০১:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

সুস্থ ছাত্ররাজনীতি চর্চার লক্ষ্যে চাকসু নির্বাচন চান শিক্ষার্থীরা

অভ্যুত্থান পরবর্তী দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জোর দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। সে ধারাবাহিকতায় থেমে নেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুস্থ ছাত্ররাজনীতি চর্চার পক্ষে তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান, নাগরিক জীবনে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব প্রদান ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে চাকসু নির্বাচনের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন তারা।

চট্টগ্রাম শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে ফতেপুর ইউনিয়নের জোবরা গ্রামে ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম চাকসু নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। এতে ভিপি নির্বাচিত হন মোহাম্মদ ইব্রাহিম এবং জিএস নির্বাচিত হন আব্দুর রব। সর্বশেষ ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে চাকসু নির্বাচনে ভিপি হন নাজিম উদ্দিন ও জিএস হন আজিম উদ্দিন।

প্রতিষ্ঠার ৫৪ বছরে চাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র ৬ বার। বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট নির্বাচন, ডিন নির্বাচন, শিক্ষক সমিতির নির্বাচন থেকে শুরু করে সব ধরনের নির্বাচন হলেও দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে চাকসু নির্বাচন।

চাকসু নির্বাচন সময়ের দাবি উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিতের জন্য চাকসু নির্বাচন দেওয়া জরুরি। এটি সময়ের দাবি। ক্যাম্পাসে আমরা নোংরা ছাত্ররাজনীতি চাই না, আমরা ছাত্র সংসদ ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি চাই।

শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একমত পোষণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। চবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের চাকসু নির্বাচনের দাবির সাথে আমরা একমত। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ নির্বাচন চাই। আমরা লক্ষ্য করছিলাম, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের পায়তারা চলছিল এবং একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছিলো অপর একটি গোষ্ঠী। আমরা এই অপচেষ্টা সফল হতে দিব না। আমরা প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট দাবি জানাই দ্রুত চাকসু নির্বাচনের আয়োজন করার।

ছাত্র ইউনিয়নের চবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ইফাজ উদ্দিন বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, আমাদের সংগঠনের প্রথম দাবিই হলো ছাত্র সংসদ নির্বাচন। আমরা ইতিপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট চাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলাম কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এখন আমরা নতুন উপাচার্যের নিকট একই দাবি জানাবো। যাতে তিনি দ্রুত চাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন৷

চাকসু নির্বাচনের স্থায়ী নীতিমালা তৈরির দাবি জানিয়ে চবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, স্থায়ী নীতিমালা করে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য চাকসু নির্বাচন জরুরি। আমরা প্রশাসনের নিকট ২৪টি দাবি জানিয়েছিলাম। তার মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিটা অন্যতম।

এ বিষয়ে চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাকসু নির্বাচন নিয়েও চিন্তাভাবনা করছে। তবে আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আসন বরাদ্দ ও ক্লাস চালু করার কাজ করছি। এরপর আমরা মিটিং করে এ বিষয়ে সিন্ধান্ত নিব।

বিজনেস বাংলাদেশ/ডিএস

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

সুস্থ ছাত্ররাজনীতি চর্চার লক্ষ্যে চাকসু নির্বাচন চান শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত : ১২:০৮:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪

অভ্যুত্থান পরবর্তী দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জোর দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। সে ধারাবাহিকতায় থেমে নেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুস্থ ছাত্ররাজনীতি চর্চার পক্ষে তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান, নাগরিক জীবনে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব প্রদান ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে চাকসু নির্বাচনের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন তারা।

চট্টগ্রাম শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে ফতেপুর ইউনিয়নের জোবরা গ্রামে ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম চাকসু নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। এতে ভিপি নির্বাচিত হন মোহাম্মদ ইব্রাহিম এবং জিএস নির্বাচিত হন আব্দুর রব। সর্বশেষ ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে চাকসু নির্বাচনে ভিপি হন নাজিম উদ্দিন ও জিএস হন আজিম উদ্দিন।

প্রতিষ্ঠার ৫৪ বছরে চাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র ৬ বার। বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট নির্বাচন, ডিন নির্বাচন, শিক্ষক সমিতির নির্বাচন থেকে শুরু করে সব ধরনের নির্বাচন হলেও দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে চাকসু নির্বাচন।

চাকসু নির্বাচন সময়ের দাবি উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিতের জন্য চাকসু নির্বাচন দেওয়া জরুরি। এটি সময়ের দাবি। ক্যাম্পাসে আমরা নোংরা ছাত্ররাজনীতি চাই না, আমরা ছাত্র সংসদ ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি চাই।

শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একমত পোষণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। চবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের চাকসু নির্বাচনের দাবির সাথে আমরা একমত। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ নির্বাচন চাই। আমরা লক্ষ্য করছিলাম, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের পায়তারা চলছিল এবং একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছিলো অপর একটি গোষ্ঠী। আমরা এই অপচেষ্টা সফল হতে দিব না। আমরা প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট দাবি জানাই দ্রুত চাকসু নির্বাচনের আয়োজন করার।

ছাত্র ইউনিয়নের চবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ইফাজ উদ্দিন বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, আমাদের সংগঠনের প্রথম দাবিই হলো ছাত্র সংসদ নির্বাচন। আমরা ইতিপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট চাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলাম কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এখন আমরা নতুন উপাচার্যের নিকট একই দাবি জানাবো। যাতে তিনি দ্রুত চাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন৷

চাকসু নির্বাচনের স্থায়ী নীতিমালা তৈরির দাবি জানিয়ে চবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, স্থায়ী নীতিমালা করে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য চাকসু নির্বাচন জরুরি। আমরা প্রশাসনের নিকট ২৪টি দাবি জানিয়েছিলাম। তার মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিটা অন্যতম।

এ বিষয়ে চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাকসু নির্বাচন নিয়েও চিন্তাভাবনা করছে। তবে আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আসন বরাদ্দ ও ক্লাস চালু করার কাজ করছি। এরপর আমরা মিটিং করে এ বিষয়ে সিন্ধান্ত নিব।

বিজনেস বাংলাদেশ/ডিএস