০৯:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে

  • নাজমুল ইসলাম
  • প্রকাশিত : ১০:০০:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • 64

এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, শ্রম শক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ শতকরা ৩৬ ভাগের বেশি। এই হার ৪৫ ভাগের উন্নীত করা গেলে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি শতকরা ২ ভাগ বেশি হতো। এদিকে, বাংলাদেশের নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়নে ৭ বছর মেয়াদী কৌশলপত্র তৈরি করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং ইউএনএসকাপ। এজন্য মোট ১০টি ক্ষেত্রে সহায়তার পরামর্শ দেয়া হয়েছে কৌশলপত্রে। আর জাতীয় পর্যায়ের উদ্যোগের পরিপূরক হলো মহিলা উদ্যোক্ত হাব। যা ভারতের প্রথম এবং একমাত্র রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বাধীন ইনকিউবেটর।

আগারগাঁও পর্যটন ভবনে বুধবার এসএমই ফাউন্ডেশন এবং ইউএনএসকাপ-এর উদ্যোগে ‘বাংলাদেশে নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়ন কৌশলপত্র’ নিয়ে অংশীজনদের মতামত গ্রহণ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাকিয়া খানম। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী। এছাড়া অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন ইউএনএসকাপ-এর সামাজিক উন্নয়ন বিভাগের লিঙ্গ সমতা ও সামাজিক অšত্মর্ভূক্তি শাখার প্রধান চ্যাচাই। বক্তব্য দেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজিম হাসান সাত্তার।

অনুষ্ঠানে নারী-উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তর, চেম্বার/অ্যাসোসিয়েশন, উইমেন চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

মূল প্রবন্ধে ইউএনএসকাপ-এর পরামর্শক রাধিকা বেহুরিয়া এবং ড. অনন্য রায়হান জানান, বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১৩ অনুযায়ী, দেশের ৭৮ লাখের বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৭.২ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা। তবে শ্রমে নারীর অংশগ্রহণ শতকরা ৩৬ ভাগের বেশি। এই হার ৪৫ ভাগের উন্নীত করা গেলে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি শতকরা ২ ভাগ বেশি হতো। এজন্য নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়নে এই কৌশলপত্র তৈরি করা হয়েছে। এই কৌশলপত্রে প্রাতিষ্ঠানিক ও নীতি সহায়তা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, নারীর সম্ভাবনা কাজে লাগানো, অর্থায়ন বাড়ানো, বাজার সংযোগ, ডিজিটাল ও আইসিটি উন্নয়ন, সঠিক ডাটা ও জ্ঞানের উন্নয়ন, প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় বাড়ানো এবং জবাবদিহীতা নিশ্চিতকরণ-এই ১০টি ক্ষেত্রে সহায়তার বৃদ্ধির পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কৌশলপত্র বা¯ত্মবায়নে সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে একযোগে নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়নে কাজ করার পরামর্শও দেয়া হয়।

চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে বলা হয়েছে, উদ্যোক্তারা মাইক্রো এবং কটেজ বিভাগে ভিড় করে বেশি। অর্থের অ্যাক্সেসের অভাব মহিলাদের উদ্যোক্তাদের উদ্যোগগুলোকে দমিয়ে রাখে। নারীদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং নেটওয়ার্কিং সুযোগের কম অ্যাক্সেস রয়েছে। নারী উদ্যোক্তাদের বাজারে সীমিত প্রবেশাধিকার রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং সবুজ ব্যবসার সম্ভাবনা। জেন্ডার ডিজিটাল বিভাজন রয়ে গেছে তবে নারী উদ্যোক্তারা সোশ্যাল মিডিয়া এবং স্টার্টআপ ওয়েভের তরঙ্গে চড়তে শুরম্ন করেছে। বিশেষ করে এলডিসি স্নাতকের আলোকে নারী উদ্যোক্তাদের প্রচারের জন্য নীতি ও নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। নারী উদ্যোক্তাদের অবস্থার উপর ডেটা ফাঁক রয়ে গেছে। কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব মহিলাদের উপর বহুদূর পর্যন্ত পৌঁছেছিল।

