১১:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

উৎসাহ উদ্দীপনায় সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দেশে ব্যাপক উৎসাহের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে টিকাদান কর্মসূচি। উদ্বোধনের পরপরই টিকা নিয়েছেন বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সচিব। মন্ত্রীদের মধ্যে প্রথমে টিকা নিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। এছাড়া জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও টিকা নিয়েছেন। সচিবদের মধ্যে টিকা নিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। রোববার রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে তারা করোনার টিকা নিয়েছেন। এদিন সকাল ১০টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এর মাধ্যমে দেশব্যাপী এক হাজার পাঁচটি কেন্দ্রে একযোগে টিকাদান শুরু হয়।
টিকা নেয়ার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের এক বছর পূর্তি হওয়ার আরও এক মাস আছে। এর আগেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। গতকাল সংক্রমণের হার ছিল ২ শতাংশের কিছু বেশি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী, এই ধারা চলতে থাকলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে বলা যায়।এ কারণে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছেছি। আমরা আশা করি করছি করোনাভাইরাস দূর হয়ে যাবে। ফাইনাল ব্লো-টা আমরা দিব ভ্যাকসিনের মাধ্যমে।
টিকা নেওয়ার পর কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, করোনাভাইরাস মহামারী সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এর বিরূপ প্রভাব বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই পড়েছে। করোনাভাইরাসের টিকা এই মহামারীর বিরুদ্ধে মানবজাতির একটা বড় অর্জন। এই অর্জন বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ব্যবহার করে হয়েছে। আমি টিকা নেওয়ার পর ভালোই আছি। টিকা নিয়ে যারা গুজব ছড়াচ্ছে তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা করছে। পুরো বিশ্ব টিকা নিচ্ছে, কিছু না কিছু উপকারিতা তো আছেই।
মরণঘাতী করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণের পর নিবন্ধনের মাধ্যমে দেশবাসীকে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। রবিবার বিকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজে টিকা গ্রহণের পর প্রধান বিচারপতি এ আহ্বান জানান। সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আমার স্ত্রী ও আমি টিকা নিয়েছি। আমার এ পর্যন্ত কোনও অসুবিধা হয়নি। দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগের আমিসহ সাত বিচারপতি এবং হাইকোর্ট বিভাগের ৪০ জন বিচারপতি টিকা নিয়েছেন। সুতরাং, আমি দেশবাসীকে বলবো, সবাই যেন তাড়াতাড়ি নিবন্ধন করেন এবং টিকা নেন। স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে বাংলাদেশে সবার আগে টিকা দেওয়া হয়েছে, এটা প্রধানমন্ত্রীর বিশাল কৃতিত্ব।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা। সবাইকে এ টিকার দুটি ডোজ নিতে হবে। এই টিকার তিন কোটি ডোজ পেতে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশের, যার মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ হাতে পাওয়ার পর জেলায় জেলায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে আগেই। এছাড়া ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাওয়া গেছে আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা। জাতীয়ভাবে কোভিড-১৯ টিকা বিতরণ ও প্রস্তুতি পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিন ভাগে (ফেইজ) মোট পাঁচ ধাপে এসব টিকা দেওয়া হবে। কোভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধে সামনের কাতারে থাকা মানুষ প্রাধান্য পাবেন। প্রথম দিনে ঢাকাসহ সারা দেশে ১০১৫টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে ঢাকায় রয়েছে ৫০টি কেন্দ্র। সোমবার থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এসব কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে।

ট্যাগ :

চট্টগ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় বহিস্কৃত যুবদলের দুই নেতা, নিহত জুবায়ের যুবলীগের কর্মী

উৎসাহ উদ্দীপনায় সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম

প্রকাশিত : ১২:০০:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দেশে ব্যাপক উৎসাহের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে টিকাদান কর্মসূচি। উদ্বোধনের পরপরই টিকা নিয়েছেন বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সচিব। মন্ত্রীদের মধ্যে প্রথমে টিকা নিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। এছাড়া জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও টিকা নিয়েছেন। সচিবদের মধ্যে টিকা নিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। রোববার রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে তারা করোনার টিকা নিয়েছেন। এদিন সকাল ১০টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এর মাধ্যমে দেশব্যাপী এক হাজার পাঁচটি কেন্দ্রে একযোগে টিকাদান শুরু হয়।
টিকা নেয়ার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের এক বছর পূর্তি হওয়ার আরও এক মাস আছে। এর আগেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। গতকাল সংক্রমণের হার ছিল ২ শতাংশের কিছু বেশি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী, এই ধারা চলতে থাকলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে বলা যায়।এ কারণে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছেছি। আমরা আশা করি করছি করোনাভাইরাস দূর হয়ে যাবে। ফাইনাল ব্লো-টা আমরা দিব ভ্যাকসিনের মাধ্যমে।
টিকা নেওয়ার পর কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, করোনাভাইরাস মহামারী সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এর বিরূপ প্রভাব বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই পড়েছে। করোনাভাইরাসের টিকা এই মহামারীর বিরুদ্ধে মানবজাতির একটা বড় অর্জন। এই অর্জন বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ব্যবহার করে হয়েছে। আমি টিকা নেওয়ার পর ভালোই আছি। টিকা নিয়ে যারা গুজব ছড়াচ্ছে তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা করছে। পুরো বিশ্ব টিকা নিচ্ছে, কিছু না কিছু উপকারিতা তো আছেই।
মরণঘাতী করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণের পর নিবন্ধনের মাধ্যমে দেশবাসীকে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। রবিবার বিকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজে টিকা গ্রহণের পর প্রধান বিচারপতি এ আহ্বান জানান। সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আমার স্ত্রী ও আমি টিকা নিয়েছি। আমার এ পর্যন্ত কোনও অসুবিধা হয়নি। দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগের আমিসহ সাত বিচারপতি এবং হাইকোর্ট বিভাগের ৪০ জন বিচারপতি টিকা নিয়েছেন। সুতরাং, আমি দেশবাসীকে বলবো, সবাই যেন তাড়াতাড়ি নিবন্ধন করেন এবং টিকা নেন। স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে বাংলাদেশে সবার আগে টিকা দেওয়া হয়েছে, এটা প্রধানমন্ত্রীর বিশাল কৃতিত্ব।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা। সবাইকে এ টিকার দুটি ডোজ নিতে হবে। এই টিকার তিন কোটি ডোজ পেতে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশের, যার মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ হাতে পাওয়ার পর জেলায় জেলায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে আগেই। এছাড়া ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাওয়া গেছে আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা। জাতীয়ভাবে কোভিড-১৯ টিকা বিতরণ ও প্রস্তুতি পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিন ভাগে (ফেইজ) মোট পাঁচ ধাপে এসব টিকা দেওয়া হবে। কোভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধে সামনের কাতারে থাকা মানুষ প্রাধান্য পাবেন। প্রথম দিনে ঢাকাসহ সারা দেশে ১০১৫টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে ঢাকায় রয়েছে ৫০টি কেন্দ্র। সোমবার থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এসব কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে।