০৫:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪

রূপসায় সরকারি টিন বিক্রীর অভিযোগে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ

রূপসায় ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের অধিনে দুর্যোগ অধিদপ্তরের অবিক্রয়যোগ্য সরকারি টিন বিক্রীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আওয়ামীলীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান পরিচয় দানকারী বেনজির হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য বরাদ্ধকৃত সরকারী টিন আত্মসাৎ করে বিক্রির অভিযোগে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে খুলনা জেলা প্রশাসক ও জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। রূপসার নৈহাটি ইউনিয়নের সাধারণ জনগনের পক্ষে তালিমপুরের বাসিন্দা বলরাম সেন গতকাল এ লিখিত অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে গরিব, অসহায় ও দুস্থ মানুষের জন্য সরকারিভাবে টিন বরাদ্ধ দেয়া হয়। আর এই বরাদ্ধকৃত টিন এনে দেয়ার কথা বলে রূপসার তালিমপুরের বাসিন্দা মৃত দেলোয়ার মাষ্টারের পুত্র নিজেকে আওয়ামীলীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান পরিচয় দানকারী বেনজির হোসেন বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে। তারপর সরকারি দপ্তর থেকে দুস্থ ও অসহায় মানুষের কথা বলে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা এনে নিজে আত্মসাৎ করছে। তারি ধারাবাহিকতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সরকারী টিন পিআইও দপ্তর থেকে বরাদ্ধ এনে এলাকায় বিভিন্ন লোকের কাছে বিক্রী করছে। বিষয়টি জানাজানি হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে তিব্র প্রতিক্রীয়ার সৃষ্টি হয়। বিগত ডিসেম্বর মাসে পূর্ব রূপসা রেলস্টেশন এলাকার চা দোকানদার ও তালিমপুর মুচিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ভূ’পতির কাছে ৩ বান সরকারী টিন ১৯৫০০/(উনিশ হাজার পাঁচশত) টাকায় বিক্রী করে। যা ক্রেতা টিন পাওয়ার পর জানতে পারে এগুলো সরকারী টিন। তখন সে বেনজিরকে টিনগুলো ফেরত দিতে চায়লে সে টিন ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানায়। যে কারনে ভূ’পতি টিন চালে না লাগিয়ে ঘরে রেখে দেয়। সম্প্রতি একথা লোক মুখে জানাজানি হলে পরবর্তীতে কে বা কারা এসে টিনের ভিডিও করে নিয়ে যায়। এই খবর পেয়ে গত ১ জুলাই বেনজির লোকজন নিয়ে ভূ’পতির চায়ের দোকানে এসে মারমুখি হয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে যায়। তাছাড়া বেশি বাড়াবাড়ি করলে এলাকা ছাড়া করা হবে বলেও শাসিয়ে যায়। এছাড়া একই এলাকায় আরো কয়েক বাড়িতে টিন বিক্রী করার অভিযোগ রয়েছে বেনজিরের বিরুদ্ধে। যদিও সরকারি ভাবে বরাদ্ধকৃত টিন বিক্রয়যোগ্য নয়। যার কারনে রূপসার নৈহাটী ইউনিয়নে সরকারি টিন কাদের নামে বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে তাদের নামের তালিকা দেখলে বিষয়টি জানা যাবে।
পাশাপাশি বেনজিরের সাথে একটি চক্র সরকারী টিন বিক্রীর সাথে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। যা সঠিক ভাবে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে সরকারি টিন ক্রেতা ভূ’পতি জানান, বিগত জানুয়ারী মাসে তালিমপুর গ্রামের মৃত দেলোয়ার মাস্টারের পুত্র বেনজির হোসেন টিন বিক্রির কথা জানায়। তারপর আমি ১৯ হাজার ৫শত টাকা দিয়ে তার নিকট থেকে ৩ বান টিন ক্রয় করি। টিন বাড়িতে আনার পর সরকারী টিন দেখে তাকে বার বার ফেরত দিতে চাইলেও সে নেয়নি। যার কারণে আমি টিন ঘরে না লাগিয়ে রেখে দিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মো: আব্দুল করিম জানান, অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট রূপসা উপজেলা পিআইওকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন জানান, এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগ নেতা ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কমান্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির হোসেন দাবি করেন আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তা সঠিক নয়।আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।

ট্যাগ :