প্রতিবেশি দেশ ভারত বেশি কিছু কাজ তৈরি করেছে, যেমন স্পিড মেন্টরিং, সেন্ট কল্যাণী স্কিম (১ মিলিয়ন পর্যšত্ম ঋণের বিধান সহ) এবং মহিলা উদ্যোক্তা পস্ন্যাটফর্ম (ডঊচ)- যা মহিলাদের অনুপ্রাণিত করার জন্য একটি জাতীয় স্তরের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। জাতীয় পর্যায়ের উদ্যোগের পরিপূরক হলো মহিলা উদ্যোক্ত হাব। যা ভারতের প্রথম এবং একমাত্র রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বাধীন ইনকিউবেটর। যা ইনকিউবেশনের মাধ্যমে মহিলাদের উদ্যোক্তাদের উন্নীত করা, সরকারি পরিষেবাগুলিতে অ্যাক্সেস এবং মহিলাদের নেতৃত্বাধীন উদ্যোগগুলির উন্নতির জন্য একটি সহযোগী নেটওয়ার্ক তৈরি করে।

অনলাইন এবং শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে, উদ্যোক্তাদের ধারণা থেকে প্রোটোটাইপ তৈরিতে অগ্রসর হতে উদ্ভাবকদের সুবিধার্থে প্রাক-ইনকিউবেশন সমর্থন অন্তর্ভূক্ত করে উদ্যোক্তাদের যাত্রার জীবন-চক্র কভার করার জন্য বিভিন্ন পরিষেবা সরবরাহ করে। মহিলাদের তাদের প্রোটোটাইপ থেকে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা এবং স্টার্ট-আপে রূপাšত্মর করতে সক্ষম করে ইনকিউবেশন এবং ত্বরণ সমর্থন মহিলাদের নেতৃত্বে উদ্যোগগুলিকে স্ব-টেকসই ব্যবসায় স্কেল করতে সহায়তা করে বলে উপস্থাপনায় প্রকাম করে ড. অনন্যা রায়হান।

বক্তারা বলেন, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি নারী। তাদেরকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন কখনো সম্বব না। নারীদেরকে এড়িয়ে আসতে সহযোগীতা করতে হবে। তারা পিছিয়ে থাকলে দেমের একটি বড় অংশ পেছনে থাকবে। আমাদের নারী উদ্যোক্তারা অনেক বেশি প্রটেনশিয়াল। ব্যাংক থেকে ঋণ পাবার ড়্গেেত্র নারী উদ্যোক্তারা বেশ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/এনআই

জনপ্রিয়

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার মনোনয়নপত্র জমা

নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে

প্রকাশিত : ১০:০০:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, শ্রম শক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ শতকরা ৩৬ ভাগের বেশি। এই হার ৪৫ ভাগের উন্নীত করা গেলে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি শতকরা ২ ভাগ বেশি হতো। এদিকে, বাংলাদেশের নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়নে ৭ বছর মেয়াদী কৌশলপত্র তৈরি করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং ইউএনএসকাপ। এজন্য মোট ১০টি ক্ষেত্রে সহায়তার পরামর্শ দেয়া হয়েছে কৌশলপত্রে। আর জাতীয় পর্যায়ের উদ্যোগের পরিপূরক হলো মহিলা উদ্যোক্ত হাব। যা ভারতের প্রথম এবং একমাত্র রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বাধীন ইনকিউবেটর।

আগারগাঁও পর্যটন ভবনে বুধবার এসএমই ফাউন্ডেশন এবং ইউএনএসকাপ-এর উদ্যোগে ‘বাংলাদেশে নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়ন কৌশলপত্র’ নিয়ে অংশীজনদের মতামত গ্রহণ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাকিয়া খানম। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী। এছাড়া অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন ইউএনএসকাপ-এর সামাজিক উন্নয়ন বিভাগের লিঙ্গ সমতা ও সামাজিক অšত্মর্ভূক্তি শাখার প্রধান চ্যাচাই। বক্তব্য দেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজিম হাসান সাত্তার।

অনুষ্ঠানে নারী-উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তর, চেম্বার/অ্যাসোসিয়েশন, উইমেন চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

