ঢাকা দুপুর ২:৩৫, রবিবার, ১লা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রচণ্ড গরমে কমছে শ্রমিকদের কর্মক্ষমতা

গরমে অতিষ্ঠ দেশ তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। দিনের বেলায় রাস্তায় চলাচল মুশকিল। তারপরও কাজের তাগিতে দিনের মানুষকে দিনের বেলায় বের হতে হচ্ছে। ঠান্ডা পানি, ডাবের পানি পান করে অনেকেই তৃষ্ণা মেটানো চেষ্টা করছে। অনেকেই বলছেন এই বছর গরম অনেক বেশি।
গরমের পর প্রশান্তির এই ঋতু এবার উল্টো আচরণ করছে।প্রচণ্ড গরমের কারণে বাংলাদেশে শ্রমিকদের কর্মক্ষমতা কমছে।তাঁদের মধ্যে দুই খাতের শ্রমিক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

এ বছর এযাবৎ পৃথিবীতে সবচেয়ে গরম দিনের রেকর্ড। ২০১৬ সালে বিশ্বে গড় সবচেয়ে উষ্ণ তাপমাত্রার যে রেকর্ড ছিল, এবারের তাপমাত্রা তাকে ছাড়িয়ে গেছে।এবার প্রথমবারের মতো পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১৭ সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে।

বিশ্বে যে চরম আবহাওয়া বিরাজ করছে বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। চরম গরম আবহাওয়ার সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশের মানুষের জীবন, জীবিকা ও স্বাস্থ্যের ওপরে পড়ছে।

গরমের কারণে শ্রমিকেরা আগের চেয়ে কম কাজ করতে পারছেন। তাঁদের স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হচ্ছে। আর সামগ্রিকভাবে জাতীয় উৎপাদন কমে আসছে।

উষ্ণতা যে হারে বাড়ছে, তা অব্যাহত থাকলে ২০৮০ সালের মধ্যে সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের তাপমাত্রা তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। আর তাতে এখানকার শ্রমিকদের কর্মক্ষমতা ৪৬ শতাংশ কমে আসতে পারে।

ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে ভরা বর্ষায় অর্থাৎ জুন-জুলাই মাসেও বৃষ্টি কমছে। ফলে ওই সময়ে গরম বাড়ছে। আর আবহাওয়ার পরিবর্তন ও প্রকৃতি ধ্বংস করায় গ্রীষ্মকাল আরও উষ্ণ হয়ে উঠছে। গত বছরও জুলাই মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে। আর এপ্রিল ও মে মাস ছিল দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণতম। ফলে আমাদের এই অতি উষ্ণ গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালের সঙ্গে কীভাবে খাপ খাইয়ে চলা যায়, সেই উদ্যোগ নিতে হবে। সে সময় দেশের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল।

অতিরিক্ত গরমের কারণে মানুষের শরীরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হিটস্ট্রোক বেড়ে যায়, এতে অনেকের মৃত্যুও হয়। মানুষের চিন্তা করার ক্ষমতাও কমে আসে। ফলে সামগ্রিকভাবে তাঁদের কাজ করার ক্ষমতা কমে আসে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের উপকূল ও বন্যাপ্রবণ এলাকা থেকে মানুষ শহরে চলে আছে।

অতি উষ্ণ তাপমাত্রার মতো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলো বাংলাদেশে স্পষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে তাপপ্রবাহ সরাসরি এখানকার শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ধরে রাখতে হলে এ ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে শহরে গাছপালা ও জলাভূমি বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

কৃষি শ্রমিকদের জন্য এই গরমের মধ্যে প্রতি দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর বিশ্রাম নেওয়া জরুরী। অতিগরমে শ্রমিকের স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়বে। মালিকেরা শ্রমিকদের কাছ থেকে কম কাজ পাবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ বিএইচ

এ বিভাগের আরও সংবাদ