জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিচিহীন লেবু চাষ। বাণিজ্যিকভাবে বিচিহীন লেবু চাষ করে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। ভালো ফলন ও বাজারে চাহিদা থাকায় লেবু চাষে ঝুকছে কৃষকরা।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের শংকরদীপাড় পাট্টাবুকা গ্রামের রমিম মোল্লা পাঁচ একর জমিতে প্রথম বিচিহীন লেবুর আবাদ করেন। এরপর তিনি আরো তিন একর জমিতে শুরু করেন লেবুর আবাদ। আট একর জমিতে লেবুর চাষ করতে তার খরচ হয় ২২ লাখ টাকা।
তার বাগানের লেবু গাছের বয়স দেড় বছর। এরই মধ্যে গাছে ফলন ধরেছে। তিনি এ পর্যন্ত ১২ লাখ টাকা বিক্রি করেছেন। একটি লেবু গাছে ১৫ বছর পর্যন্ত ফল দিয়ে থাকে। লেবুর বাগানে এখন আর তেমন খরচ হয় না।
আগামীতে তার লেবু বাগান থেকে অর্ধকোটি টাকার লেবু বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী। রমিম মোল্লা তার নিজস্ব বাগান ছাড়াও একই এলাকায় তাহাজুত খলিফা ও শাহীন মোল্লাকে নিয়ে আরো আট একর জমিতে শেয়ারে বিচিহীন লেবুর বাগান করে তারা এখন স্বাবলম্বী।
রমিম মোল্লা একই উপজেলার কবিরাজপুর এলাকায় বিচিহীন লেবুসহ অন্যান্য ফলের বাগান করার জন্য ১৫ একর জমিতে কাজ শুরু করেছেন। তাদের লেবু বাগানে নিয়মিত ৭/৮ জন শ্রমিক করছে। তারা যে বেতন পাচ্ছে তা দিয়ে তাদের সংসার চলছে। লেবুর বাগান দেখার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষকরা আসছে এবং লেবুর চারা ও কলম নিয়ে বাগান করে তারাও হচ্ছে স্বাবলম্বী।
শংকরদীপাড় গ্রামের সফল লেবু চাষি তাহাজুজ খলিফা জানান, তিনজন মিলে শেয়ারে আট একর জমিতে লেবু চাষ করে লাভবান হওয়ায় তিনি নিজস্ব আরো সাড়ে তিন একর জমিতে লেবু চাষ করেছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে তার জমির লেবু বিক্রি করতে পারবেন এবং তিনি লাভবান হবেন বলে আশাবাদী।
একই গ্রামের শাহীন মোল্লা জানান, লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি শেয়ারে লেবু চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিনি আগামীতে আবাদী জমির পরিমাণ বাড়াবেন বলে জানান।
রাজৈর উপজেলার মজুমদারকান্দি গ্রামের জাকারিয়া শেখ জানান, উপজেলার শংকরদীপাড় গ্রামের তিন যুবক লেবুসহ বিভিন্ন শাক সবজির বাগান করে লাভবান হওয়ায় তিনি দুই বিঘা জমিতে শশা চাষ করে লাভবান হয়েছেন। তিনি শশা ছাড়াও দুই একর জমিতে বিচিহীন লেবুর আবাদ করেছেন। তিনি আবাদী জমির পরিমাণ বাড়ানের কথা বলছেন।
মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জিএমএ গফুর জানিয়েছেন, জেলার কিছু সংখ্যক প্রগতিশীল কৃষক ইতিমধ্যে বিচিহীন লেবুর আবাদ শুরু করেছেন। তারা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই লেবু আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন। আশা করা যায়, এই লেবুর আবাদ রাজৈরসহ অন্যান্য উপজেলায় ছড়িয়ে পড়বে।
তিনি জানান, এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কারিগরি কলাকৌশল এবং বীজ বা কলম প্রাপ্তির বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। জেলায় ৬৪ হেক্টর জমিতে লেবুর চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজৈরেই হয়েছে ১৯ হেক্টর জমিতে।
বিজনেস বাংলাদেশ/এম মিজান