০৫:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

টাঙ্গাইলে শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ারোধে ১৬০টি স্কুলে নির্মাণ হচ্ছে প্লেগ্রাউন্ড

টাঙ্গাইলে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ারোধে ব্যক্তিক্রম উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে ও পড়াশোনায় মনোযোগী করতে জেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলের ১৬০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্লেগ্রাইন্ড নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে একটি করে দোলনা,  ব্যালেন্সার, বাসকেট বল, প্রজাপতি ফটো ফ্রেম, রোপ ল্যাডার ও বাংলদেশের মানচিত্র সম্বলিত ম্যুরাল নির্মাণ করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার সকালে ‘বিশ্বকে বদলে দিতে, বিকশিত হই আনন্দের সাথে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সদর উপজেলার খাগজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের প্লেগ্রাইন্ডের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শরীফা হক।

এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সঞ্জয় কুমার মহন্ত, টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনিসুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন মিয়া, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেওয়ান আসিফ পেলে, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাহাব উদ্দিন, জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ প্রমুখ।

খাগজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যাললেয়র দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান ও নুসরাত আক্তার বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে আগে , ব্যালেন্সার ও বাসকেটবলসহ বিভিন্ন খেলা ধুলার সামগ্রী ছিলো না। পড়াশোনার বাইরে ফাঁকা মাঠে দৌড়পাড়াই ছিলো আমাদের কাজ। এখন আমরা টিফিন পিরিয়ডে ও স্কুলে এসেই খেলায় অংশ নিতে পারবো। সবই মিলিয়ে খুব ভালো লাগছে।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহীনা খন্দকার বলেন, শহরের শিক্ষার্থীদের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা এতো সচেতন নয়। জেলা প্রশাসনের মতো খেলাধুলার সরাঞ্জাম দেয়ায় শিক্ষার্থী ঝরেপড়া অনেক রোধ হবে।

জেলা প্রশাসক শরীফা হক বলেন, একটি জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হচ্ছে শিশুরা। আর তাই পৃথিবীর যা কিছু সুন্দর, সত্য এবং শুদ্ধ তার মধ্যে দিয়ে শিশুদের বড় করে তোলা আমাদের দায়িত্ব। শিশুদের সর্ব্বোচ বিকাশ ঘটে তখনই যখন তারা আনন্দের সাথে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়। মূলত শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সর্ব্বোচ বিকাশ নিশ্চিত করতে এবং স্কুল থেকে ঝরে পড়া রোধ করতেই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ১৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই প্লেগ্রাউন্ড নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। একই সাথে তারা যেন সবসময় নিজের দেশকে হৃদয়ে লালন করে এবং দেশকে ভালোবাসতে শেখে সেজন্য প্লেগ্রাউন্ডের পাশাপাশি তাদের জন্য বাংলাদেশের মানচিত্রের ম্যুরাল স্থাপনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের বেশীর ভাগ শিশু সুষ্ঠু বিকাশের উপযুক্ত পরিবেশ থেকে বঞ্চিত। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে শিশুদের খেলাধুলার পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে। আমার চাওয়া আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুরাও যেন আমাদের সীমিত সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে আনন্দে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়। আমার বিশ্বাস আমরা যদি শিশুদের প্রতি একটু যতœশীল হই, তারা বিকশিত হবে আদর্শ, কর্মক্ষম, সুযোগ্য সুনাগরিক হিসেবে। সেই সুনাগরিক যারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল, পরিবেশ সচেতন এবং মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ।

তিনি আরও বলেন, আমরা আনন্দের সাথে শিশুদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে পারলে আক্ষরিক অর্থেই তারা আমাদের সম্পদ হয়ে উঠবে। এই শিশুরাই এক সময় এদেশের প্রতিটি সেক্টরে অসাধারণ অবদান রাখবে, দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাবে। একই সাথে শিক্ষার্থীদের দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিটি স্কুলে বাংলদেশের মানচিত্র সম্বলিত ম্যুরাল নির্মাণেরও উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তিনি।

ডিএস./

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি নাগরিকের উপর ছিনতাইকারীর বর্বর হামলা ,দুই ছিনতাইকারী আটক

