০১:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫

কুষ্টিয়ায় পুলিশের এসআই,ব্যাংক কর্মকর্তাসহ তিন জনের করোনা সনাক্ত

কুষ্টিয়া জেলায় এই প্রথম তিনজনের করোনাভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত তিন জনই পুরুষ। এদের মধ্যে একজন ঢাকা থেকে আসা পুলিশের এসআই। অপর জন ব্যাংক কর্মকতা এবং ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধ। আক্রান্ত এক জনের বাড়ি কুষ্টিয়া শহরের আড়–য়াপাড়া এলাকায়। অপরজনের কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের গট্টিয়া গ্রামে এবং আক্রান্ত পুলিশ সদস্যের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের ওসমানপুর গ্রামে। কাজী আতাউল (৩৫) নামের ওই পুলিশ সদস্য উপজেলার ওসমানপুর ইঊনিয়নের ওসমানপুর গ্রামের রতন কাজীর ছেলে। তিনি বর্তমানে ডিএমপির এসবিতে কর্মরত রয়েছেন।

আক্রান্ত আরেকজন কুষ্টিয়া শহরের ২৩৮, মীর মোশাররফ হোসেন সড়ক, সূর্যসেনা ক্লাব সংলগ্ন আড়–য়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাহাবুব আহম্মেদ চপ্পল (৩০) এবং অপরজন কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের গট্টিয়া গ্রামের মৃত: শুকুর আলীর ছেলে আক্কাস আলী (৬৯)। কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডাঃ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম তিন জনের করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আক্রান্ত মাহাবুব আহম্মেদ চপ্পল (৩০) মাদারীপুর জেলায় সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অফিসার পদে কর্মরত আছেন। গত ২৫ মার্চ তিনি মাদারীপুর থেকে কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়িতে আসেন।

এর পর থেকে তিনি কুষ্টিয়াস্থ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। অপরজন কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের গট্টিয়া গ্রামের আক্কাস আলী (৬৯) তিনি কুষ্টিয়া জেলা ছেড়ে অন্য কোন জেলায় জাননি বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। গত কদিন ধরে এই দুজনের জ¦র, ঠান্ডা ও শ^াসকষ্ট দেখা দেওয়ায় গত ২০ এপ্রিল বিকেলে দুজনের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরের দিন ২১ এপ্রিল সকালে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। আজ বুধবার সকালে ঢাকা থেকে এই দুজনের পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এদিকে খোকসা উপজেলায় ঢাকা ফেরত পুলিশের এক এসআই করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত হয়েছেন। কাজী আতাউল (৩৫) নামে ওই পুলিশ সদস্য উপজেলার ওসমানপুর ইঊনিয়নের ওসমানপুর গ্রামের রতন কাজীর ছেলে। জানা গেছে, মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) রাতে তিনি ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল যোগে খোকসায় ফেরেন। আগের দিন ঢাকার আইইডিসিআর থেকে তার করোনা টেস্ট করা হয়।

বুধবার দুপুরে আইইডিসিআর থেকে তাকে মোবাইলে ফোন করে জানানো হয় তার করোনাভাইরাস পজেটিভ। সংবাদ পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তার তার বাড়ি এবং আশপাশের এলাকা লকডাউন করে দেয়। লকডাউনের মধ্যে ওই পুলিশ কর্মকর্তা কিভাবে মোটরসাইকেল যোগে খোকসায় আসলেন তার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। আক্রান্ত তিন জনের বাড়িসহ আশে পাশের কয়েকটি বাড়ি লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত কুষ্টিয়া জেলায় এই প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হবে। কুষ্টিয়া জেলায় এ পর্যন্ত ৩৩৯ জনের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৫ জনের নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। বাকিদের রিপোর্ট এখনো আসেনি।

এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা কুষ্টিয়া জেলায় আরো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হওয়ার আশংকা করছেন। জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ থেকে প্রায় ২২শ’র বেশি মানুষ গত দুসপ্তাহে কুষ্টিয়ায় এসেছেন। এদেরকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হলেও তারা তা না মেনে লোকালয়ে চলাফেরা করছেন। সিভিল সার্জন জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস সনাক্তের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ ইমরান

ট্যাগ :

