খাগড়াছড়ির রামগড় স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) উদ্বোধন করা হবে।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি টার্মিনালটি উদ্বোধন করবেন বলে নিশ্চিত করেছে রামগড় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।
প্রকল্প পরিচালক সারোয়ার আলম জানান, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রামগড় স্থলবন্দরের আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আরো বেশ কয়েকটি প্রকল্পও একই সঙ্গে উদ্বোধন করা হবে।
তবে প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল উদ্বোধন হলেও যাত্রী পারাপার শুরু হচ্ছে না। ভারত অংশের প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম শুরু হবে। ইতোমধ্যে রামগড় স্থলবন্দর দিয়ে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালুর লক্ষ্যে টার্মিনাল শেড, ব্যাংক, কাস্টমস, বিজিবি ও পুলিশের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
স্থল বন্দর নির্মাণ নিয়ে সীমান্ত জটিলতায় এতদিন কাজ শুরু করা যায়নি। তবে একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে সেই সমস্যা সমাধান হওয়ায় সহসা স্থলবন্দর নির্মাণ করা শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের জানুয়ারীতে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরকালে সেদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর সঙ্গে স্থলবন্দর চালুর যৌথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৫ সালের ৬ জুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতুটি-১-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং ২০২১ সালের ৯ মার্চ ১৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির উদ্বোধন করেন। খাগড়াছড়ির রামগড়ে মহামুনি এলাকায় ৪১২ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৪. ৮০ মিটার প্রস্থ আন্তর্জাতিক সেতুটি দেশের প্রথম মৈত্রী সেতু।
এরপর স্থলবন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে সরকার প্রকল্প গ্রহণ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দিলেও আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইনে বিধিনিষেধ এবং স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণে অনুমতি নেই জানিয়ে বিএসএফ বাধা দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। এই নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর স্থল বন্দর নির্মাণ জট খুলেছে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ১১২ কিলোমিটার দূরত্বের এই স্থলবন্দর ব্যবহার করে মাত্র ৩ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ট্রান্সশিপমেন্টের পণ্য যেতে পারবে ভারতে। দেশটির সেভেন সিস্টার্স খ্যাত উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যসহ মেঘালয়, আসাম, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড এবং অরুণাচলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে এই বন্দর দিয়েই। একই সঙ্গে রামগড় স্থলবন্দর ব্যবহার করে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে পণ্য পরিবহন করতে পারবেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। ইমিগ্রেশন স্টেশন চালু হলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামসহ আশপাশ এলাকার মানুষ রামগড় ও সাব্রুম সীমান্ত পথে ভারতে ভ্রমণে যেতে পারবেন। একইভাবে ভারতের ত্রিপুরাসহ আশেপাশের রাজ্যের মানুষও এ সীমান্ত পথে বাংলাদেশে ভ্রমণে আসবেন। সব মিলে বাড়বে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পর্যটনসহ বিকশিত হবে পাহাড়ের অর্থনীতি।
বিজনেস বাংলাদেশ/এমএইচটি