টাঙ্গাইলে শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ারোধে ১৬০টি স্কুলে নির্মাণ হচ্ছে প্লেগ্রাউন্ড

প্রকাশিত : ০৫:০৮:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

টাঙ্গাইলে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ারোধে ব্যক্তিক্রম উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে ও পড়াশোনায় মনোযোগী করতে জেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলের ১৬০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্লেগ্রাইন্ড নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে একটি করে দোলনা,  ব্যালেন্সার, বাসকেট বল, প্রজাপতি ফটো ফ্রেম, রোপ ল্যাডার ও বাংলদেশের মানচিত্র সম্বলিত ম্যুরাল নির্মাণ করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার সকালে ‘বিশ্বকে বদলে দিতে, বিকশিত হই আনন্দের সাথে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সদর উপজেলার খাগজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের প্লেগ্রাইন্ডের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শরীফা হক।

এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সঞ্জয় কুমার মহন্ত, টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনিসুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন মিয়া, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেওয়ান আসিফ পেলে, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাহাব উদ্দিন, জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ প্রমুখ।

খাগজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যাললেয়র দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান ও নুসরাত আক্তার বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে আগে , ব্যালেন্সার ও বাসকেটবলসহ বিভিন্ন খেলা ধুলার সামগ্রী ছিলো না। পড়াশোনার বাইরে ফাঁকা মাঠে দৌড়পাড়াই ছিলো আমাদের কাজ। এখন আমরা টিফিন পিরিয়ডে ও স্কুলে এসেই খেলায় অংশ নিতে পারবো। সবই মিলিয়ে খুব ভালো লাগছে।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহীনা খন্দকার বলেন, শহরের শিক্ষার্থীদের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা এতো সচেতন নয়। জেলা প্রশাসনের মতো খেলাধুলার সরাঞ্জাম দেয়ায় শিক্ষার্থী ঝরেপড়া অনেক রোধ হবে।

জেলা প্রশাসক শরীফা হক বলেন, একটি জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হচ্ছে শিশুরা। আর তাই পৃথিবীর যা কিছু সুন্দর, সত্য এবং শুদ্ধ তার মধ্যে দিয়ে শিশুদের বড় করে তোলা আমাদের দায়িত্ব। শিশুদের সর্ব্বোচ বিকাশ ঘটে তখনই যখন তারা আনন্দের সাথে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়। মূলত শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সর্ব্বোচ বিকাশ নিশ্চিত করতে এবং স্কুল থেকে ঝরে পড়া রোধ করতেই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ১৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই প্লেগ্রাউন্ড নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। একই সাথে তারা যেন সবসময় নিজের দেশকে হৃদয়ে লালন করে এবং দেশকে ভালোবাসতে শেখে সেজন্য প্লেগ্রাউন্ডের পাশাপাশি তাদের জন্য বাংলাদেশের মানচিত্রের ম্যুরাল স্থাপনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের বেশীর ভাগ শিশু সুষ্ঠু বিকাশের উপযুক্ত পরিবেশ থেকে বঞ্চিত। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে শিশুদের খেলাধুলার পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে। আমার চাওয়া আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুরাও যেন আমাদের সীমিত সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে আনন্দে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়। আমার বিশ্বাস আমরা যদি শিশুদের প্রতি একটু যতœশীল হই, তারা বিকশিত হবে আদর্শ, কর্মক্ষম, সুযোগ্য সুনাগরিক হিসেবে। সেই সুনাগরিক যারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল, পরিবেশ সচেতন এবং মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ।

তিনি আরও বলেন, আমরা আনন্দের সাথে শিশুদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে পারলে আক্ষরিক অর্থেই তারা আমাদের সম্পদ হয়ে উঠবে। এই শিশুরাই এক সময় এদেশের প্রতিটি সেক্টরে অসাধারণ অবদান রাখবে, দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাবে। একই সাথে শিক্ষার্থীদের দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিটি স্কুলে বাংলদেশের মানচিত্র সম্বলিত ম্যুরাল নির্মাণেরও উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তিনি।

ডিএস./