাশ। নিচে ধূ ধূ বালু। জেগে ওঠা চরের কোলে আধো ছইয়ে ঢাকা বাঁধা ছোট্ট দুটি ডিঙ্গি নৌকা।

পাশেই পানির কিনারে বালুর ওপরেই আলগা চুলোই ভাত রান্না করছেন ফরহাদ মন্ডল। তার বাড়ি পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাত বাড়িয়া গ্রামে। তিনি পেশায় একজন মৎস্যজীবি। জমিজমা বলতে শুধুমাত্র ১০ শতাংশের ওপর একমাত্র বাড়িটিই তার সম্বল। প্রায় ২০ বছর যাবৎ মাছ ধরেই এক ছেলে ও এক মেয়েসহ ৫ জনের সংসারে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বছরের নয় মাসই কাটে পদ্মা নদীতে। কাছে গিয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, “২২দিন ধরে পেটের দায়ে নদীতে পড়ে আছি। সারা রাত মাছ ধরি। কোনো সময় দিনেও জাল টানি। নৌকায় আমরা দুই জন আছি। প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার টাকার মাছ বিক্রি করলেও খরচপাতি বাদ দিয়ে তিন থেকে চার শো টাকা করে ভাগে পাই। এ দিয়েই কোনোরকমে স্ত্রী সন্তান নিয়ে সংসার চালাই।”

পাশের নৌকায় বসে ছিল একই গ্রামের নবীন প্রামানিক। ৫ শতাংশ জায়গার ওপর বাড়িতে এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে ছয় সদস্যের সংসার তার। তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই মাছ ধরতে ভাল লাগত। সেই ভাললাগা থেকেই আজ পেশা হয়ে গেছে। এখন মাছ ধরেই সংসার চলে। মাসের পর মাস নদীতে পড়ে থাকতে হয়। বলা যায়, খোলা আকাশের নীচে, এই চরেই আমাদের সংসার। প্রতিদিন ভাগে চার থেকে পাঁচ শো টাকা ভাগে পাই। এ দিয়েই সংসার চালাইতে হয়।”

ফরহাদ মন্ডল ও নবীন প্রামানিকের মত প্রায় শতাধিক জেলে হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে মই জাল টেনে মাছ ধরেন। শীত মৌসুমে নদীতে পানি কম থাকে। ফলে নদীর বিভিন্ন কোলে মই জাল টেনে ছোট বেলে, চিংড়ি, লোহাগাড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরেন জেলেরা। সারারাত মাছ ধরে ভোর বেলায় পদ্মাপাড়ের আন্ধারমানিক ঘাট, বাহাদুরপুর ঘাট, কুশিয়ারচর কালিতলার ঘাট, মালুচি ঘাটসহ ঝিটকা বাজার, মানিকনগর বাজার ও লেছড়াগঞ্জ বাজারেও মাছ বিক্রি করে থাকে বলে জানান জেলেরা। বেলে মাছ ৪০০ টাকা , চিংড়ি ৭০০ টাকা, লোহাগাড়া ৩০০টাকা দরে মাছ বিক্রি করেন বলেও জানান তারা।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

নতুন কর্মসূচি ঘোষণা ‍দিয়েছে কোটা আন্দোলনকারীরা

হরিরামপুরে জেগে ওঠা চরেই ভাসমান জেলেদের আশ্রয়স্থল

প্রকাশিত : ০১:১৬:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

মানিকগঞ্জের পদ্মা অধ্যুষিত অন্যতম উপজেলা হরিরামপুর। পঞ্চাশের দশক থেকে অনবদ্য পদ্মার ভাঙন কবলে ১৩টি ইউনিয়নের মধ্য ৯টি ইউনিয়নের ভৌগলিক আয়তনের অধিকাংশই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙা গড়ার সাথে পাল্লা দিয়েই চলতি বছরে বর্ষার পানি চলে যেতে না যেতেই উপজেলার প্রাণকেন্দ্র আন্ধারমানিক ট্রলার ঘাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে জেগে ওঠেছে সুবিস্তৃত এক বিশাল চর। ওপরে খোলা নীল আকাশ। নিচে ধূ ধূ বালু। জেগে ওঠা চরের কোলে আধো ছইয়ে ঢাকা বাঁধা ছোট্ট দুটি ডিঙ্গি নৌকা।

পাশেই পানির কিনারে বালুর ওপরেই আলগা চুলোই ভাত রান্না করছেন ফরহাদ মন্ডল। তার বাড়ি পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাত বাড়িয়া গ্রামে। তিনি পেশায় একজন মৎস্যজীবি। জমিজমা বলতে শুধুমাত্র ১০ শতাংশের ওপর একমাত্র বাড়িটিই তার সম্বল। প্রায় ২০ বছর যাবৎ মাছ ধরেই এক ছেলে ও এক মেয়েসহ ৫ জনের সংসারে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বছরের নয় মাসই কাটে পদ্মা নদীতে। কাছে গিয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, “২২দিন ধরে পেটের দায়ে নদীতে পড়ে আছি। সারা রাত মাছ ধরি। কোনো সময় দিনেও জাল টানি। নৌকায় আমরা দুই জন আছি। প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার টাকার মাছ বিক্রি করলেও খরচপাতি বাদ দিয়ে তিন থেকে চার শো টাকা করে ভাগে পাই। এ দিয়েই কোনোরকমে স্ত্রী সন্তান নিয়ে সংসার চালাই।”

পাশের নৌকায় বসে ছিল একই গ্রামের নবীন প্রামানিক। ৫ শতাংশ জায়গার ওপর বাড়িতে এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে ছয় সদস্যের সংসার তার। তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই মাছ ধরতে ভাল লাগত। সেই ভাললাগা থেকেই আজ পেশা হয়ে গেছে। এখন মাছ ধরেই সংসার চলে। মাসের পর মাস নদীতে পড়ে থাকতে হয়। বলা যায়, খোলা আকাশের নীচে, এই চরেই আমাদের সংসার। প্রতিদিন ভাগে চার থেকে পাঁচ শো টাকা ভাগে পাই। এ দিয়েই সংসার চালাইতে হয়।”

ফরহাদ মন্ডল ও নবীন প্রামানিকের মত প্রায় শতাধিক জেলে হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে মই জাল টেনে মাছ ধরেন। শীত মৌসুমে নদীতে পানি কম থাকে। ফলে নদীর বিভিন্ন কোলে মই জাল টেনে ছোট বেলে, চিংড়ি, লোহাগাড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরেন জেলেরা। সারারাত মাছ ধরে ভোর বেলায় পদ্মাপাড়ের আন্ধারমানিক ঘাট, বাহাদুরপুর ঘাট, কুশিয়ারচর কালিতলার ঘাট, মালুচি ঘাটসহ ঝিটকা বাজার, মানিকনগর বাজার ও লেছড়াগঞ্জ বাজারেও মাছ বিক্রি করে থাকে বলে জানান জেলেরা। বেলে মাছ ৪০০ টাকা , চিংড়ি ৭০০ টাকা, লোহাগাড়া ৩০০টাকা দরে মাছ বিক্রি করেন বলেও জানান তারা।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব