০৫:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

কুলিয়ারচরের পশ্চিম গোবরিয়া রাস্তার বেহাল দশা, জনদুর্ভোগ চরমে

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের পশ্চিম গোবরিয়া খলিল মুন্সি ঈদগাহ মাঠ থেকে শুরু করে প্রেসিডেন্ট বাড়ি-হারিছ মাস্টারের বাড়ি ও ইব্রাহিম চেয়ারম্যানের বাড়ি হয়ে উত্তর লক্ষ্মীপুর ছিদ্দুর মোড় চক বাজার পর্যন্ত রাস্তার বেহাল দশা। দেখার যেন কেউ নেই।

প্রায় এক কিলোমিটার অবহেলিত এই কাঁচা রাস্তাটি দীর্ঘদিন যাবত বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও নেই পাকাকরণের উদ্যোগ। সামান্য বৃষ্টির পানিতে মাটি গলে কাঁদায় পরিণত হয়। পুরো বর্ষা মৌসুম জুড়েই রাস্তাটি কাঁদা পানিতে একাকার হয়ে পড়ে। অনেকটা ধান রোপণ করার উপযোগী ক্ষেতের মতো। গাড়ি দূরে থাক, হেঁটে পার হওয়াই মুশকিল। এর ফলে রাস্তাটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরন, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে ও বিভিন্ন মালামাল আনা নেওয়া করতে বেকায়দায় পড়তে হয়। তারপরও প্রয়োজনের তাগিদে এই রাস্তা দিয়েই চরম ভোগান্তির শিকার হয়েই চলাচল করতে হচ্ছে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে।

স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, দিনের বেলায় জুতা হাতে নিয়ে কোনো রকমে কাদা পার হওয়া যায়। কিন্তু রাতে একেবারেই যাওয়া যায় না। দ্রুত রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি জানাচ্ছি।

একই অভিযোগ তুলে স্থানীয় ভ্যানচালক জহিরুল ইসলাম জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় কাদা জমে যায়। তখন আমরা ভ্যান নিয়ে বের হতে পারি না।
স্থানীয় মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাদির বলেন, প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মুসল্লিরা এই রাস্তায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বয়স্ক মুসল্লিরা কাদা মাড়িয়ে মসজিদে আসতে পারেন না। এটি মুসল্লিদের জন্য বড় কষ্টের বিষয়।

এলাকার একটি মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মাহফুজ বলেন, আমাদের মাদ্রাসার অনেক ছাত্র-ছাত্রী প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করে। বর্ষাকালে তাদের পড়াশোনায় বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটে। তাই শিক্ষার্থীদের স্বার্থে দ্রুত রাস্তাটি পাকাকরণ করা অত্যন্ত জরুরি।

মুরগি খামারি আরিফুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের খামারে প্রতিদিন খাদ্য ও ওষুধ আনতে হয়। কিন্তু কাদা রাস্তায় গাড়ি ঢুকতে না পারায় সময়মতো মুরগিকে খাবার দেওয়া ও ডিম বাজারে বিক্রি দুটোতেই সমস্যা হচ্ছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী মাহমুদুল হক শামীম বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তায় বালু-রাবিস দিয়ে চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করছি। অথচ স্থায়ীভাবে রাস্তা সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, রাস্তাটি জনবহুল এলাকায় অবস্থিত। বাজার, স্কুল-মাদরাসা, মসজিদ রয়েছে এখানে। অথচ কাঁচা রাস্তার কারণে বর্ষায় চলাচল করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। আমি চাই জনগণের কথা চিন্তা করে কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাস্তাটি পাকাকরণের বিষয়ে বহুবার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অবগত করা হলেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই রাস্তাটি সংস্কার করে অচিরেই পাকাকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

এব্যাপারে স্থানীয় গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামাল (কাজল) এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মহোদয়কে অবগত করা হয়েছে। তিনি আশ্বস্ত করেছেন অচিরেই এ রাস্তা সংস্কারের ব্যবস্থা করে দিবেন।এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ইয়াসিন খন্দকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ রাস্তারটি অচিরেই সংস্কার করা হবে।

ডিএস./

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি নাগরিকের উপর ছিনতাইকারীর বর্বর হামলা ,দুই ছিনতাইকারী আটক

কুলিয়ারচরের পশ্চিম গোবরিয়া রাস্তার বেহাল দশা, জনদুর্ভোগ চরমে

প্রকাশিত : ০৪:৩৩:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের পশ্চিম গোবরিয়া খলিল মুন্সি ঈদগাহ মাঠ থেকে শুরু করে প্রেসিডেন্ট বাড়ি-হারিছ মাস্টারের বাড়ি ও ইব্রাহিম চেয়ারম্যানের বাড়ি হয়ে উত্তর লক্ষ্মীপুর ছিদ্দুর মোড় চক বাজার পর্যন্ত রাস্তার বেহাল দশা। দেখার যেন কেউ নেই।

প্রায় এক কিলোমিটার অবহেলিত এই কাঁচা রাস্তাটি দীর্ঘদিন যাবত বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও নেই পাকাকরণের উদ্যোগ। সামান্য বৃষ্টির পানিতে মাটি গলে কাঁদায় পরিণত হয়। পুরো বর্ষা মৌসুম জুড়েই রাস্তাটি কাঁদা পানিতে একাকার হয়ে পড়ে। অনেকটা ধান রোপণ করার উপযোগী ক্ষেতের মতো। গাড়ি দূরে থাক, হেঁটে পার হওয়াই মুশকিল। এর ফলে রাস্তাটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরন, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে ও বিভিন্ন মালামাল আনা নেওয়া করতে বেকায়দায় পড়তে হয়। তারপরও প্রয়োজনের তাগিদে এই রাস্তা দিয়েই চরম ভোগান্তির শিকার হয়েই চলাচল করতে হচ্ছে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে।

স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, দিনের বেলায় জুতা হাতে নিয়ে কোনো রকমে কাদা পার হওয়া যায়। কিন্তু রাতে একেবারেই যাওয়া যায় না। দ্রুত রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি জানাচ্ছি।

একই অভিযোগ তুলে স্থানীয় ভ্যানচালক জহিরুল ইসলাম জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় কাদা জমে যায়। তখন আমরা ভ্যান নিয়ে বের হতে পারি না।
স্থানীয় মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাদির বলেন, প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মুসল্লিরা এই রাস্তায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বয়স্ক মুসল্লিরা কাদা মাড়িয়ে মসজিদে আসতে পারেন না। এটি মুসল্লিদের জন্য বড় কষ্টের বিষয়।

এলাকার একটি মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মাহফুজ বলেন, আমাদের মাদ্রাসার অনেক ছাত্র-ছাত্রী প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করে। বর্ষাকালে তাদের পড়াশোনায় বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটে। তাই শিক্ষার্থীদের স্বার্থে দ্রুত রাস্তাটি পাকাকরণ করা অত্যন্ত জরুরি।

মুরগি খামারি আরিফুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের খামারে প্রতিদিন খাদ্য ও ওষুধ আনতে হয়। কিন্তু কাদা রাস্তায় গাড়ি ঢুকতে না পারায় সময়মতো মুরগিকে খাবার দেওয়া ও ডিম বাজারে বিক্রি দুটোতেই সমস্যা হচ্ছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী মাহমুদুল হক শামীম বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তায় বালু-রাবিস দিয়ে চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করছি। অথচ স্থায়ীভাবে রাস্তা সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, রাস্তাটি জনবহুল এলাকায় অবস্থিত। বাজার, স্কুল-মাদরাসা, মসজিদ রয়েছে এখানে। অথচ কাঁচা রাস্তার কারণে বর্ষায় চলাচল করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। আমি চাই জনগণের কথা চিন্তা করে কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাস্তাটি পাকাকরণের বিষয়ে বহুবার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অবগত করা হলেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই রাস্তাটি সংস্কার করে অচিরেই পাকাকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

এব্যাপারে স্থানীয় গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামাল (কাজল) এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মহোদয়কে অবগত করা হয়েছে। তিনি আশ্বস্ত করেছেন অচিরেই এ রাস্তা সংস্কারের ব্যবস্থা করে দিবেন।এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ইয়াসিন খন্দকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ রাস্তারটি অচিরেই সংস্কার করা হবে।

ডিএস./