০২:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

মেয়াদ শেষের আগেই শোধ করা যাবে ঋণ

বাণিজ্যিক ব্যাংক চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠিত ‘রপ্তানি সহায়ক প্রাক অর্থায়ন তহিবল (ইএফপিএফ)’ থেকে নেয়া ঋণ মেয়াদ শেষের পূর্বে আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ পরিশোধ করতে পারবে। আংশিক ঋণ পরিশোধ করলে অবশিষ্ট অর্থ সুদসহ একসঙ্গে মেয়াদ শেষে পরিশোধ করার সুযোগ দিয়ে বুধবার সার্কুলার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রাক অর্থায়ন তহবিল থেকে নেয়া ঋণের সুদ ব্যয় হ্রাস করতে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ‘‘ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত অর্থ মেয়াদপূর্তির পূর্বে সম্পূর্ণ বা আংশিক পরিশোধ/সমন্বয় করা যাবে। আংশিক সমন্বয়ের ক্ষেত্রে অবশিষ্ট অপরিশোধিত অংশ নির্ধারিত মেয়াদান্তে এককালীন সুদ/মুনাফাসহ পরিশোধযোগ্য হবে ‘’ গত জানুয়ারিতে ১০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে গঠিত এ তহবিল থেকে নেয়া ঋণের সুদ গ্রাহক পর্যায়ে হবে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে এক দশমিক পাঁচ শতাংশ সুদে অর্থ নিয়ে ব্যাংকগুলো তার সঙ্ড়ে খরচ ও মুনাফা যোগ করে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে পারবে। সরাসরি ও প্রচ্ছন্ন রপ্তানি খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য দেয়া ঋণের মেয়াদ গ্রাহক পর্যায়ে যতোদিন দিনই হোকনা কেনো, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ১৮০ দিন মেয়াদের জন্য নিতে পারবে।

বিশেষ বিবেচনায় অনুমতি স্বাপেক্ষে আরো ৯০ দিন বাড়ানোর সুযোগ রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তবে ১৮০ দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ঋণ পরিশোধ না হলে বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকা বাণিজ্যিক ব্যাংকের হিসাব থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অর্থ কেটে নিবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বিদেশি মুদ্রায় গঠিত ইডিএফ এর অর্থ রিজার্ভ গণনার মধ্যে রেখে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ ঋণ চুক্তির শর্তে। ইডিএফকে দায় হিসেবে দেখিয়ে রিজার্ভ থেকে বাদ দেয়ার পরামর্শ মেনে গত জানুয়ারি থেকে সাত বিলিয়ন ডলারের ইডিএফ তহবিলের আকার কমিয়ে আনতে শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ইডিএফ তহবিল থেকে ঋণ নিতে নিরুৎসাহিত করতে সুদহার সাড়ে ৪ শতাংশে উন্নীত করার পাশাপাশি অনদায়ী অর্থের উপর অতিরিক্ত ৪ চার শতাংশ দণ্ড সুদ আরোপ করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

এরপরই রপ্তানিকারকদের সহায়তায় টাকায় গঠন করা হয় ইএফপিএফ। এ তহবিল থেকে ঋণ পাওয়ার নীতিমালায় বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ‘‘স্থানীয় রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানি/স্থানীয় সংগ্রহের বিপরীতে আলোচ্য রপ্তানি সহায়ক তহবিল হতে প্রাক-অর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করা যাবে।’ 

  •  যে কোন প্রত্যক্ষ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান এবং প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারক তহবিল থেকে অর্থ নিতে পারবেন।
  •  এ তহবিলের অর্থ রপ্তানিকারকের ব্যাক-টু-ব্যাক ঋণপত্রের মাধ্যমে উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানির জন্য ব্যবহার করা যাবে।
  •  ব্যাক-টু-ব্যাক ঋণপত্রের বিপরীতে স্থানীয় উৎপাদনকারী-সরবরাহকারী কাঁচামাল আমদানির- জন্যও ঋণ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে;
  •  এ তহবিল হতে ঋণ সুবিধাগ্রহণকারী কোন গ্রাহক উক্ত নির্ধারিত রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানিমূল্য অপ্রত্যাবাসিত থাকলে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারক এ তহবিলের আওতায় নতুনভাবে আর কোন ঋণ সুবিধা প্রাপ্য হবেন না।
  •  নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে উক্ত রপ্তানিমূল্য যথাসময়ে প্রত্যাবাসিত না হলে আরও একবার সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা নতুন ঋণসুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।
  •  নতুন ঋণ সুবিধা গ্রহণের পূর্বে ইতঃপূর্বে ইস্যুকৃত ব্যাক-টু-ব্যাক ঋণপত্রের বিপরীতে সৃষ্ট দায়ের ন্যূনতম ৫০% গ্রাহককে নগদে পরিশোধ করতে হবে। তবে নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট সন্তোষজনক মর্মে প্রতীয়মান হতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
  •  গ্রাহক কর্তৃক রপ্তানি ঋণপত্রের বিপরীতে কাঁচামাল আমদানির নিমিত্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ইডিএফসহ অন্য কোন তহবিল হতে সুবিধাপ্রাপ্ত হলে এ তহবিলের আওতায় কোন ধরণের ঋণসুবিধা প্রাপ্য হবে না।
  • শেল কোম্পানী/প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি আদেশ বা শেল ব্যাংকের রপ্তানি ঋণপত্রের বিপরীতে প্রদত্ত ব্যাক-টু-ব্যাক ঋণপত্রের জন্য এ তহবিলের আওতায় প্রাক-অর্থায়ন সুবিধা প্রদান করা যাবে না।
  •  ঋণের অর্থের পরিমাণ রপ্তানির খাত ভিত্তিক সর্বোচ্চ সীমা হবে ২০০ কোটি টাকা।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এনআই

জনপ্রিয়

মুরাদনগরের সাবেক ৫বারের এমপি কায়কোবাদের অপেক্ষায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ

মেয়াদ শেষের আগেই শোধ করা যাবে ঋণ

প্রকাশিত : ০৯:৩৪:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বাণিজ্যিক ব্যাংক চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠিত ‘রপ্তানি সহায়ক প্রাক অর্থায়ন তহিবল (ইএফপিএফ)’ থেকে নেয়া ঋণ মেয়াদ শেষের পূর্বে আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ পরিশোধ করতে পারবে। আংশিক ঋণ পরিশোধ করলে অবশিষ্ট অর্থ সুদসহ একসঙ্গে মেয়াদ শেষে পরিশোধ করার সুযোগ দিয়ে বুধবার সার্কুলার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রাক অর্থায়ন তহবিল থেকে নেয়া ঋণের সুদ ব্যয় হ্রাস করতে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ‘‘ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত অর্থ মেয়াদপূর্তির পূর্বে সম্পূর্ণ বা আংশিক পরিশোধ/সমন্বয় করা যাবে। আংশিক সমন্বয়ের ক্ষেত্রে অবশিষ্ট অপরিশোধিত অংশ নির্ধারিত মেয়াদান্তে এককালীন সুদ/মুনাফাসহ পরিশোধযোগ্য হবে ‘’ গত জানুয়ারিতে ১০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে গঠিত এ তহবিল থেকে নেয়া ঋণের সুদ গ্রাহক পর্যায়ে হবে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে এক দশমিক পাঁচ শতাংশ সুদে অর্থ নিয়ে ব্যাংকগুলো তার সঙ্ড়ে খরচ ও মুনাফা যোগ করে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে পারবে। সরাসরি ও প্রচ্ছন্ন রপ্তানি খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য দেয়া ঋণের মেয়াদ গ্রাহক পর্যায়ে যতোদিন দিনই হোকনা কেনো, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ১৮০ দিন মেয়াদের জন্য নিতে পারবে।

বিশেষ বিবেচনায় অনুমতি স্বাপেক্ষে আরো ৯০ দিন বাড়ানোর সুযোগ রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তবে ১৮০ দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ঋণ পরিশোধ না হলে বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকা বাণিজ্যিক ব্যাংকের হিসাব থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অর্থ কেটে নিবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বিদেশি মুদ্রায় গঠিত ইডিএফ এর অর্থ রিজার্ভ গণনার মধ্যে রেখে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ ঋণ চুক্তির শর্তে। ইডিএফকে দায় হিসেবে দেখিয়ে রিজার্ভ থেকে বাদ দেয়ার পরামর্শ মেনে গত জানুয়ারি থেকে সাত বিলিয়ন ডলারের ইডিএফ তহবিলের আকার কমিয়ে আনতে শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ইডিএফ তহবিল থেকে ঋণ নিতে নিরুৎসাহিত করতে সুদহার সাড়ে ৪ শতাংশে উন্নীত করার পাশাপাশি অনদায়ী অর্থের উপর অতিরিক্ত ৪ চার শতাংশ দণ্ড সুদ আরোপ করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

এরপরই রপ্তানিকারকদের সহায়তায় টাকায় গঠন করা হয় ইএফপিএফ। এ তহবিল থেকে ঋণ পাওয়ার নীতিমালায় বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ‘‘স্থানীয় রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানি/স্থানীয় সংগ্রহের বিপরীতে আলোচ্য রপ্তানি সহায়ক তহবিল হতে প্রাক-অর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করা যাবে।’ 

  •  যে কোন প্রত্যক্ষ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান এবং প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারক তহবিল থেকে অর্থ নিতে পারবেন।
  •  এ তহবিলের অর্থ রপ্তানিকারকের ব্যাক-টু-ব্যাক ঋণপত্রের মাধ্যমে উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানির জন্য ব্যবহার করা যাবে।
  •  ব্যাক-টু-ব্যাক ঋণপত্রের বিপরীতে স্থানীয় উৎপাদনকারী-সরবরাহকারী কাঁচামাল আমদানির- জন্যও ঋণ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে;
  •  এ তহবিল হতে ঋণ সুবিধাগ্রহণকারী কোন গ্রাহক উক্ত নির্ধারিত রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানিমূল্য অপ্রত্যাবাসিত থাকলে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারক এ তহবিলের আওতায় নতুনভাবে আর কোন ঋণ সুবিধা প্রাপ্য হবেন না।
  •  নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে উক্ত রপ্তানিমূল্য যথাসময়ে প্রত্যাবাসিত না হলে আরও একবার সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা নতুন ঋণসুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।
  •  নতুন ঋণ সুবিধা গ্রহণের পূর্বে ইতঃপূর্বে ইস্যুকৃত ব্যাক-টু-ব্যাক ঋণপত্রের বিপরীতে সৃষ্ট দায়ের ন্যূনতম ৫০% গ্রাহককে নগদে পরিশোধ করতে হবে। তবে নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট সন্তোষজনক মর্মে প্রতীয়মান হতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
  •  গ্রাহক কর্তৃক রপ্তানি ঋণপত্রের বিপরীতে কাঁচামাল আমদানির নিমিত্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ইডিএফসহ অন্য কোন তহবিল হতে সুবিধাপ্রাপ্ত হলে এ তহবিলের আওতায় কোন ধরণের ঋণসুবিধা প্রাপ্য হবে না।
  • শেল কোম্পানী/প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি আদেশ বা শেল ব্যাংকের রপ্তানি ঋণপত্রের বিপরীতে প্রদত্ত ব্যাক-টু-ব্যাক ঋণপত্রের জন্য এ তহবিলের আওতায় প্রাক-অর্থায়ন সুবিধা প্রদান করা যাবে না।
  •  ঋণের অর্থের পরিমাণ রপ্তানির খাত ভিত্তিক সর্বোচ্চ সীমা হবে ২০০ কোটি টাকা।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এনআই