০৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সীতাকুণ্ডে যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি, দুর্ঘটনার ঝুঁকি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে যত্রতত্র ভাবে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার। তাতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। পৌর এলাকায় সহস্রাধিক দোকান নিয়ে সীতাকুণ্ড বাজার। সেখানকার জাফর ইলেকট্রিক নামক দোকানের ভিতরে ও বাইরে স্তরে স্তরে সাজানো আছে গ্যাস সিলিন্ডার। পাশে দাহ্য পদার্থ গ্যাস লাইটার রিফিলের যন্ত্রপাতি, চলছে রিফিলের কাজও। একই সাথে গ্যাস সিলিন্ডারের ওপর রেখে চলছে গ্র্যান্ডিং মেশিনে চুলা মেরামতের কাজ। মেশিন থেকে আগুনের ফুলকি ছিটকে পড়ছে গ্যাস সিলিন্ডারগুলোতে, যেন এক বোমা সাদৃশ দোকান। তারপাশে পাশে রয়েছে খাবার হোটেলের গ্যাসের চুলাও, যে কোন মূহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের বিস্ফোরণ। দোকানটিতে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা বা বিক্রির কোন অনুমোদন নেই। কেবল জাফর ইলেকট্রিকই নয় সীতাকুণ্ড বাজার ঘুরে নামে-বেনামে এমন অনেক দোকানের দেখা মেলে। যেসব মূলত খাবার, মুদি, ইলেকট্রিক কিংবা দাহ্য পদার্থ কালো লাকড়ির দোকান। শুধু সীতাকুণ্ড পৌরবাজার নয় পুরো উপজেলাজুড়ে হাট-বাজার, গ্রাম-গঞ্জে শত শত দোকানী কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই বিক্রি করছে গ্যাস সিলিন্ডার। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নেই কোন নজরদারি ও তদারকি। অনুসন্ধানে দেখা যায় নিজস্ব বাসা-বাড়ী, রান্নাঘর ও গোডাউন থেকে বাজারজাত করছে ব্যবসায়ীরা। তথ্য অনুযায়ী গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি ও মজুদ করতে ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক পরিদফতরের লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নেয়ার বিধান রয়েছে। ২০০৪ সালের এলপিজি মজুদ সংরক্ষণ আইনে বলা হয়েছে, বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতীত কেউ এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ করতে পারবে না। গ্যাস সিলিন্ডার মজুদের স্থান সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সেখানে কোনো প্রকারের আগুন বা বৈদ্যুতিক সংস্পর্শ যাতে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কিন্তু কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সীতাকুণ্ডে যত্রতত্রভাবে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে।
বিস্ফোরক পরিদফতর চট্টগ্রামের পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন জানান, নিয়ম অনুযায়ী খুচরা দোকানে বিক্রির জন্য সর্বোচ্চ ৮টি গ্যাস সিলিন্ডার রাখা যাবে। এক্ষেত্রে কেবল ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স নিলেই হবে। ৮টি গ্যাস সিলিন্ডার বা সর্বমোট ১শ লিটারের বেশী গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ করতে হলে বিস্ফোরক পরিদফতরের লাইসেন্স বাধ্যতামূলক। আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে। শীঘ্রই অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার দোকানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার নুরুল আলম দুলাল জানান, পৌর এলাকায় অর্ধশতাধিক গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান রয়েছে। এর মধ্যে চার থেকে ৫টির ফায়ার লাইসেন্স আছে। এ লাইসেন্স নিতে হলে অবশ্যই দোকান ঘর পাকা হতে হবে।
এদিকে সীতাকুণ্ড উপজেলায় ফায়ার লাইসেন্সের দায়িত্বরত কর্মকর্তা আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমার জানামতে সীতাকুণ্ডে কোন গ্যাস সিলিন্ডার দোকানের ফায়ার লাইসেন্স নেই এমনকি আমি কর্মস্থলে যোগ দেয়ার ৮ মাসে কোন গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি দোকানকে লাইসেন্স দেইনি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি বা মজুদ করার কারণে দেশে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। এরপরও অসাধু ব্যবসায়ীদের আইন অমান্যের প্রবণতা কমছে না। সীতাকুণ্ডে লাইসেন্সবিহীন গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এখনই যথাযথ প্রদক্ষেপ নিতে হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

 

ট্যাগ :

শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আসলামের মামলা প্রত্যাহারের দাবি

সীতাকুণ্ডে যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি, দুর্ঘটনার ঝুঁকি

প্রকাশিত : ০৭:২৬:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০২৪

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে যত্রতত্র ভাবে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার। তাতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। পৌর এলাকায় সহস্রাধিক দোকান নিয়ে সীতাকুণ্ড বাজার। সেখানকার জাফর ইলেকট্রিক নামক দোকানের ভিতরে ও বাইরে স্তরে স্তরে সাজানো আছে গ্যাস সিলিন্ডার। পাশে দাহ্য পদার্থ গ্যাস লাইটার রিফিলের যন্ত্রপাতি, চলছে রিফিলের কাজও। একই সাথে গ্যাস সিলিন্ডারের ওপর রেখে চলছে গ্র্যান্ডিং মেশিনে চুলা মেরামতের কাজ। মেশিন থেকে আগুনের ফুলকি ছিটকে পড়ছে গ্যাস সিলিন্ডারগুলোতে, যেন এক বোমা সাদৃশ দোকান। তারপাশে পাশে রয়েছে খাবার হোটেলের গ্যাসের চুলাও, যে কোন মূহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের বিস্ফোরণ। দোকানটিতে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা বা বিক্রির কোন অনুমোদন নেই। কেবল জাফর ইলেকট্রিকই নয় সীতাকুণ্ড বাজার ঘুরে নামে-বেনামে এমন অনেক দোকানের দেখা মেলে। যেসব মূলত খাবার, মুদি, ইলেকট্রিক কিংবা দাহ্য পদার্থ কালো লাকড়ির দোকান। শুধু সীতাকুণ্ড পৌরবাজার নয় পুরো উপজেলাজুড়ে হাট-বাজার, গ্রাম-গঞ্জে শত শত দোকানী কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই বিক্রি করছে গ্যাস সিলিন্ডার। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নেই কোন নজরদারি ও তদারকি। অনুসন্ধানে দেখা যায় নিজস্ব বাসা-বাড়ী, রান্নাঘর ও গোডাউন থেকে বাজারজাত করছে ব্যবসায়ীরা। তথ্য অনুযায়ী গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি ও মজুদ করতে ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক পরিদফতরের লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নেয়ার বিধান রয়েছে। ২০০৪ সালের এলপিজি মজুদ সংরক্ষণ আইনে বলা হয়েছে, বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতীত কেউ এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ করতে পারবে না। গ্যাস সিলিন্ডার মজুদের স্থান সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সেখানে কোনো প্রকারের আগুন বা বৈদ্যুতিক সংস্পর্শ যাতে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কিন্তু কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সীতাকুণ্ডে যত্রতত্রভাবে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে।
বিস্ফোরক পরিদফতর চট্টগ্রামের পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন জানান, নিয়ম অনুযায়ী খুচরা দোকানে বিক্রির জন্য সর্বোচ্চ ৮টি গ্যাস সিলিন্ডার রাখা যাবে। এক্ষেত্রে কেবল ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স নিলেই হবে। ৮টি গ্যাস সিলিন্ডার বা সর্বমোট ১শ লিটারের বেশী গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ করতে হলে বিস্ফোরক পরিদফতরের লাইসেন্স বাধ্যতামূলক। আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে। শীঘ্রই অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার দোকানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার নুরুল আলম দুলাল জানান, পৌর এলাকায় অর্ধশতাধিক গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান রয়েছে। এর মধ্যে চার থেকে ৫টির ফায়ার লাইসেন্স আছে। এ লাইসেন্স নিতে হলে অবশ্যই দোকান ঘর পাকা হতে হবে।
এদিকে সীতাকুণ্ড উপজেলায় ফায়ার লাইসেন্সের দায়িত্বরত কর্মকর্তা আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমার জানামতে সীতাকুণ্ডে কোন গ্যাস সিলিন্ডার দোকানের ফায়ার লাইসেন্স নেই এমনকি আমি কর্মস্থলে যোগ দেয়ার ৮ মাসে কোন গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি দোকানকে লাইসেন্স দেইনি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি বা মজুদ করার কারণে দেশে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। এরপরও অসাধু ব্যবসায়ীদের আইন অমান্যের প্রবণতা কমছে না। সীতাকুণ্ডে লাইসেন্সবিহীন গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এখনই যথাযথ প্রদক্ষেপ নিতে হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