মূল প্রবন্ধে ইউএনএসকাপ-এর পরামর্শক রাধিকা বেহুরিয়া এবং ড. অনন্য রায়হান জানান, বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১৩ অনুযায়ী, দেশের ৭৮ লাখের বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৭.২ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা। তবে শ্রমে নারীর অংশগ্রহণ শতকরা ৩৬ ভাগের বেশি। এই হার ৪৫ ভাগের উন্নীত করা গেলে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি শতকরা ২ ভাগ বেশি হতো। এজন্য নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়নে এই কৌশলপত্র তৈরি করা হয়েছে। এই কৌশলপত্রে প্রাতিষ্ঠানিক ও নীতি সহায়তা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, নারীর সম্ভাবনা কাজে লাগানো, অর্থায়ন বাড়ানো, বাজার সংযোগ, ডিজিটাল ও আইসিটি উন্নয়ন, সঠিক ডাটা ও জ্ঞানের উন্নয়ন, প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় বাড়ানো এবং জবাবদিহীতা নিশ্চিতকরণ-এই ১০টি ক্ষেত্রে সহায়তার বৃদ্ধির পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কৌশলপত্র বা¯ত্মবায়নে সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে একযোগে নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়নে কাজ করার পরামর্শও দেয়া হয়।

চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে বলা হয়েছে, উদ্যোক্তারা মাইক্রো এবং কটেজ বিভাগে ভিড় করে বেশি। অর্থের অ্যাক্সেসের অভাব মহিলাদের উদ্যোক্তাদের উদ্যোগগুলোকে দমিয়ে রাখে। নারীদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং নেটওয়ার্কিং সুযোগের কম অ্যাক্সেস রয়েছে। নারী উদ্যোক্তাদের বাজারে সীমিত প্রবেশাধিকার রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং সবুজ ব্যবসার সম্ভাবনা। জেন্ডার ডিজিটাল বিভাজন রয়ে গেছে তবে নারী উদ্যোক্তারা সোশ্যাল মিডিয়া এবং স্টার্টআপ ওয়েভের তরঙ্গে চড়তে শুরম্ন করেছে। বিশেষ করে এলডিসি স্নাতকের আলোকে নারী উদ্যোক্তাদের প্রচারের জন্য নীতি ও নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। নারী উদ্যোক্তাদের অবস্থার উপর ডেটা ফাঁক রয়ে গেছে। কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব মহিলাদের উপর বহুদূর পর্যন্ত পৌঁছেছিল।

প্রতিবেশি দেশ ভারত বেশি কিছু কাজ তৈরি করেছে, যেমন স্পিড মেন্টরিং, সেন্ট কল্যাণী স্কিম (১ মিলিয়ন পর্যšত্ম ঋণের বিধান সহ) এবং মহিলা উদ্যোক্তা পস্ন্যাটফর্ম (ডঊচ)- যা মহিলাদের অনুপ্রাণিত করার জন্য একটি জাতীয় স্তরের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। জাতীয় পর্যায়ের উদ্যোগের পরিপূরক হলো মহিলা উদ্যোক্ত হাব। যা ভারতের প্রথম এবং একমাত্র রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বাধীন ইনকিউবেটর। যা ইনকিউবেশনের মাধ্যমে মহিলাদের উদ্যোক্তাদের উন্নীত করা, সরকারি পরিষেবাগুলিতে অ্যাক্সেস এবং মহিলাদের নেতৃত্বাধীন উদ্যোগগুলির উন্নতির জন্য একটি সহযোগী নেটওয়ার্ক তৈরি করে।

অনলাইন এবং শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে, উদ্যোক্তাদের ধারণা থেকে প্রোটোটাইপ তৈরিতে অগ্রসর হতে উদ্ভাবকদের সুবিধার্থে প্রাক-ইনকিউবেশন সমর্থন অন্তর্ভূক্ত করে উদ্যোক্তাদের যাত্রার জীবন-চক্র কভার করার জন্য বিভিন্ন পরিষেবা সরবরাহ করে। মহিলাদের তাদের প্রোটোটাইপ থেকে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা এবং স্টার্ট-আপে রূপাšত্মর করতে সক্ষম করে ইনকিউবেশন এবং ত্বরণ সমর্থন মহিলাদের নেতৃত্বে উদ্যোগগুলিকে স্ব-টেকসই ব্যবসায় স্কেল করতে সহায়তা করে বলে উপস্থাপনায় প্রকাম করে ড. অনন্যা রায়হান।

বক্তারা বলেন, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি নারী। তাদেরকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন কখনো সম্বব না। নারীদেরকে এড়িয়ে আসতে সহযোগীতা করতে হবে। তারা পিছিয়ে থাকলে দেমের একটি বড় অংশ পেছনে থাকবে। আমাদের নারী উদ্যোক্তারা অনেক বেশি প্রটেনশিয়াল। ব্যাংক থেকে ঋণ পাবার ড়্গেেত্র নারী উদ্যোক্তারা বেশ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/এনআই