দুই মাসে পিয়াজের দাম বেড়েছে ৮০  শতাংশ , আলু ৫৫ শতাংশ

রূপসায় সরকারি টিন বিক্রীর অভিযোগে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ

প্রকাশিত : ০৭:৩৪:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪

রূপসায় ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের অধিনে দুর্যোগ অধিদপ্তরের অবিক্রয়যোগ্য সরকারি টিন বিক্রীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আওয়ামীলীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান পরিচয় দানকারী বেনজির হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য বরাদ্ধকৃত সরকারী টিন আত্মসাৎ করে বিক্রির অভিযোগে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে খুলনা জেলা প্রশাসক ও জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। রূপসার নৈহাটি ইউনিয়নের সাধারণ জনগনের পক্ষে তালিমপুরের বাসিন্দা বলরাম সেন গতকাল এ লিখিত অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে গরিব, অসহায় ও দুস্থ মানুষের জন্য সরকারিভাবে টিন বরাদ্ধ দেয়া হয়। আর এই বরাদ্ধকৃত টিন এনে দেয়ার কথা বলে রূপসার তালিমপুরের বাসিন্দা মৃত দেলোয়ার মাষ্টারের পুত্র নিজেকে আওয়ামীলীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান পরিচয় দানকারী বেনজির হোসেন বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে। তারপর সরকারি দপ্তর থেকে দুস্থ ও অসহায় মানুষের কথা বলে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা এনে নিজে আত্মসাৎ করছে। তারি ধারাবাহিকতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সরকারী টিন পিআইও দপ্তর থেকে বরাদ্ধ এনে এলাকায় বিভিন্ন লোকের কাছে বিক্রী করছে। বিষয়টি জানাজানি হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে তিব্র প্রতিক্রীয়ার সৃষ্টি হয়। বিগত ডিসেম্বর মাসে পূর্ব রূপসা রেলস্টেশন এলাকার চা দোকানদার ও তালিমপুর মুচিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ভূ’পতির কাছে ৩ বান সরকারী টিন ১৯৫০০/(উনিশ হাজার পাঁচশত) টাকায় বিক্রী করে। যা ক্রেতা টিন পাওয়ার পর জানতে পারে এগুলো সরকারী টিন। তখন সে বেনজিরকে টিনগুলো ফেরত দিতে চায়লে সে টিন ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানায়। যে কারনে ভূ’পতি টিন চালে না লাগিয়ে ঘরে রেখে দেয়। সম্প্রতি একথা লোক মুখে জানাজানি হলে পরবর্তীতে কে বা কারা এসে টিনের ভিডিও করে নিয়ে যায়। এই খবর পেয়ে গত ১ জুলাই বেনজির লোকজন নিয়ে ভূ’পতির চায়ের দোকানে এসে মারমুখি হয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে যায়। তাছাড়া বেশি বাড়াবাড়ি করলে এলাকা ছাড়া করা হবে বলেও শাসিয়ে যায়। এছাড়া একই এলাকায় আরো কয়েক বাড়িতে টিন বিক্রী করার অভিযোগ রয়েছে বেনজিরের বিরুদ্ধে। যদিও সরকারি ভাবে বরাদ্ধকৃত টিন বিক্রয়যোগ্য নয়। যার কারনে রূপসার নৈহাটী ইউনিয়নে সরকারি টিন কাদের নামে বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে তাদের নামের তালিকা দেখলে বিষয়টি জানা যাবে।
পাশাপাশি বেনজিরের সাথে একটি চক্র সরকারী টিন বিক্রীর সাথে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। যা সঠিক ভাবে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে সরকারি টিন ক্রেতা ভূ’পতি জানান, বিগত জানুয়ারী মাসে তালিমপুর গ্রামের মৃত দেলোয়ার মাস্টারের পুত্র বেনজির হোসেন টিন বিক্রির কথা জানায়। তারপর আমি ১৯ হাজার ৫শত টাকা দিয়ে তার নিকট থেকে ৩ বান টিন ক্রয় করি। টিন বাড়িতে আনার পর সরকারী টিন দেখে তাকে বার বার ফেরত দিতে চাইলেও সে নেয়নি। যার কারণে আমি টিন ঘরে না লাগিয়ে রেখে দিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মো: আব্দুল করিম জানান, অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট রূপসা উপজেলা পিআইওকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন জানান, এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগ নেতা ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কমান্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির হোসেন দাবি করেন আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তা সঠিক নয়।আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।