কুষ্টিয়ায় পুলিশের এসআই,ব্যাংক কর্মকর্তাসহ তিন জনের করোনা সনাক্ত

প্রকাশিত : ০৫:০৪:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ এপ্রিল ২০২০

কুষ্টিয়া জেলায় এই প্রথম তিনজনের করোনাভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত তিন জনই পুরুষ। এদের মধ্যে একজন ঢাকা থেকে আসা পুলিশের এসআই। অপর জন ব্যাংক কর্মকতা এবং ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধ। আক্রান্ত এক জনের বাড়ি কুষ্টিয়া শহরের আড়–য়াপাড়া এলাকায়। অপরজনের কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের গট্টিয়া গ্রামে এবং আক্রান্ত পুলিশ সদস্যের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের ওসমানপুর গ্রামে। কাজী আতাউল (৩৫) নামের ওই পুলিশ সদস্য উপজেলার ওসমানপুর ইঊনিয়নের ওসমানপুর গ্রামের রতন কাজীর ছেলে। তিনি বর্তমানে ডিএমপির এসবিতে কর্মরত রয়েছেন।

আক্রান্ত আরেকজন কুষ্টিয়া শহরের ২৩৮, মীর মোশাররফ হোসেন সড়ক, সূর্যসেনা ক্লাব সংলগ্ন আড়–য়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাহাবুব আহম্মেদ চপ্পল (৩০) এবং অপরজন কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের গট্টিয়া গ্রামের মৃত: শুকুর আলীর ছেলে আক্কাস আলী (৬৯)। কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডাঃ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম তিন জনের করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আক্রান্ত মাহাবুব আহম্মেদ চপ্পল (৩০) মাদারীপুর জেলায় সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অফিসার পদে কর্মরত আছেন। গত ২৫ মার্চ তিনি মাদারীপুর থেকে কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়িতে আসেন।

এর পর থেকে তিনি কুষ্টিয়াস্থ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। অপরজন কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের গট্টিয়া গ্রামের আক্কাস আলী (৬৯) তিনি কুষ্টিয়া জেলা ছেড়ে অন্য কোন জেলায় জাননি বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। গত কদিন ধরে এই দুজনের জ¦র, ঠান্ডা ও শ^াসকষ্ট দেখা দেওয়ায় গত ২০ এপ্রিল বিকেলে দুজনের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরের দিন ২১ এপ্রিল সকালে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। আজ বুধবার সকালে ঢাকা থেকে এই দুজনের পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এদিকে খোকসা উপজেলায় ঢাকা ফেরত পুলিশের এক এসআই করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত হয়েছেন। কাজী আতাউল (৩৫) নামে ওই পুলিশ সদস্য উপজেলার ওসমানপুর ইঊনিয়নের ওসমানপুর গ্রামের রতন কাজীর ছেলে। জানা গেছে, মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) রাতে তিনি ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল যোগে খোকসায় ফেরেন। আগের দিন ঢাকার আইইডিসিআর থেকে তার করোনা টেস্ট করা হয়।

বুধবার দুপুরে আইইডিসিআর থেকে তাকে মোবাইলে ফোন করে জানানো হয় তার করোনাভাইরাস পজেটিভ। সংবাদ পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তার তার বাড়ি এবং আশপাশের এলাকা লকডাউন করে দেয়। লকডাউনের মধ্যে ওই পুলিশ কর্মকর্তা কিভাবে মোটরসাইকেল যোগে খোকসায় আসলেন তার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। আক্রান্ত তিন জনের বাড়িসহ আশে পাশের কয়েকটি বাড়ি লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত কুষ্টিয়া জেলায় এই প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হবে। কুষ্টিয়া জেলায় এ পর্যন্ত ৩৩৯ জনের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৫ জনের নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। বাকিদের রিপোর্ট এখনো আসেনি।

এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা কুষ্টিয়া জেলায় আরো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হওয়ার আশংকা করছেন। জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ থেকে প্রায় ২২শ’র বেশি মানুষ গত দুসপ্তাহে কুষ্টিয়ায় এসেছেন। এদেরকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হলেও তারা তা না মেনে লোকালয়ে চলাফেরা করছেন। সিভিল সার্জন জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস সনাক্তের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ ইমরান